বিশ্বখ্যাত কফি ব্র্যান্ড ‘নেসক্যাফে’

অলংকরণ: সব্যসাচী মিস্ত্রী

আহ্লাদি বৃষ্টির দিনে সুখ যেন এক পেয়ালা ধোঁয়া ওঠা মেঘ। আর এমন মন কেমন করা দিনে আড়মোড়াটা যদি হয় নেসক্যাফের ঘুমভাঙানিয়া ঘ্রাণের সঙ্গে, তাহলে তো কথাই নেই।

সময়ের প্রয়োজনে আবির্ভাব হয়েছে নতুন রূপে, নতুন স্বাদে
ছবি: নেসক্যাফে

তবে সময়ের প্রয়োজনে এর আবির্ভাব হয়েছে নতুন রূপে, নতুন স্বাদে।
ইদানীং কোল্ড কফি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর তা হবে নাই–বা কেন! প্রখর রোদে এর এক চুমুক যে শীতলতায় প্রাণ জুড়িয়ে দেয়, তা অস্বীকার করা অপরাধই বটে।

বৈচিত্র্যময় জীবনের গতি সব সময় এক রকম নয়, এতে উত্থান-পতন থাকবেই। তাই সবকিছুকে মেনে নিয়ে নতুন জীবনের আহ্বানে এগিয়ে চলার পথের পরম বন্ধু নেসক্যাফে।

একটি চমৎকার দিনের শুরু বলতেই যেন চোখে ভেসে ওঠে মগভর্তি নেসক্যাফে হাতে জীবনের জয়গানে মাতোয়ারা একদল সবুজ প্রাণ। ঘরে কিংবা বন্ধুমহলে আড্ডায় ঝড় তুলতে এর জুড়ি নেই। এমনকি করপোরেট মিটিংয়ে কফি কালচার এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সকালে পাখির গানের মতো কিংবা স্নিগ্ধ বিকেলের মতো নেসক্যাফে সব সময়ই নতুনের আহ্বান জানায়। আর এই ডাকে সাড়া দিয়ে নতুন প্রাণের জয়গানে মত্ত আজ সারা বিশ্ব, তাদের মধ্যে অনেকেই আবার হারানো জীবনে নতুন ছন্দ পেয়ে এগিয়ে চলার প্রেরণা পেয়েছে।

মগভর্তি নেসক্যাফে হাতে দিনের শুরু
ছবি: নেসক্যাফে

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নেসক্যাফে এসেছে ভিন্ন বাহারে, ভিন্ন ফ্লেভারে। হট কিংবা কোল্ড—যেভাবেই এটি পরিবেশন করা হোক না কেন, এর স্বাদের যেন কোনো তুলনা হয় না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কফির স্বাদ বিশ্লেষণে নেসক্যাফে গোল্ড, গোল্ড ডিক্যাফ, গোল্ড ক্রিমা, গোল্ড অরিজিনস, গোল্ড এক্সপ্রেসো, গোল্ড ক্যাপুচিনো, গোল্ড লাটে, গোল্ড মোকা এবং অল্টা রিকা এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। এর মধ্যে কিছুসংখ্যক আবার বাঙালির স্বাদবৈচিত্র্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

বলাই বাহুল্য, দিনের শুরুতে নেসক্যাফে ক্ল্যাসিকের প্রথম চুমুক শরীর ও মন চাঙা করে তোলে। এর রোস্টেড কফি বিনের মনভোলানো ঘ্রাণ আর অসাধারণ ফ্লেভারের জন্যই যেন এটি সবার থেকে আলাদা। আর নেসক্যাফে ক্রিমি লাটে যেন আমুদে বাঙালির স্বাদবিচারকে আরও সমৃদ্ধ করে। এর তুলার মতো মিষ্টি ছোঁয়া যেন কফির স্বাদে পূর্ণতা এনে দেয়। অনেকের আবার নেসলে কফি মেট ছাড়া চলেই না। তবে নেসক্যাফে থ্রি ইন ওয়ান যে বাজিমাত করেছে, সে কথা না মানার উপায় নেই। কারণ, এতে রয়েছে কফি, চিনি ও ক্রিমের একটা পারফেক্ট ব্যালান্স, ঠিক যেমনটি সবাই চায়।

এককালে কফি ছিল বাঙালির কাছে বিলাসিতা মাত্র, তবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এর প্রচলন ধেই ধেই করে বেড়ে চলেছে। ডিজিটাল এ যুগে এর উপকারিতার কথাও আর কারও অজানা নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, সকালবেলার কফি মস্তিষ্কের কগনিটিভ ফাংশনকে উন্নত করে। অর্থাৎ, ব্রেইনকে অ্যাকটিভ রাখতে এর সঙ্গে কারও তুলনা হয় না। বিশেষজ্ঞদের মতে, সীমিত পরিমাণ কফি ডায়াবেটিস ও কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। আজকাল সবাই ঘরে-বাইরে হরদম কফি পান করছেন ঠিকই, কিন্তু অনন্য স্বাদ ও গুণগত মান নিশ্চিতকরণে নেসক্যাফে যে সদা সর্বদাই বিশ্বস্ততার পরিচয় দিয়ে চলেছে, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।

কফি এখন প্রয়োজনীয়তার গণ্ডি পেরিয়ে ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে
ছবি: নেসক্যাফে

কফি যেন এর প্রয়োজনীয়তার গণ্ডি পেরিয়ে আজ ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিখ্যাত কফিশপ কিংবা রেস্টুরেন্টগুলোতে কফি পরিবেশনের বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়ে থাকে। তাই কফির মগে মোলায়েম ক্রিমের ওপর হার্ট কিংবা স্মাইলির মতো বিভিন্ন ঢঙের চোখধাঁধানো সব প্রতীক এঁকে দেওয়া হয়। আমাদের দেশের নামীদামি কফিশপগুলোও এর ব্যতিক্রম নয়। সেসব রেস্টুরেন্ট কিংবা কফিশপে যে আদলেই কফি পরিবেশন করা হোক না কেন, সেখানেও যে নেসক্যাফে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, সে বিষয়টি বেশ চোখে পড়ার মতো। কফিশপে আড্ডায় মশগুল বন্ধুরাও যেন অবচেতন মনে নেসক্যাফের সেই চিরচেনা ম–ম ঘ্রাণে আবিষ্ট হয়ে পড়ে। আজকাল শহরে, বিশেষ করে ঢাকার কফিশপগুলোতে সকাল ১০টা থেকে শুরু করে প্রায় রাত ১১টা পর্যন্ত সব বয়সের মানুষকে কফি খেতে খেতে আড্ডায় মেতে থাকতে দেখা যায়।

ক্লান্ত ব্যস্ত জীবনে কফি যেন প্রাণের সঞ্চার করে। এ নিয়ে গান, কবিতারও শেষ নেই। বেশ কয়েক যুগ ধরেই এর প্রচলন। আধুনিকতার সূচনালগ্ন থেকেই বইপ্রেমীদের মধ্যে কফি পানের চল বেশ লক্ষণীয় ছিল। টেবিলে গরম গরম শিঙাড়া কিংবা সমুচার সঙ্গে এক পেয়ালা ধোঁয়া ওঠা কফি যেন না হলেই নয়। আজকাল এমন অনেক কফিশপ রয়েছে, যেখানে বইপোকাদের আসর জমে, তাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো এক মগ কফি নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় পার করছেন। এ ধরনের কফিশপগুলোতে দিন দিন গ্রাহকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

কফির স্বাদ বিশ্লেষণে জনপ্রিয়তার শীর্ষে
ছবি: নেসক্যাফে

যাত্রাপথে ক্লান্তি কিংবা মাথাব্যথা দূর করার ক্ষেত্রে ইনস্ট্যান্ট কফি খুবই উপকারী। এ ক্ষেত্রে নেসক্যাফের নামই যেন ভাবনায় প্রথম আসে। অনেকে ভ্রমণ উপভোগ করার লক্ষ্যে শুকনা খাবারের পাশাপাশি ফ্লাস্কের গরম পানি এবং নেসক্যাফের ওপর ভরসা করে থাকেন।

নেসক্যাফে বরাবরই তারুণ্যকে স্বাগত জানায়। নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বানে এর যেন কোনো ক্লান্তি নেই। এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে বহুসংখ্যক তরুণ হতাশা কাটিয়ে তাজা প্রাণের উদ্যমকে আলিঙ্গন করেছে। বিভিন্ন বিজ্ঞাপন বা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে এটি তরুণ প্রজন্মকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে।

হার্ডকোর কফিভক্তদের প্রিয় নাম নেসক্যাফে, যা বছরের পর বছর তরুণ মনে রাজত্ব করে আসছে। শীত–গ্রীষ্ম–বর্ষায় প্রাণের আড্ডায় কিংবা মন খারাপের দিনে এটি হতে পারে সঙ্গী। প্রাণের সঞ্চারক এ পরম বন্ধুর জয়ের পথে যাত্রা শুভ হোক, নতুনের হাত ধরে জীবনের আহ্বানে এগিয়ে চলার পথে প্রেরণা হয়ে থাকুক সবার মনে। কোটি তরুণের হৃদয়ে কাঁপন তোলা কফি হাউসের সেই প্রাণের আড্ডা চলতে থাকুক যুগ যুগ।