বাদশাহি রান্না

পুরান ঢাকার বাসিন্দা নাসরিন মাহমুদ। রান্না করতে ভালোবাসেন। দেশ-বিদেশের নানা রকম রান্নায় তাঁর হাত পাকা। নকশি ক্যাটারিং নামের একটি খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী তিনি। নাসরিন মাহমুদের দেওয়া তিনটি খাবারের রেসিপি থাকছে এখানে।

মেজবানি গরুর মাংস

উপকরণ: মেজবানি মসলার জন্য মৌরি ২ টেবিল চামচ, সাদা শর্ষে ১ টেবিল চামচ, মেথি ১ টেবিল চামচ, জিরা ২ টেবিল চামচ, পোস্তদানা ২ টেবিল চামচ, রাঁধুনি ২ টেবিল চামচ, জয়ত্রী ১০ গ্রাম, জায়ফল ১টি, শুকনা মরিচ ৪টি ও পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ। বেরেস্তা বাদে বাকি সব মসলা গুঁড়া করে ১ চা-চামচ নিন।

মাংসের জন্য উপকরণ: গরুর মাংস ২ কেজি, কলিজা ৫০০ গ্রাম, মগজ ২৫০ গ্রাম, আদাবাটা ২ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ২ টেবিল চামচ, লবণ ১ টেবিল চামচ, ধনেগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, হলুদগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, শুকনা মরিচগুঁড়া ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা আধা কাপ, স্টার অ্যানিস ৩-৪ পাপড়ি, পেঁয়াজকুচি ১ কাপ, ছোট এলাচি ৫টি, বড় এলাচি ৩টি, লবঙ্গ ৮টি, দারুচিনি ১০ সেন্টিমিটার, তেজপাতা ৩টি, কাবাব চিনি ১২টি, শুকনা মরিচ ৬টি, গরমমসলার গুঁড়া ১ চা-চামচ, রাঁধুনিগুঁড়া ১ টেবিল চামচ, বাদামবাটা ২ টেবিল চামচ, ঘি আধা কাপ, টমেটো ১ কাপ ও পেঁয়াজ বেরেস্তার তেল ১ কাপ।

প্রণালি: এই মাংসে হাড়, শুধু মাংস, মগজ, কলিজা—সবকিছুর মিশ্রণ থাকবে। কলিজা ও মগজ হালকা হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে আলাদা রাখুন। মাংসে মসলার গুঁড়া তিন ভাগে ভাগ করে ধাপে ধাপে দিতে হবে। উপকরণ তালিকা অনুসারে প্রথমে আদাবাটা থেকে ঘি পর্যন্ত সব মসলা মিশিয়ে মাংস প্রেশার কুকারে দিন। প্রেশার কুকারে উচ্চ তাপে ১ সিটি ও কম তাপে ২ সিটি দিয়ে নামিয়ে নিন। এবার নামিয়ে ঢাকনা খুলে টমেটোকুচি, গরুর মগজ, কলিজা দিয়ে হালকা আঁচে কষাতে হবে। একটু পরপর আধা কাপ পানি দিয়ে কষিয়ে নিন। ১০-১৫ মিনিট পর আবার গরম মসলা, তৈরি করা মেজবানি মসলা, পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে নেড়ে চুলায় দিন। মাংস সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করতে হবে।

মুরগির রোস্ট

উপকরণ: মুরগি ১টি আস্ত (৯০০-১২০০ গ্রাম), পেঁয়াজকুচি ৪টি (মাঝারি), আদাবাটা ২ টেবিল চামচ, রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, তেল আধা কাপ, কাঠবাদামবাটা ৮টি, কাঁচা মরিচবাটা ৫টি, সবুজ এলাচি ৫টি, কাবাব চিনি ৪টি, দারুচিনি ৩ টুকরা, বড় এলাচি ১টি, জায়ফল ১টি (ছোট), জয়ত্রী সামান্য, আলুবোখারা ৪টি, ক্রিম পরিমাণমতো, টক দই ৪ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা আধা কাপ, মাওয়া আধা কাপ, ঘি আধা কাপ, জাফরান সামান্য, কেওড়া জল সামান্য, পোস্তদানাবাটা ২ টেবিল চামচ, তেঁতুলের ক্বাথ দেড় টেবিল চামচ, শুকনা মরিচের গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, চিনি ১ টেবিল চামচ, কিশমিশবাটা পরিমাণমতো ও সেদ্ধ ডিম ৪টি।

প্রণালি: মুরগি কাটা চামচ দিয়ে কেচে নিন। টিস্যু বা কাপড় দিয়ে শুকনা করে মুছে নিতে হবে। একটু লবণ, এক চিমটি জাফরান রং দিয়ে মুরগিটা মেখে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। কড়াইয়ে তেল দিয়ে পেঁয়াজ হালকা বাদামি রং করে ভেজে নিন। তারপর লবণ, আদা, রসুন দিয়ে কষাতে হবে (২-৩ বার করে)। এরপর দিন টক দই, আলুবোখারা, কাঁচা মরিচ, মসলাগুঁড়া, কিশমিশ, বাদামবাটা আর হালকা পানি। আবারও কষাতে হবে। এবার ভাজা মুরগি মসলাতে দিয়ে অল্প আঁচে রেখে দিন। মুরগি সেদ্ধ হয়ে এলে সেদ্ধ করে রাখা ডিম দিয়ে কিছুক্ষণ দমে রেখে দিন। এবার মেশান মিষ্টি দই, সামান্য পানি, ক্রিম, তেঁতুলের ক্বাথ, পেঁয়াজ বেরেস্তা আর ঘি। কিছুক্ষণ রান্না করে নামানোর আগে দিয়ে দিন মাওয়া ও সামান্য গরমমসলা।

শাহি জর্দা

উপকরণ: বাসমতী চাল ১ কাপ, খাবার রং (কমলা) ১ চা-চামচ, এলাচি ৫টি, দারুচিনি ২ টুকরা, চিনি আধা কাপ, কমলার রস আধা কাপ, কমলার খোসা সামান্য (গ্রেড করা), মোরব্বা ২ টেবিল চামচ, বাদামকুচি ২ টেবিল চামচ, কিশমিশ ২ টেবিল চামচ, ঘি ২-৩ টেবিল চামচ, কেওড়া ২-৩ ফোঁটা ও ছোট মিষ্টি পরিমাণমতো।

প্রণালি: চাল ভালোভাবে ধুয়ে ৩০ মিনিটের মতো ভিজিয়ে রাখতে হবে। ভেজানো চাল খাবার রং, দারুচিনি, এলাচি দিয়ে ৭০ শতাংশ সেদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে নিন। একটি পাত্রে আধা কাপ চিনির সঙ্গে আধা কাপ পানি মিশিয়ে সিরা করে নিতে হবে। এখন পানি ঝরানো চালে মিষ্টি বাদে বাকি সবকিছু দিয়ে দমে বসিয়ে দিন। চাল পুরোপুরি সেদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে ছোট মিষ্টি ও কমলা দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।