এ বছর যে খাবারগুলোর জনপ্রিয়তা বাড়বে

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাওয়া একটি আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা হওয়া উচিত

এ বছর এমন খাবার খাওয়া উচিত, যা হৃদয়কে রাখবে সুস্থ, মেজাজকে সুস্থির, শরীরের জন্য তৈরি করবে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থছবি: নকশা

আংশিক নয়, ২০২৩ সালে শরীরের পুরো ব্যবস্থাপনা ঠিকঠাক রাখার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে বেশি। সারা দিন ধরে যে খাবার খাবেন, সেটা যেন বাড়ির রান্নাঘর থেকেই আসে। বিষয়টির ওপর এখন থেকেই গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এমন খাবার খাওয়া উচিত, যা হৃদয়কে রাখবে সুস্থ, মেজাজকে সুস্থির, শরীরের জন্য তৈরি করবে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা। তবে নতুন বছরে খাওয়ার অভ্যাস বদল বা সামঞ্জস্য বিধানের পাশাপাশি যে বিষয়টি জরুরি তা হলো, সন্তুষ্টি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাওয়া একটি আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা হওয়া উচিত। স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর—দুটি বিষয় বজায় রেখেই খাওয়াকে উপভোগ্য করে তোলা সম্ভব। এ বছর খাবারে বেশ কিছু উপকরণ জনপ্রিয়তা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমের বিভিন্ন লেখা পড়ে চারটি উপকরণ তুলে ধরা হলো, যেগুলো আপনার সারা দিনের খাবারে নিয়ে আসবে বৈচিত্র্য।

খেজুর

খেজুর ব্যবহার করা হবে মিষ্টান্ন আর পানীয় তৈরিতে
ছবি: খালেদ সরকার

খেজুর শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আরব দেশের খাবার হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। তবে এটি এই বছর সুপারফুড হিসেবে সব দেশেই জনপ্রিয় হবে। মিষ্টান্ন এবং বেকড খাবারে চিনির বদলে খেজুরকে বেছে নেওয়া হবে। অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি রোগের বিরুদ্ধেও দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা এনে দেবে খেজুর। এই খাবারে থাকা খনিজ শরীরের হাড়ক্ষয় এবং রক্তাল্পতার বিরুদ্ধে ইতিবাচক কাজ করে। চিনির বিকল্প হিসেবে কফি, কেকসহ সালাদেও এর ব্যবহার বাড়বে।

স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত খাবার

স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত খাবারে পাবেন ভিন্ন স্বাদ
ছবি: নকশা

নিজের আশপাশে উৎপাদিত খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়বে। অর্থাৎ, দেশের ভেতর কিংবা নিজের বাগানের ছোট জায়গায় চাষাবাদ করে জন্মানো তাজা ফল, শাকসবজি উৎপন্ন করা এবং শস্য কেনার ওপর জোর দেওয়া হবে ২০২৩ সালে। স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্যও এটি ভালো, কৃষকদেরও চাষে উৎসাহিত করে। পরিবেশ এবং মাটির স্বাস্থ্য বজায় রাখার পাশাপাশি স্থানীয় অর্থনীতির জন্যও উৎসাহব্যঞ্জক।

উদ্ভিজ্জ আমিষ

উদ্ভিজ্জ আমিষ আমাদের দৈনন্দিন খাবারে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। উদ্ভিজ্জ আমিষসমৃদ্ধ খাবার (অবশ্যই উদ্ভিদভিত্তিক) যেমন কিনওয়া, টোফু, সয়া, লেগুম, বাদাম এবং বীজকে মাংসের পরিবর্তে বেছে নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই এ ধরনের খাবার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পাশ্চাত্যে বার্গার থেকে মাংস বিদায় করে দিয়েছেন অনেকেই। বেছে নিচ্ছেন উদ্ভিদ থেকে উৎপন্ন আমিষ। অনেক রেস্তোরাঁ এবং ক্যাফেতে মাংসের স্বাদ পাওয়া যাবে, পাশাপাশি এগুলোর উদ্ভিদ থেকে উৎপন্ন বিকল্পও নিয়ে এসেছে তারা।

তরুণ প্রজন্ম আগ্রহী হচ্ছে উদ্ভিজ্জ খাবারে
ছবি: নকশা

ফিরবে ঐতিহ্যবাহী খাদ্যাভ্যাস

দাদা-দাদি এবং বাবা-মায়ের কাছ থেকে গল্প শুনেছি, আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাবার এবং খাদ্যাভ্যাস ছিল স্বাস্থ্যকর। যুগ পার করে এখন যবের মতো শস্য ফিরে আসছে। উপবাসও যে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, প্রমাণিত হচ্ছে। স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবিলা করতে অনেকেই রান্নায় পুরোনো পদ্ধতি, আয়ুর্বেদ এবং প্রাকৃতিক চিকিৎসায় ফিরে যাচ্ছে। হলুদ ফিরে পেয়েছে হৃত গৌরব। গবেষণা বলছে, হলুদ অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে ভরপুর। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা এবং হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। গোটা শস্য এবং বাজরা অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল, সেগুলোর চাহিদাও আবার বাড়ছে। গোটা শস্য ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি রোগের বেলায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এসব খাবারে থাকা আঁশ, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান স্বাস্থ্যের জন্য পাওয়ার হাউস গড়ে তোলে।