জয়া–মহসিনা কি রাঁধতে পারেন
করোনাকাল। ঘর থেকে বের হওয়া বারণ। অনেকেরই তখন রান্না করে সময় কাটত। রেসিপি নিয়ে চলত নানা নিরীক্ষা। সেই সময়ের ঘরবন্দী জীবনের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘জয়া আর শারমিন’। ছবিটির মূল দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান ও মহসিনা আক্তার।
ছবিতেও জয়া নামেই উপস্থিত হয়েছেন জয়া আহসান আর মহসিনা হয়েছেন শারমিন। একজন অভিনেত্রী, আরেকজন গৃহকর্মী। করোনাকালে জয়ার বাড়িতে আটকা পড়েন শারমিন। এই ছবির অনেকটাজুড়েই আছে তাঁদের রান্নার গল্প। যে গল্প নিয়ে ‘নকশা’র প্রচ্ছদের জন্য বিশেষ ফটোশুটে অংশ নিলেন এই দুই অভিনেত্রী। পাশাপাশি তুলে ধরলেন নিজেদের রান্নার গল্প।
বাঙালি রান্না জয়া আহসানের বিশেষ পছন্দ। যদিও ব্যস্ততার কারণে নিয়মিত রান্নাঘরে ঢোকার সময় পান না, তবে সুযোগ পেলেই এ ধরনের রান্না করেন। কথায় কথায় জানা গেল, খুব ভালো পান্তা মাখেন জয়া আহসান। শুঁটকি, বিশেষ করে চ্যাপার নানা পদ রাঁধতে ভালোবাসেন। মাছও ভালো রান্না করেন। খেতে ভালোবাসেন মায়ের হাতের রান্না। জয়া আহসান বলছিলেন, তাঁর মা রেহানা মাসউদ সাধারণ রান্নাগুলোকেই অসাধারণভাবে রাঁধেন। ‘মা তাঁর কিচেন গার্ডেন থেকে বিভিন্ন শাক আর লতাপাতা তুলে নিয়ে রান্নায় মিশিয়ে দেন। কলমিশাকের ডাঁটা নিয়ে ছড়িয়ে দেন মাছে, রসুনপাতার ভর্তা করেন, গাছ থেকে বিলেতি ধনেপাতা নিয়ে ছড়িয়ে দেন যেকোনো রান্নায়। এতে বদলে যায় সেই রান্নার চেনা স্বাদ। কেমন জানি মায়ের হাতের রান্নার এক নিজস্ব স্বাদ পায়।’
মহসিনাও মাঝেমধ্যেই রান্না করেন। তাঁরও প্রথম পছন্দ মায়ের হাতের রান্না। এই সিনেমায় কাজ করার আগে অনেকেই মনে করতেন মহসিনা ভালো রাঁধতে পারেন না। সিনেমায় একটি দৃশ্যে শারমিনকে পাবদা মাছ কাটতে হয়, দক্ষ হাতে সেই মাছ কেটে সেটের সবাইকে অবাক করে দেন মহসিনা। জ্বর নিয়ে ডাল রান্না করার একটি দৃশ্যও ছিল, এই দৃশ্যের পেছনে একটা গল্প আছে। তবে কী সেই গল্প, তা জানতে হলে দেখতে হবে জয়া আর শারমিন।
‘নকশা’র জন্য বিশেষ ফটোশুটে রান্না করা হলো রাশিয়ার বোর্শ, জাফরান-রোজমেরি চিকেন আর মাখন–মাষকলাই ডাল। বোর্শের রেসিপি দিয়েছেন মহসিনা। রাশিয়ায় পড়াশোনা করার কারণে সেখানকার অনেক রান্নাই তাঁর আয়ত্তে রয়েছে।
জয়া আহসান দিয়েছেন জাফরান–রোজমেরির চিকেনের রেসিপি আর মাখন–মাষকলাইয়ের ডাল পরিচালক পিপলু আর খানের নিজস্ব রেসিপি। খাবারের ছবি যখন তোলা হচ্ছিল, জয়া আহসান বলছিলেন, এই ডাল নাকি সিনেমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। খুব যত্ন করে রান্না করতে ভালোবাসেন পিপলু। ছবির বেশির ভাগ রান্নাই তিনি করেছেন। ‘নকশা’র জন্য বিশেষ ফটোশুটের রান্নাগুলোও তিনি করেছেন। ‘সিনেমার শুটিংয়ের সময় রান্নার প্রতি পিপলু ভাইয়ের এত ফ্যাসিনেশন ছিল যে রান্নার দৃশ্যগুলো তিনি অনেক সময় আর মনোযোগ দিয়ে চিত্রায়ণ করতেন, মাঝেমধ্যে আমি আর মহসিনা ভাবতাম, পর্দায় কি আসলেই আমরা প্রাধান্য পাচ্ছি,’ ফটোশুটের মধ্যেই বেশ মজা করে বলে উঠলেন জয়া আহসান। এই ছবিতে এমনই আরও গল্প, আড্ডা, খুনসুটির গল্প আছে। যেগুলো জানার জন্য দর্শকদের অপেক্ষা করতে হবে ১৬ মে পর্যন্ত। সেদিন বড় পর্দায় মুক্তি পাবে ‘জয়া আর শারমিন’।
২০২০ সালে ছবিটির শুটিং হয়। পাঁচ বছর পর ‘নকশা’র ফটোশুটের জন্য ছবির কলাকুশলীরা একত্র হলে আবারও ফিরে আসে সেই সময়ের স্মৃতি। ফটোশুটের জন্য আমরা যখন খোলা বারান্দায় গেলাম, তখন যেন সেসব দিনে ফিরে গেলেন জয়া আর মহসিনা। গল্প–আড্ডায় দুজন জয়া-মহসিনা নয়, হয়ে উঠলেন জয়া আর শারমিন।