পিঠা-পুলির স্বাদে
শীতকাল মানেই তো পিঠা-পুলির মৌসুম। নানা স্বাদের পিঠার রেসিপি দিয়েছেন ফাতিমা আজিজ
স্টেক চিতই

উপকরণ: পোলাওয়ের চাল ২ কাপ, লবণ আধা চা-চামচ, পানি এক কাপ, সেদ্ধ চাল ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি: চাল ভালো করে ধুয়ে সারা রাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। প্রথমে আধা কাপ পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে লবণ মিশিয়ে আরও আধা কাপ অথবা পরিমাণমতো পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে মসৃণ ব্যাটার তৈরি করুন।
ননস্টিক কড়াই বা প্যান ভালো করে গরম করুন। সামান্য তেল ব্রাশ করা যেতে পারে। এবার ডালের চামচের ২ চামচ ব্যাটার দিয়ে ঢেকে দিন। ৩-৪ মিনিট পর ঢাকনা খুলে পিঠা উঠিয়ে একটি পাত্রে রাখুন। এভাবে প্রতিটি পিঠা তৈরি করুন। তারপর ফয়েল পেপার দিয়ে ঢেকে রাখুন।
স্টেকের উপকরণ: মাংসের কিমা ১ কেজি, ডিম ২টি, পেঁয়াজ মিহি কুচি ৪ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ মিহি মিহি ২ চা-চামচ, পাউরুটি ৪ স্লাইস, সরিষা গুঁড়া ১ চা-চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ, জায়ফল গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ ১ চা-চামচ, চিনি ২ চা-চামচ, আদা বাটা ১ চা-চামচ, রসুন বাটা ১ চা-চামচ, অয়েস্টার সস ১ টেবিল চামচ, তাবাস্কো সস ২ চা-চামচ, কর্নফ্লাওয়ার আধা কাপ, পুদিনা পাতা কুচি ২ টেবিল চামচ, তেল সেঁকা ভাজার জন্য।
প্রণালি: তেল বাদে সমস্ত উপকরণ একত্রে মিশিয়ে মেখে নিন। বেশি নরম হলে সামান্য একটু বিস্কুটের গুঁড়ো মেশাতে পারেন। মাংস ১০-১২ ভাগ করুন। হাতের তালুতে তেল মেখে মাংস দিয়ে চ্যাপ্টা গোলাকার স্টেক তৈরি করুন। রুটি বা পিঠার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে স্টেকের মাপ হবে। একটি বড় শুকনো ট্রেতে কর্নফ্লাওয়ার ছড়িয়ে স্টেকগুলো তাতে গড়িয়ে নিন। ফ্রাইপ্যানে তেল গরম করে স্টেক সেঁকা তেলে ভেজে তুলুন।
স্টেক চিতই তৈরি
উপকরণ: চিতই পিঠা ১০টি, স্টেক ৫টি, পনির টুকরা ১০টি, লেটুস ৫টি, পেঁয়াজ (রিং করে কাটা) ৪টি করে রিং প্রতিটির জন্য। কাঁচা মরিচ কুচি ইচ্ছামতো, টমেটো কেচাপ ১ চা-চামচ প্রতিটির জন্য।
প্রণালি: প্রথমে ১টি চিতই পিঠার ওপরে ১টি লেটুস বিছিয়ে নিন। তার ওপর একে একে পনির টুকরা, স্টেক, টমেটো কেচাপ, পেঁয়াজের রিং, কাঁচা মরিচ কুচি দিয়ে আরেকটি চিতই পিঠা দিয়ে টুথপিক দিয়ে আটকে নিন। মাইক্রোওয়েভ ওভেনে ৩০ সেকেন্ড ভাপিয়ে পরিবেশন করুন।

মেরা পিঠার শাশলিক
উপকরণ: মেরা পিঠা (গোল চাক চাক করে কাটা) ৫-৬টি, পনির (কিউব করে কাটা) সসেজ (১ ইঞ্চি পুরু করে কাটা) প্রতিটির জন্য ২টি। লাল, সবুজ ও হলুদ বেল পেপার (চৌকা করে কাটা) প্রতিটির জন্য ২টি কিউব, পেঁয়াজ (একেকটি পেঁয়াজ ৪ টুকরো করে নিন) প্রতিটির জন্য ২ টুকরো, গোলমরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, মাখন, কাঠি ৫-৬টি, মাখন পরিমাণমতো।
প্রণালি: প্যানে মাখন গলিয়ে পিঠা ও সসেজের টুকরোগুলো গোলমরিচ গুঁড়া দিয়ে কিছুক্ষণ সাঁতলে নিন। এগুলো উঠিয়ে আরও ১ টেবিল চামচ মাখন গলিয়ে বেল পেপারগুলো ও পেঁয়াজ সাঁতলে নিন। এবার শাশলিকের কাঠিতে প্রথমে পিঠার একটি চাক দিন। তারপর পর্যায়ক্রমে এক রঙের বেল পেপার, সসেজ, আরেক রঙের বেল পেপার, পনির ও আবার বেল পেপার গেঁথে নিন। আরেক দফা একইভাবে গেঁথে তৈরি করুন মেরা পিঠার শাশলিক।

মুগ পুলি
উপকরণ: ভাজা মুগডাল ১ কাপ, ময়দা ৪ টেবিল চামচ, খিরসা ১ কাপ, লবণ আধা চা-চামচ, কোরানো নারকেল ২ কাপ, চিনি ২ কাপ, সয়াবিন তেল ভাজার জন্য, জাফরান আধা চা-চামচ, গোলা জল দেড় টেবিল চামচ, ঘি ২ চা-চামচ, ডিম ১টি।
প্রণালি: মুগডাল ঝেড়ে ভেজে নিন। তবে বেশি ভাজা ভাজা করবেন না। ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ২ কাপ পানিতে ডাল সেদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে নিন। শুকনো পাটায় শুকনো করে বেটে নিন। ২ কাপ পানিতে ১ কাপ চিনি দিয়ে শিরা তৈরি করুন। নারকেলের সঙ্গে ১ কাপ চিনি মিশিয়ে চুলায় দিন। আধা কাপ খিরসা মিশিয়ে অনবরত নাড়ুন। আঠালো হয়ে এলে নামিয়ে একটি বাটিতে বেড়ে রাখুন।
ময়দায় ১ চা-চামচ ঘি ও খাওয়ার সোডা দিয়ে ভালো করে ময়ান দিন। এবার মুগডাল বাটায় বাকি এক চা-চামচ ঘি দিয়ে অল্প অল্প করে ময়দা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে ডিম দিয়ে মেখে পিঠার ডো তৈরি করুন। এখান থেকে ২০-২৫টি গোলা তৈরি করুন বা ভাগ করুন। প্রতিটি ভাগ হাতের তালুতে নিয়ে গোল করে ভেতরে খিরসা ও নারকেলের মিশ্রণ দিয়ে ভালো করে মুখ বন্ধ করে দিন। ডুবো তেলে লালচে করে ভেজে তেল ছেঁকে চিনির শিরায় ছাড়ুন। পরিবেশন পাত্রে সাবধানে পিঠাগুলো উঠিয়ে সাজিয়ে রাখুন। ওপরে শিরা ঢেলে দিন। প্রতিটি পিঠার ওপর সামান্য করে খিরসা লম্বালম্বিভাবে বসিয়ে দিন। এই পিঠা ও খিরসার ওপরে গোলাপজলে ভেজানো জাফরান দিয়ে পরিবেশন করুন মুগের পুলি।

ঝুরি মাংসে মেরা পিঠা
উপকরণ: মেরা পিঠা ১টি, ঝুরি মাংস ২ কাপ, পেঁয়াজ (মিহি স্লাইস) ১ কাপ, লবণ আধা চা-চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি ৪টি, তেল ২ টেবিল চামচ।
প্রণালি: মেরা পিঠা লম্বা স্লাইস করে কেটে নিন। প্রতিটি স্লাইস আবার ৩ টুকরা করে কেটে নিন।
প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ সোনালি করে ভেজে ঝুরি মাংস, লবণ ও কাঁচা মরিচ কুচি দিয়ে নেড়ে পিঠাগুলো দিয়ে দিন। ভালোভাবে মিশিয়ে নাড়ুন। নামিয়ে গরম-গরম পরিবেশন করুন।
মেরা পিঠার উপকরণ: চালের গুঁড়া ২ কাপ, লবণ ১ চা-চামচ, তেল ১ চা-চামচ, পানি আড়াই কাপ।
প্রণালি: চাল ধুয়ে ৮-১০ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। ভালো করে পানি ঝরিয়ে পেপার ন্যাপকিনে রাখুন। পানি শুষে নিলে গ্রাইন্ডারে গ্রাইন্ড করুন অথবা মেশিনে ভাঙিয়ে নিন। একটি ছড়ানো কড়াই বা প্যানে চালের গুঁড়ো টেলে নিন। লবণ দিয়ে ভাজবেন। চালের গুঁড়ির রং পরিবর্তন হওয়ার আগে নামিয়ে রাখুন।
৪ কাপ কুসুম গরম পানি চালের গুঁড়ির সঙ্গে মিশিয়ে কাঠের চামচ দিয়ে নাড়ুন। এবার এটা ভালো করে মথে ডো তৈরি করুন। পানি ও তেল একত্রে দিয়ে মথবেন।
এই ডো থেকে ১৫-১৬টি ভাগ করুন। একেকটি ভাগ হাতের তালুতে দিয়ে গোল করে পিঠা তৈরি করুন।
হাঁড়িতে পানি ফুটিয়ে তার ওপর ঝাঁঝরি বোল বসিয়ে পিঠাগুলো বিছিয়ে দিন। তারপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন। ঝাঁঝরির ওপর একটি পাতলা মসলিন বা সুতি কাপড় বিছাতে ভুলবেন না। পনেরো থেকে আঠারো মিনিট ভাপ দিন। নামিয়ে একটি বোলে উঠিয়ে ফয়েল পেপার দিয়ে ঢেকে রাখুন।

গাজরের মালাই পাটিসাপটা
উপকরণ: সেদ্ধ করে ম্যাশ করা গাজর ৪ টেবিল চামচ, কোরানো নারকেল সিকি কাপ, ঝুরি করা গাজর (ভাপিয়ে নেওয়া) আধা কাপ, মাওয়া সিকি কাপ, রোস্টেড কাজুবাদাম (আধা ভাঙা) ২ টেবিল চামচ, এলাচি গুঁড়া সিকি চা-চামচ, ময়দা ৬ টেবিল চামচ, পোলাওয়ের চালের গুঁড়া ৪ টেবিল চামচ, সুজি ৪ টেবিল চামচ, ঘি ১ চা-চামচ ও সিকি চা-চামচ, জাফরান এক চা-চামচের একটু কম, কিশমিশ ১ টেবিল চামচ, চিনি আধা কাপ ও ১ টেবিল চামচ, দুধ ২ কাপ, ক্রিম সিকি কাপ ও ২ টেবিল চামচ, অরেঞ্জ ফুড কালার সামান্য।
প্রণালি: প্যানে ১ চা-চামচ ঘি গলিয়ে তাতে কোরানো নারকেল ও ঝুরি করা গাজর দিয়ে ভালো করে বেশ কিছুক্ষণ ভেজে নিন। মাওয়া মিশিয়ে আরও কিছুক্ষণ রান্না করুন। তারপর চিনি দিয়ে মিশিয়ে নেড়ে ক্রিম ও এলাচি গুঁড়া দিয়ে হালকা নেড়ে চুলা বন্ধ করে দিন। বাটিতে এই মিশ্রণ ঢেলে ছড়িয়ে ঠান্ডা হতে দিন। এরপর তাতে রোস্টেড কাজুবাদাম, আধা টেবিল চামচ কিশমিশ কুচি ও ১ চা-চামচ জাফরান দিয়ে মেখে রাখুন। ব্যাটারের জন্য অন্য একটি বাটিতে সিকি চা-চামচ জাফরান, ম্যাশ করা গাজর, ময়দা, সুজি ও দুধ দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবারে ১ টেবিল চামচ চিনি ও আধা চা-চামচের কম অরেঞ্জ ফুড কালার দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে প্রথমে ঘড়ির কাঁটার দিকে ও পরে তার বিপরীতে মেশাবেন। মসৃণ ব্যাটার তৈরি করুন।
একটি ননস্টিক প্যান গরম করে সিকি চা-চামচ ঘি দিয়ে প্যানের চারপাশ ঘুরিয়ে নিন, যেন ঘি পুরো প্যানে ছড়ায়। এবার হাত ঝাড়া পানি দিয়ে আবার প্যান ঘুরিয়ে একটি পাতলা সুতি কাপড় ভিজিয়ে বা পেপার ন্যাপকিন দিয়ে আলতোভাবে মুছে নিন। ডালের চামচের ২ চামচ ব্যাটার দিয়ে পুরো প্যান ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে চারপাশে ছড়িয়ে রুটির মতো তৈরি করে নিন। তাতে লম্বালম্বি করে গাজর ও নারকেলের মিশ্রণ দিয়ে রোল করে পেঁচিয়ে নিয়ে পরিবেশন পাত্রে একটি করে রাখুন।
গাজরের সস/সিরাপ
উপকরণ: এলাচি গুঁড়া ২টি, ঘি আধা চা-চামচ, জাফরান সিকি চা-চামচ, ভাপিয়ে নিয়ে ম্যাশ করা গাজর ১ টেবিল চামচ, পানি ১ কাপ, চিনি ১ কাপ, অরেঞ্জ ফুড কালার খুব সামান্য।
প্রণালি: প্যানে ঘি গরম করে গাজর দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে নিয়ে পানি দিয়ে নাড়ুন। তারপর একে একে চিনি, ফুড কালার, এলাচি গুঁড়া ও জাফরান দিয়ে মিশিয়ে নাড়ুন। এবার এই সস ফুটে উঠলে ঘন ঘন নাড়তে থাকুন। সসের ঘনত্ব মাঝারি হলে নামিয়ে পিঠার ওপর ঢেলে পরিবেশন করুন গাজরের পাটিসাপটা।

মুগ-পাকন পিঠা
উপকরণ: চালের গুঁড়া ১ কাপ, ভাজা মুগডালের গুঁড়া ১ কাপ, ময়দা ১ কাপ, মুরগির ডিম ২টি, ঘি বা সয়াবিন তেল ৩ টেবিল চামচ, পানি ১ কাপ, লবণ আধা চা-চামচ, তেল ভাজার জন্য।
শিরার জন্য: গুড় ২ কাপ, পানি ১ কাপ। একত্রে জ্বাল দিয়ে ঘন শিরা তৈরি করে ঠান্ডা করে নিন।
প্রণালি: ময়দা, চাল ও ডালের গুঁড়া একত্রে মিশিয়ে চেলে নিন। এবার ১ কাপ পানিতে লবণ ও ১ টেবিল চামচ তেল দিয়ে ফুটিয়ে নিন। তাতে মুগডালের গুঁড়া, চালের গুঁড়া ও ময়দার মিশ্রণ কাই করে নিন। এবার ১টি ডিম ও ২ টেবিল চামচ তেল মিশিয়ে মসৃণ করে ময়ান দিন। ময়ান দেওয়ার সময় যদি মনে হয় ফেটে যাচ্ছে, তাহলে আরও একটি ডিম ও ১ টেবিল চামচ তেল মিশিয়ে ভালো করে ময়ান দিন। দু-তিন ভাগ করে গোলাকার তাল করুন।
একটি করে তাল সিকি ইঞ্চি পুরু করে বেলে রুটি বানান। তারপর খেজুর কাঁটা দিয়ে আম, মাছ, পাতা, কলকা ইত্যাদি পছন্দমতো আকারে কেটে কাঁটা দিয়েই নকশা করুন।
কড়াইয়ে তেল গরম করে অল্প আঁচে গাঢ় সোনালি করে ভেজে নিন। তেল ছেঁকে উঠিয়ে ঠান্ডা শিরায় ছাড়ুন। ৫-১০ মিনিট শিরায় রেখে তুলে নিয়ে পরিবেশন পাত্রে সাজিয়ে দিন।

মসলাদার কিমা ইডলি
কিমার উপকরণ: সেদ্ধ করা গরু বা মুরগির মাংসের কিমা আধা কাপ, তেল দেড় চা-চামচ, পেঁয়াজ মিহি স্লাইস ৩ টেবিল চামচ, লবণ সিকি চা-চামচ, চিনি আধা চা-চামচ, সিরকা ১ চা-চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, গরম মসলার গুঁড়া আধা চা-চামচ।
প্রণালি: ফ্রাইপ্যানে তেল গরম করে ২ টেবিল চামচ পেঁয়াজ সোনালি করে ভেজে তাতে মাংসের কিমা, লবণ ও সিরকা দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ভেজে নিন। গোলমরিচ গুঁড়া বাদে অন্যান্য বাকি উপকরণ দিয়ে সামান্য পানিতে ভালো করে কষিয়ে নিন। এবার আধা কাপ পানি দিয়ে ঢেকে দিন। কিছুক্ষণ পর ঢাকনা খুলে আরও একবার নেড়ে গোলমরিচ গুঁড়া দিয়ে ভাজা ভাজা করে ঢেকে চুলা বন্ধ করে দিন। পাঁচ মিনিট পর একটি পাত্রে বেড়ে রেখে দিন।
ইডলির উপকরণ: ঝুরি করা গাজর ২ টেবিল চামচ, চেলে নেওয়া সুজি ১ কাপ, টকদই ১ কাপ (আধা কাপ পানি দিয়ে গোলানো), আধা ভাঙা রোস্টেড কাজুবাদাম ১ টেবিল চামচ, বেকিং সোডা সিকি চা-চামচ, পেঁয়াজ মাঝারি ১টি (বেটে নেওয়া), থেঁতো করা রসুন ২ কোয়া, কাঁচা মরিচ (মিহি কুচি) ৪টি, লবণ স্বাদমতো, রান্না করা কিমা আধা কাপ, ঝুরি করা আদা সামান্য, তেল ১ টেবিল চামচ, ঘি ৩ টেবিল চামচ, হলুদ, লাল ও সবুজ বেল পেপার (ছোট কিউব করে কাটা) প্রতিটি ২ টেবিল চামচ, ধনে পাতা কুচি আধা টেবিল চামচ।
প্রণালি: ফ্রাইপ্যানে ঘি গরম করে কাজুবাদাম হালকা ভেজে বাটিতে উঠিয়ে রাখুন। তারপর ঝুরি করা আদা সোনালি করে ভেজে পেঁয়াজ ও রসুনবাটা দিয়ে নেড়ে কাঁচা মরিচ কুচি দিন। দু-একবার নেড়ে ভেজে রাখা কাজুবাদাম ও সুজি দিয়ে আবার অল্প আঁচে ভাজুন। ঘি ও সুজির সুন্দর গন্ধ বের হলে লবণ দিয়ে মিশিয়ে নেড়ে চুলা বন্ধ করে একটি শুকনো পাত্রে এই মিশ্রণ রেখে ঠান্ডা হতে দিন।
একটি বাটিতে বোলে টকদই পানি দিয়ে ফেটে নিয়ে তাতে একে একে ভাজা সুজির মিশ্রণ, ধনেপাতা কুচি, ঝুরি করা পনির, বেকিং সোডা, রান্না করা কিমা, ১ টেবিল চামচ ঝুরি করা গাজর ও ১ টেবিল চামচ করে সব ধরনের বেল পেপার দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে ফেটে নিন। ব্যাটার ঘন হওয়ার জন্য আধা ঘণ্টা রেখে দিন।
মাইক্রোওয়েভ কুকারে আধা কাপ পানি দিয়ে ১ মিনিট গরম করে তাতে স্টিমার বসিয়ে দিন। তার ওপর ইডলি স্ট্যান্ড বসিয়ে বা ছোট ছোট বাটিতে চামচ দিয়ে ব্যাটার ঢেলে দিন। প্রতিটির ওপর সামান্য ঝুরি করা গাজর ছিটিয়ে তার ওপর ১ চা-চামচ করে ঝুরি করা পনির ছিটিয়ে দিন। এর ওপর সব ধরনের ক্যাপসিকাম দিয়ে সাজিয়ে ঢেকে দিন। মাইক্রোওয়েভে ফুল পাওয়ারে ২ মিনিট ভাপ দিন। প্রয়োজন হলে ও পরে আরও ২ মিনিট ভাপ দিন। ঝটপট তৈরি হয়ে গেল মসলাদার কিমা ইডলি। নারকেলের চাটনি, ধনেপাতার চাটনি অথবা পুদিনাপাতার চাটনি দিয়ে পরিবেশন করুন।
এই ইডলি চুলায়ও স্টিমারে ইডলির ছাঁচে ১৫ থেকে ২০ মিনিট স্টিমে তৈরি করতে পারেন।

দই পিঠা
উপকরণ: (পিঠার জন্য) ময়দা দেড় কাপ, টকদই ১ কাপ, বেকিং সোডা সিকি চা-চামচ, লবণ এক চিমটি, চিনি সিকি কাপ ও ১ টেবিল চামচ, রোস্টেড কাজুবাদাম গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, তেল সেঁকা ভাজার জন্য।
ক্ষীরের উপকরণ: দুধ ৩ লিটার, চিনি সিকি কাপ, ফ্রেশ ক্রিম আধা কাপ, মাওয়া আধা কাপ।
প্রণালি: ৩ লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে দেড় লিটার হলে চিনি দিয়ে অনবরত নাড়ুন। ঘন থকথকে হয়ে ১ লিটার হলে মাওয়া ও ক্রিম মিশিয়ে নেড়ে চুলা বন্ধ করে দিন।
একটি বাটিতে ময়দা, লবণ, বেকিং সোডা ও চিনি মিশিয়ে টকদই এবং রোস্টেড কাজুবাদাম গুঁড়ো দিয়ে নরম ডো বা খুব ঘন ব্যাটার তৈরি করুন।
প্যানে তেল গরম করে ডালের চামচের ১ চা-চামচ করে ব্যাটার দিয়ে একত্রে ৩-৪টি পিঠা সেঁকা ভাজা করে নিন। এভাবে সবগুলো পিঠা ভেজে নিন।
পরিবেশন পাত্রে কিছু খিরসা ঢেলে তার মধ্যে পিঠাগুলো ছেড়ে দিন। ওপরে বাকি খিরসা দিয়ে ওপরে রোস্টেড কাজু গুঁড়া, বাদাম ও পেস্তা দিয়ে কুচি ছিটিয়ে পরিবেশন করুন।

কিশমিশ লবঙ্গ-লতিকা
উপকরণ: লবঙ্গ (প্রতিটির জন্য) ১টি করে, কিশমিশ (প্রতিটির জন্য) ১টি করে, ময়দা ২ কাপ, তেল সিকি কাপ, লবণ ১ চা-চামচ, পানি আধা কাপ, নারকেল (কোরানো) ১ কাপ, খিরসা আধা কাপ, ছানা (চিনি দিয়ে জ্বাল দিয়ে মাখা মাখা হবে) আধা কাপ, মাওয়া আধা কাপ, চিনি দেড় কাপ, এলাচি গুঁড়া সিকি চা-চামচ, তেল ভাজার জন্য, রোস্টেড সাদা তিল ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি: নারকেলের সঙ্গে আধা কাপ চিনি, খিরসা ও ছানা মিশিয়ে জ্বাল দিন। কিছুটা মাখা মাখা হয়ে এলে মাওয়া ও এলাচি গুঁড়া দিয়ে আঠালো হয়ে হালুয়ার মতো হলে নামিয়ে রাখুন। একটি বাটিতে বেড়ে রাখুন। ময়দার সঙ্গে লবণ মিশিয়ে তেলের ময়ান দিন। আধা কাপ পানি দিয়ে ময়দা মথে নিন। ২০টি ভাগ করে হাতের তালুতে নিয়ে গোল করে একটি বাটিতে ঢেকে রাখুন। কিছুক্ষণ পর রুটি বেলার পিঁড়িতে প্রতিটি ভাগ দিয়ে একেকটি ছোট ছোট রুটি বেলুন। প্রতিটি রুটির মাঝখানে ২ চা-চামচ করে হালুয়ার মিশ্রণ দিয়ে দুপাশের রুটি দিয়ে হালুয়া ঢেকে দিন। প্রথমে রুটির এক কিনার তুলে ঢাকুন। তারপর অন্য কিনারটি প্রথমটির ওপর তুলে দিন। উল্টে আবার দুমাথা থেকেই একটির ওপর আরেকটি তুলে দিয়ে চেপে বন্ধ করুন। মাঝখানে মুখ বন্ধের জায়গায় প্রথমে একটি কিশমিশ বসিয়ে তার ওপর একটি লবঙ্গ দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিন। লবঙ্গ-লতিকা দেখতে চার কোনা হবে।
এক কাপ চিনিতে পরিমাণমতো পানি দিয়ে শিরা করুন। ঘন হলে চুলা বন্ধ করে দিন।
ডুবো তেলে ভাজার জন্য তেল গরম করে পিঠা সোনালি করে ভেজে নিন। তেল ছেঁকে শিরায় ছাড়ুন। এবারে শিরাসহ পরিবেশন পাত্রে সাজিয়ে ওপর থেকে রোস্টেড সাদা তিল ছিটিয়ে পরিবেশন করুন লবঙ্গ-লতিকা।