শাকসবজির পুষ্টি ভালো রাখার উপায়
শাকসবজি, ফল অনেকক্ষণ খোলা বাতাসে রাখলে পুষ্টি উপাদান নষ্ট হয়। তাই শাকসবজি টাটকা অবস্থায় খাওয়া উচিত। শাকসবজির পুষ্টিমানের অপচয় রোধ করার কয়েকটি নিয়ম:
রান্নার ঠিক আগে তাজা শাকসবজি বেছে নিয়ে পরিষ্কার পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে তারপর কাটতে হবে। কাটা শাকসবজি পুনরায় ধোয়া বা পানিতে রাখা যাবে না।
পরিষ্কার ও ধারালো দা বা বঁটি দিয়ে যতটা সম্ভব টুকরা বড় বড় ও সমান সাইজ করে কাটতে হবে। টুকরা ছোট–বড় ও এবড়োখেবড়ো হলে পুষ্টি উপাদান বেশি নষ্ট হয়।
সবজি কাটার সময় যতটা সম্ভব খোসাসহ কাটতে হবে। কারণ, খোসার নিচেই বেশির ভাগ ভিটামিন থাকে। ছুরি বা বঁটি দিয়ে খোসা পুরু করে না কেটে ছিলে বা চেঁছে নিলে ভালো। এতে আঁশ পাবেন বেশি।
কাটার পর সঙ্গে সঙ্গে রান্না করতে হবে। যদি রান্না করতে দেরি হয়, তাহলে সবজিগুলো ঠান্ডা স্থানে ঢেকে রাখা উচিত।
ছোট মুখের গর্তযুক্ত পাত্রে শাকসবজি রান্না করা উচিত। ছড়ানো মুখের পাত্রে রান্না করলে বাতাসের অক্সিজেন সবজির সংস্পর্শে বেশি আসে, ফলে ভিটামিন বেশি নষ্ট হয়।
সেদ্ধ করার জন্য যতটুকু পানি প্রয়োজন, ঠিক ততটুকুই পানি ব্যবহার করতে হবে এবং প্রথমে পানি ফুটিয়ে নিয়ে তাতে সবজি ছাড়লে তাতে খাদ্য উপাদান জারিত হয়ে কম নষ্ট হয়।
শাকসবজির সেদ্ধ করা পানি কোনোমতেই ফেলা উচিত নয়। এ পানি ডাল বা অন্য তরকারির সঙ্গে ব্যবহার করা অথবা শাকের সঙ্গেই শুকিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
শাকসবজি বেশি তাপে অল্প সময়ে রান্না করা উচিত। এত বেশি সেদ্ধ করা উচিত নয়, যাতে গলে যায়। এতে বেশি পুষ্টি নষ্ট হয়।
শাকসবজির স্বাভাবিক রং বজায় রাখা এবং মাংস, ডাল ইত্যাদি তাড়াতাড়ি সেদ্ধ করার জন্য ক্ষারজাতীয় পদার্থ, যেমন সোডা ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ, এতে ভিটামিন সি ও বি নষ্ট হয়ে যায়।
কিছু কিছু শাকসবজি, যেমন ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, লেটুসপাতা, গাজর, মুলা, শসা ইত্যাদি কাঁচা খাওয়া ভালো। রান্নায় এগুলোর পুষ্টিগুণ কমে যায়।
রান্নায় সামান্য ভিনেগার বা লেবুর রস ব্যবহার করলে ভিটামিন বি ও সি অনেকটা রক্ষা পায়।
লোহা বা তামার পাত্রে রান্না না করে মাটির বা অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রে রান্না করা উচিত। কারণ, লোহা ও তামার সংস্পর্শে ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়।
ফাহমিদা হাশেম: সিনিয়র পুষ্টিবিদ, ল্যাবএইড ও ফিটব্যাক