হাতে বানানো চকলেটেই বাজিমাত
ছোটবেলা থেকেই ফাতেমার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু এসএসসি পাসের পর ২০১৫ সালে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তাঁর আর ডাক্তার হওয়া হয় না। পরিবারের দাবি মেনে সংসারে মন দেন। একমাত্র মেয়ে ও সংসার সামলে ডাক্তারি পড়া আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে কিছুটা গুছিয়ে আবার পড়ালেখা শুরু করেন। এখন তিনি অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
ফাতেমার জন্ম বরিশালে হলেও পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠা পুরান ঢাকায়। বিয়ের পর ব্যবসায়ী স্বামীর সঙ্গে সংসার পেতেছেন ঢাকার বাড্ডায়। লকডাউনে পড়ালেখা আর সংসার সামলে ঘরেই চকলেট তৈরি করে তা অনলাইনেই বিক্রি শুরু করেন। মাত্র এক বছরে ফাতেমা ছয় লাখ টাকার চকলেট বিক্রি করেছেন।
ফাতেমা বলেন, ‘আমি আগে থেকেই বেকিং নিয়ে আগ্রহী ছিলাম। বাসায় নিজে নিজে ইউটিউবে ভিডিও দেখে, এটা-সেটা মিলিয়ে বিভিন্ন খাবার তৈরি করতাম। চকলেট আবার আমার দারুণ প্রিয়। আমার পরিবারও খুব পছন্দ করে। একদিন আমি ফেসবুকে একটা বিজনেস গ্রুপ দেখে সেখানে এমনিতেই নিজেদের জন্য বানানো কিছু চকলেটের ছবি দিই। তারপর ঘুমিয়েও পড়ি। সকালে মনেও ছিল না। হঠাৎ ফেসবুকে ঢুকে দেখি অনেকেই দাম জিজ্ঞেস করেছে। এতে আমি তুমুল আগ্রহ পাই। কিছু চকলেটের অর্ডারও নিই। তারপর বানিয়ে কুরিয়ারের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করি। তারা খেয়ে রিভিউ দেয়। এরপর থেকে নিয়মিতই অর্ডার পেতে থাকি।’
এভাবেই চলতে থাকে ফাতেমার উদ্যোক্তাজীবন। চকলেট নিয়ে কাজ করার মাত্র তিন মাসের মধ্যেই লাখ টাকার চকলেট বিক্রি করেন ফাতেমা। এরপর তিনি ব্যবসাটা দাঁড় করানোর দিকে মনোযোগী হন। নিরাপদ উপায়ে আরও সুস্বাদু ও মজাদার চকলেট বানানোর উপায় খুঁজতে থাকেন। এরই মধ্যে অনলাইনেই তিনি তিনটি প্রশিক্ষণ কোর্সও করে নিয়েছেন।
ফাতেমার চকলেটের মধ্যে রয়েছে ললিপপ, ট্রাফেল, কাস্টমাইজড চকলেট বার, প্লেইন চকলেট বার, ডার্ক চকলেট, মিল্ক চকলেট, হোয়াইট চকলেট, কফি চকলেট ও স্ট্রবেরি চকলেট। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় কাস্টমাইজড চকলেট বার ও মিল্ক চকলেট। ক্রেতার ফরমাশ অনুযায়ী ফাতেমা চকলেটের ওপর লিখেও দেন। ফাতেমা আপাতত লক্ষ্য নিজস্ব আউটলেট। আর ক্রমেই নিজের ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা। তবে আপাতত তিনি চকলেটের নানা বৈচিত্র্য সংযোজনে কাজ করছেন।