আপনিও কি খাওয়ার সময় শব্দ করেন কিংবা খেতে খেতে কথা বলেন

মুচমুচে খাবারে কামড় বসানোর সময় শব্দ হয়েই যায়। সেটুকু মেনে নেওয়াই যায়। তবে অনেকেই আছেন স্বভাববশতই শব্দ করে খান। সুড়ুত সুড়ুত শব্দে পানীয় গ্রহণ করেন। এভাবে খাওয়াটা কেতাদুরস্ত তো নয়ই, স্বাস্থ্যকরও নয়।

মুচমুচে খাবারে কামড় বসানোর সময় শব্দ হয়েই যায়
ছবি: পেক্সেলস

অনেকে আবার খেতে খেতে আলাপচারিতাও করেন। রেস্তোরাঁ বা কর্মস্থলে তো নয়ই, নিজের বাড়িতেও মুখে খাবার থাকা অবস্থায় কথা না বলাই ভালো। তাতে খাবারের কোনো অংশ শ্বাসনালিতে চলে যেতে পারে। খাবারের ক্ষুদ্র কণা শ্বাসনালিতে চলে গেলে কাশি শুরু হয়, যাকে আমরা সাধারণভাবে ‘বিষম খাওয়া’ বলে থাকি। অমন হুট করে কাশি শুরু হলে ন্যাপকিন, টিস্যু পেপার কিংবা হাত দিয়ে মুখ ঢাকার মতো সৌজন্য দেখানোর সুযোগও কিন্তু অনেক সময় থাকে না। সবচেয়ে বড় কথা, শ্বাসনালিতে খাবার আটকে গিয়ে দমবন্ধ হয়ে পড়ার উপক্রমও হতে পারে যেকোনো সময়।

তা ছাড়া মুখে খাবার নিয়ে কথা বললে মুখের ভেতরের খাবার দেখা যায়। অসাবধানে মুখ থেকে খাবার ছিটেও আসে। দুটোই কিন্তু অশোভন।

কিন্তু খেতে বসে কি মুখে কুলুপ এঁটে থাকা যায়? সামাজিক পরিসরে খাওয়াদাওয়ার রীতি মেনে, সুন্দর পরিবেশ বজায় রেখে কীভাবে চলতে পারে খাওয়াদাওয়ার পাট?

খাওয়ার সময় শব্দ করাটা কি কোনো রোগ

ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান বলেন, কোনো রোগের কারণে যে কারও খাওয়ার সময় শব্দ হয়, বিষয়টা কিন্তু এমনও নয়। এটি অভ্যাসের বিষয়। ধীরেসুস্থে খাবার খেলে এবং নিজের খাওয়ার প্রতি নিজেই খানিকটা খেয়াল রাখলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব।

মুখ বন্ধ করে খাবার চিবানো উচিত
ছবি: পেক্সেলস

করণীয়

খাওয়ার সময় আপনি শব্দ করছেন কি না, নিজেই খেয়াল করুন। শব্দ করলে ধীরে ধীরে খাওয়ার অভ্যাস করুন, যাতে শব্দ না হয়।

মুখ বন্ধ করে খাবার চিবানো উচিত।

অতিরিক্ত বড় গ্রাস মুখে তুলবেন না। অল্প করে খাবার মুখে নিন।

মুখ থেকে খাবার পড়ে গেলে জিব দিয়ে টানতে যাবেন না। এটি দেখাবেও খারাপ, আবার এভাবে জিব দিয়ে খাবার টেনে নেওয়ার সময় অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দও হয়ে যেতে পারে। বরং ন্যাপকিন বা টিস্যু পেপার দিয়ে খাবারটা মুছে ফেলুন।

চা খাওয়ার সময়ও শব্দ হতে পারে। এটি অন্যদের জন্য হয়তো বিরক্তিকর
ছবি: প্রথম আলো

খাবার মুখে নিয়ে কথা বলবেন না। তাহলে শ্বাসনালিতে খাবার ঢোকার ঝুঁকিও থাকবে না। কারও সঙ্গে খেতে বসে একেবারে চুপ থাকলেও অবশ্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাই টুকটাক কথা বলতে পারেন; তবে সেটা খাওয়ার মাঝে, যখন মুখে কোনো খাবার থাকবে না। অর্থাৎ আলাপচারিতা হতে পারে খাবার খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে, খাবার মুখে নিয়ে কখনোই নয়।