এই গরমে করবেন কী

আজ ২৯ ফাল্গুন। কিন্তু কে বলবে ফাল্গুন! বাইরে যে কাঁঠালপাকা জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড দাবদাহ। বোঝাই যাচ্ছে, এ বছর বসন্ত এসেছে গ্রীষ্মের হাতটা শক্ত করে ধরে। ‘ঘর হতে দুই পা ফেলিয়া’ বের হলেই তা দিব্যি টের পাওয়া যাচ্ছে। এই গরমে কী খাব, কী পরব—এগুলো নিয়ে কমবেশি আমরা সবাই জানি। গ্রীষ্মে জীবনযাপনের প্রস্তুতি হিসেবে সেগুলোতেই আরও একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।

খাবেন কী?

অন্য যেকোনো ঋতুর তুলনায় গ্রীষ্মে পানির চাহিদা থাকে বেশি। প্রতিদিন অন্তত ১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে। পাশাপাশি খাবার স্যালাইন, লেবুপানি বা কচি ডাবের পানি পান করতে পারেন। ইসবগুল, তেঁতুল, কাঁচা আম শরীরকে স্নিগ্ধ, শীতল রাখে। চিড়া-কলা-দই, সেদ্ধ ডিম, সেদ্ধ আটার রুটি, পাউরুটি, সাদা সবজি, জেলি, নরম খিচুড়ি, মৌসুমি ফল, স্যুপ, সবজি, সালাদ, টক দই, লেবু–পুদিনাপাতার শরবত ইত্যাদি রাখা যেতে পারে। কাঁচা আম, শসা, লাউ, ঝিঙে, পটোল, কলমিশাক, পাটশাক খেতে পারেন। কেউ কেউ গরমে পান্তাভাত খেতে পছন্দ করেন। এতে শরীর যেমন ঠান্ডা থাকে, তেমনি রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বাড়ে। গ্রীষ্মে প্রচুর পানিযুক্ত ফল, যেমন আম, জাম, তরমুজ, জামরুল, তালশাঁস, বাঙ্গি, পাকা পেঁপে, বেলসহ সারা বছর পাওয়া যায় এমন ফল, ফলের তৈরি স্মুদি ও সবজি খেতে পারেন। সকালে উঠে খেতে পারেন গ্রিন টি। সেখানে যোগ করতে পারেন মধু আর লেবুর রস।

গরমে থেতে হবে অর্গানিক শাকসবজি ও ফল
ছবি: পেক্সেলস ডটকম

যা খাবেন না

গরমকাল মৌসুমি শরবত ব্যবসায়ীদের সময়! এই সময় রাস্তার মোড়ে মোড়ে শরবত, জুসের বিক্রি বেড়ে যায়। এগুলো পারতপক্ষে খাবেন না। এসবে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে। একাধিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে পানি দিয়ে এগুলো বানানো হয়, সেটি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। মসলাযুক্ত, তৈলাক্ত খাবার বাদ দিন। গরমে ‘রেড মিট’ না খাওয়াই ভালো। কেননা, এসব গুরুপাক খাবারে শরীরের ভেতর তাপ উৎপন্ন করে। তাতে আরও গরম লাগে। চা-কফি শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি করে। সে জন্য গরমে চা-কফি কম পান করাই ভালো। শুকনো ফল (ড্রাই ফ্রুটস) না খাওয়াই ভালো। এতে শরীর আরও ডিহাইড্রেটেড হয়ে যেতে পারে। ভাজাপোড়া, পোলাও, বিরিয়ানি, কোল্ড ড্রিংকস বাদ দিন। গরমে ডিমের ভাজি বা পোচ না খেয়ে সেদ্ধ করে খাওয়াটাই উপযুক্ত হবে।

আরাম ও আধুনিকতা – গরমের পোশাকে থাকতে পারে দুটি বিষয়ই।
ছবি: প্রথম আলো

কী করবেন, কী করবেন না

এই গরমে অপ্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়াই ভালো। নিতান্তই বের হলে ছায়াযুক্ত স্থানে চলাফেরা করার চেষ্টা করুন। ঘরে–বাইরে যেমন পোশাকে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, তেমন পোশাক পরবেন। সুতির, ঘাম শোষণ করতে পারে, ঢিলেঢালা—এমন পোশাকই আরামদায়ক। বাইরে বের হলে মুখে সানক্রিন মেখে বের হবেন। চুলটা ঢেকে রাখলেই ভালো। সানগ্লাস আর ছাতা নিতে ভুলবেন না। অন্তত একবার গোসল করুন। পারলে দুবার করুন। কিন্তু দুবারের বেশি নয়। গরমে রান্না করা তরকারি দ্রুত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বাসি হওয়ার আগেই খেয়ে নিন। সূর্য ওঠার আগে বা সূর্যাস্তের পর হাঁটুন। তাতে রোদ বাঁচিয়ে চলা যাবে।