ফাস্ট ফুডে ইফতার

ইফতারির কথা বললে আজকাল অনেকের চোখের সামনে ফ্রাইড রাইস, ফ্রাইড চিকেন, তন্দুরি চিকেন কিংবা শর্মার চেহারা ভেসে ওঠে। অনেকের কাছে আবার ইফতারিতে এসব খাবার অবাক করার মতো ব্যাপার। তবে এখন অনেকেই ইফতারি হিসেবে ফাস্ট ফুড খেতে পছন্দ করছেন।

ছোলা, পেঁয়াজু সঙ্গে জিলাপি, বেগুনি ইত্যাদি এখনো ইফতারির মূল উপাদান। তবে ইফতারি হিসেবে ফাস্ট ফুডও খাচ্ছেন অনেকে। ইফতারে ফাস্ট ফুড খেতেই বাইরে যাচ্ছেন। আবার ঈদ উপলক্ষে বাজার করতে অনেকেই বাইরে যাচ্ছেন। ইফতারের সময় হলে তাঁরা হাতের কাছের ফাস্ট ফুডের দোকান থেকেই ইফতার সেরে নিচ্ছেন।

রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং মল, ঝিগাতলা, ধানমন্ডি এলাকার বেশ কিছু ফাস্ট ফুডের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে অনেকেই ইফতার করতে আসেন। ফুড কোর্টের ব্যবসায়ীরা বললেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার তুলনামূলক বেশি। জিগাতলা ও ধানমন্ডি এলাকার হেলভেশিয়া, কড়াই-গোশত আমেরিকান বার্গার, পিৎজা হাট, সিপি ফ্রাইড ছাড়াও আরও কয়েকটি ফাস্ট ফুডের দোকানে অনেকে ইফতার করতে আসেন। তবে যেসব বিপণিবিতানে ফুড কোর্ট রয়েছে, সেসব ফাস্ট ফুডের দোকানে ভিড় তুলনামূলক বেশি।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পূর্ণিমা সিনেমা হলের পাশে কয়েক দিন আগেই ফাস্ট ফুড বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান বিএফসির একটি শাখা খোলা হয়েছে। গত রোববার ইফতারের সময় ওই দোকানটিতে ১০-১২ জন লোককে ইফতারি নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। তাঁদের একজন চাকরিজীবী তানজিল মোস্তফা। বন্ধুকে নিয়ে ইফতার করতে এসেছেন। তিনি বলেন, সাধারণত ইফতারে ফাস্ট ফুড খাওয়া হয় না। আজ বাইরে এসেছেন বলে খাচ্ছেন। তবে ফাস্ট ফুড খেতে পছন্দ করেন বলেই এখানে ইফতার করতে এসেছেন।

বসুন্ধরা সিটির শর্মা হাউসের কর্মী মাইনুদ্দিন বললেন, মূলত রোজা শুরু হওয়ার পর থেকেই ফুড কোর্টের দোকানগুলোতে ইফতারের সময় ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে।


গত সোমবার ইফতারের আগে বসুন্ধরা শপিং মলের ফুড কোর্টে গিয়ে দেখা যায়, পুরো ফুড কোর্টের কোথাও পা ফেলার জো নেই। ফুড কোর্টের সামনের চেয়ার-টেবিলে জায়গা না থাকায় অনেকে মেঝেতে চাটাই বিছিয়ে ইফতারি নিয়ে বসেছেন। ফাস্ট ফুডের দোকানগুলো থেকেই ক্রেতাদের জন্য চাটাইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সোমবার ইফতারের ঠিক আগ মুহূর্তে বসুন্ধরা শপিং মলের ফুড কোর্ট ঘুরে দেখা যায়, ইফতারি হিসেবে ফ্রাইড রাইস ও ফ্রাইড চিকেন রোজাদারদের পছন্দের তালিকায় সবার আগে। অনেকে নান রুটির সঙ্গে গ্রিলড চিকেন খাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ভুনা খিচুড়ি দিয়ে ইফতার সেরে নিচ্ছেন। কেউবা ফলের জুস, নানা ধরনের স্যুপ দিয়েও ইফতার করছেন।
তবে বেকায়দায় পড়ে বা পছন্দ বলে যাঁরা ইফতারে ফাস্ট ফুড খাচ্ছেন, তাঁদের জন্য পুষ্টিবিদদের তরফ থেকে খুব সুখকর বার্তা নেই। বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা আখতারুন নাহার প্রথম আলোকে বলেন, প্রয়োজনে এক-দুদিন ইফতারে ফাস্ট ফুড খেলে সমস্যা নেই। তবে খুব ঘন ঘন ইফতারে ফাস্ট ফুড খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কারণ ফাস্ট ফুডের স্বাদ বাড়ানোর জন্য টেস্টিং সল্ট, সসের মতো যেসব উপাদান ব্যবহার করা হয়, সেগুলো শরীরের জন্য ভালো নয়। তাই ইফতারে ফাস্ট ফুড যত এড়িয়ে চলা যায়, ততই ভালো।