ভিয়েতনামের বিয়ে ও বউভাতের খাবার

ভিয়েতনামে যাঁরা অর্থনৈতিকভাবে ভালো অবস্থায় থাকেন, তাঁরা বিয়ের সময় নতুন গাড়ি কেনেনছবি: দিয়েন ফু নুয়ান, ভিয়েতনাম

প্রিয় বন্ধু দ ফুক উংয়ের বিয়ে উপলক্ষে ভিয়েতনাম যেতে হলো। রাজধানী হ্যানয়ের নই বেই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে বাইরে এসে দেখি বন্ধু ও তাঁর হবু বউ এনগেই থা ফুলের তোড়া নিয়ে আমাকে রিসিভ করতে এসেছেন। গাড়িতে ওঠার পর রাম্বুটান ও ড্রাগন ফলের মিশ্রণ এবং বন্ধুর বাড়িতে বানানো কলা ও বাদামের পিঠা খেলাম। বন্ধুর বাসা ডং আনে যাওয়ার পথটা ছিল বেশ সুন্দর। গাড়ির জানালা দিয়ে শহরের সাজানো–গোছানো বড় বড় দালানকোঠা, প্রশস্ত পথঘাট, ফুটপাত, গাছপালা, বিভিন্ন মানুষের সমারোহ দেখে মোহাবিষ্ট হচ্ছি আর তাঁদের সঙ্গে গল্প করছি। গল্পচ্ছলেই উঠে এল ভিয়েতনামের বিয়েসংক্রান্ত বিষয়গুলো।

বর ও কনে
ছবি: দিয়েন ফু নুয়ান, ভিয়েতনাম

বন্ধু ও তাঁর হবু বউয়ের কাছে জানতে পারলাম কনফুসিয়ান ও বৌদ্ধ মতাদর্শের প্রভাবযুক্ত ভিয়েতনামের বিবাহ ভিয়েতনামের সংস্কৃতির একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি শুধুমাত্র দম্পতির জন্যই নয় বরং উভয় পরিবারের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। তাই এটি বেশ কয়েকটি আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে পালন করা হয়। ভিয়েতনামে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে বিয়ের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা ও পদ্ধতি পালন করা হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরো বিয়ের অনুষ্ঠান তিনটি প্রধান ভাগে বিভক্ত।

১. লে আন হোই (কনে দেখার অনুষ্ঠান)

সাধারণত বর ও কনে বা তাঁদের মা–বাবা কোন তারিখ এবং সময় দেখা করার জন্য সবচেয়ে ভালো, তা জানার জন্য ভাগ্যগণনাকারী পুরোহিতের কাছে যান। তাঁরা এই তারিখ ও সময়কে দৃঢ়ভাবে মেনে চলেন, তাই ওই দিন বরের পরিবার ও স্বজনদের সময়মতো আসতে হয়। কনে দেখার দিন বরপক্ষ কনে ও তাঁর পরিবারের জন্য উপহার হিসেবে গোলাকার বার্নিশ করা বাক্স নিয়ে আসে। এতে বিভিন্ন বাদাম, সুপারি, পানপাতা, চা, কেক, ফল, ওয়াইন ও অন্যান্য সুস্বাদু খাদ্য থাকে। এই বাক্স লাল কাপড়ে ঢাকা থাকে এবং বরের পরিবারের অবিবাহিত মেয়ে বা ছেলেরা বহন করে। লাল কাপড়কে ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে দেওয়া হয়। কনেপক্ষ বরের দেওয়া এই উপহার গ্রহণ করলে এবং বিয়ের পাকা কথা হলে বর ও তাঁর পরিবারের জন্য গোলাপি কাপড়ে মোড়া নানা রকম উপহার দিয়ে থাকে।

ফুল ভিয়েতনামের মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ
ছবি: দিয়েন ফু নুয়ান, ভিয়েতনাম

২. দাম হোই (বাগদান অনুষ্ঠান)

বিয়ের আগে কনের বাড়িতে দাম হই নামের একটি বাগদান অনুষ্ঠান হয়। কনের পরিবার নিজের পরিবারের দূরে ও কাছে বসবাসকারী সদস্য এবং বরের বাড়ির সদস্যদের বাগদানের অনুষ্ঠানে বিশেষ ভোজে আমন্ত্রণ জানায়। বিশেষ করে কনের বাড়ি থেকে দূরের শহর বা গ্রামে বসবাসকারী সদস্যদের অবশ্যই আনার চেষ্টা করা হয়, যাতে তারা একবারে এই অনুষ্ঠানেই তাদের মতামত রাখতে পারে এবং বর-কনেকে আশীর্বাদ করে যেতে পারে। বাগদানের সময় বর ও কনে ধর্মযাজক বা পুরোহিত ও আত্মীয়স্বজনের সামনেই একে অন্যকে অর্থনৈতিক সক্ষমতা অনুসারে হিরে বা রুপার আংটি এবং গাঢ় লাল-সাদা গোলাপ বা পদ্মফুলের তোড়া দিয়ে থাকে গভীর ভালোবাসা ও পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে।

ভিয়েতনামের মানুষদের জীবনের পরতে পরতে ফুল জড়িয়ে আছে
ছবি: দিয়েন ফু নুয়ান, ভিয়েতনাম

৩. লে কুয়াই (বিয়ে অনুষ্ঠান)

ভিয়েতনামের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের মতোই বিয়ের তারিখ ভাগ্যবান ব্যক্তি দ্বারা নির্ধারিত হয় এবং চেষ্টা করা হয় কোনো একটা পবিত্র দিন বা ছুটির দিনে আয়োজনের। বিয়ের দিনও বরের পরিবার এবং আত্মীয়স্বজন কনের বাড়িতে লাল কাপড়ে মোড়ানো প্রচুর উপহার নিয়ে আসে। এই উপহারগুলো কনে দেখা ও বাগদানের মতোই হয়, তবে পরিমাণে অনেক বেশি থাকে। যাঁরা পারিবারিক জীবনে সুখী বিবাহিত দম্পতি, তাঁরাই সাধারণত এই উপহারগুলো বহন করেন। বিয়ের অনুষ্ঠানের দিন কেক কাটা হয়, কনফেত্তি ও স্পার্কলিং লাইট জ্বালানো হয়। এগুলো বর ও কনের মায়েদের তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে। বর ও কনে উভয়ই তাঁদের পিতামাতাদের পাশাপাশি হেঁটে প্যাগোডায় গিয়ে থাকেন।

দ ফুকের বিয়ের অনুষ্ঠানের দিন খুব সকালে সম্মানিত অতিথিদের একজন হয়ে গোলাপ ও পদ্মপাপড়ি ভেজানো জল দিয়ে স্নান সেরে নতুন পোশাক পরে খালি পেটেই প্যাগোডায় গেলাম। বরের পাশাপাশি কনেও খুব সুন্দর ফুল, পাতার এমব্রয়ডারি করা ও প্লাস্টিকের মুক্তো দিয়ে সাজানো গোলাপি-লাল রঙের ভিয়েতনামের ঐতিহ্যবাহী বিয়ের পোশাক ‘আউ দাইয়ে’ সজ্জিত হয়ে এল। বর ও কনের আত্মীয়স্বজনের সবাই বেশ পরিপাটি ও উজ্জ্বল রঙের কাপড় পরে এসেছে। সূর্যের আলো পড়ে সবার পোশাকগুলো দ্যুতিময় হয়ে উঠেছিল।

ভিয়েতনামের মানুষেরা বিশ্বাস করে, যাঁর বিয়ের পোশাক ও আয়োজন যত বেশি রঙিন হবে, তাঁর জীবনও তত সুন্দর ও রঙিন হবে
ছবি: দিয়েন ফু নুয়ান, ভিয়েতনাম

ভিয়েতনামের মানুষেরা বিশ্বাস করে, যাঁর বিয়ের পোশাক ও আয়োজন যত বেশি রঙিন হবে, তাঁর জীবনও তত সুন্দর ও রঙিন হবে। প্যাগোডার পুরোহিত নানা মন্ত্র পাঠ করিয়ে, মোমবাতি ও আগরবাতি জ্বালিয়ে এবং পবিত্র জল পান করিয়ে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করলেন। বর ও কনে ভিয়েতনামের বিয়ের ঐতিহ্যবাহী টুপি ‘খান ডং’ একে অন্যকে বিনিময় করে এবং গালে আলতো করে চুমু খেয়ে মা–বাবা, বয়োজ্যেষ্ঠ ও পুরোহিতের কাছে হাতজোড় করে প্রণাম করে বিয়ে উপলক্ষে কেনা নতুন মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়িতে উঠে পার্টি সেন্টারের উদ্দেশে রওনা হলো।

ফুল দিয়ে সাজানো ডাইনিং হল
ছবি: দিয়েন ফু নুয়ান, ভিয়েতনাম

ভিয়েতনামে যাঁরা অর্থনৈতিকভাবে ভালো অবস্থায় থাকেন, তাঁরা বিয়ের সময় নতুন গাড়ি কেনেন। যাঁদের অর্থনৈতিক অবস্থা অপেক্ষাকৃত দুর্বল, তাঁরা ভালো ব্রান্ডের গাড়ি ভাড়া করেন। এতে নাকি বর ও কনের নতুন সংসার জীবনে ভালো কিছু করার এবং মনকে বড় করার উদ্দীপনা তৈরি হয়।

যা হোক, বরের বিশেষ বন্ধু হয়ে তাঁদের সঙ্গেই মধ্যাহ্নভোজ ও বাকি আনুষ্ঠানিকতার জন্য পার্টিসেন্টারে গেলাম। গিয়ে তো চোখ ছানাবড়া! এত দেখি ফুলের সুবাসিত রাজ্য! পুরো সেন্টারটাই যেন নানা রকম ফুলে ফুলে সেজে উঠেছে। কোথাও গোলাপ, কোথাও অর্কিড, কোথাও গ্লাডিওলাস, কোথাও নাম না জানা অসম্ভব সুন্দর ফুল, আবার কোথাও ভিয়েতনামের জীবনে পবিত্রতার প্রতীক পদ্ম ফুল। এসব ফুলের সঙ্গে নানা রঙের আলোর খেলা যেন পুরো পার্টি সেন্টারটাকেই অন্য রকম আবহ দিচ্ছিল। মেঝেতে লাল মখমলের কার্পেট, টেবিলে টেবিলে মোমবাতির আলো, লাল-সাদা গোলাপ ফুলের তোড়া আর ভেসে আসা মিষ্টি সংগীতের মূর্ছনা যেন শান্তিময় জীবনের শুরুর আবহ ছড়িয়ে যাচ্ছিল।

বর ও কনের জন্য উপহারের ঝুরি
ছবি: দিয়েন ফু নুয়ান, ভিয়েতনাম

বন্ধু তাঁর বউকে নিয়ে ফটোসেশনে ব্যস্ত হতেই আমি চারপাশ ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম। সকালের প্যাগোডার মতো আমন্ত্রিত সবাই বেশ ঝলমলে কারুকাজ করা পোশাক পরে এসেছে। সবার হাতেই বেশ সাজানো–গোছানো ঝুড়ি—তাতে বর ও কনের জন্য নানা উপহার। কেউ এনেছেন ফল, কেউ এনেছেন গৃহস্থালি সামগ্রী, কেউ এনেছেন পোশাক, কেউ এনেছেন হানিমুনে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার জন্য প্যাকেজ এবং এয়ারক্রাফটের টিকিট। সবার ঝুড়িই বেশ সুন্দর করে ফুল দিয়ে সাজানো এবং গোলাপি বা লাল কাপড় দিয়ে অর্ধেক ঢেকে রাখা। ভিয়েতনামের মানুষ ফুল এতটাই ভালোবাসে যে তাদের জীবনের পরতে পরতে ফুল জড়িয়ে আছে।

সবাই সবার মতো করে উপহার এনেছেন। তবে কাউকে ভিয়েতনামের মুদ্রা (ডং) উপহার হিসেবে দিতে দেখলাম না। বিয়ের অনুষ্ঠানে সরাসরি অর্থ উপহারকে ভিয়েতনামে বেশ অসম্মানের চোখে দেখা হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানের মূল গেট ও ভেতরের নানা জায়গায় যে ছোট ছোট গেট করা হয়েছিল, সেখানে ফুলের কারুকাজের পাশাপাশি বেশ কিছু ড্রাগনের প্রতীক চোখে পড়ল। চীনাদের মতো ভিয়েতানামীরাও ড্রাগনকে তাদের সৌভাগ্য, সমৃদ্ধি, ক্ষমতার উৎস বলে বিশ্বাস করে।

বিয়ের অনুষ্ঠানের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার
ছবি: দিয়েন ফু নুয়ান, ভিয়েতনাম

এদিকে সকাল থেকে কিছু না খেয়ে পেটে ততক্ষণে ক্ষুধা জেঁকে বসেছে। ক্ষুধা পেটে এদিক-ওদিক হাঁটছি আর অনুষ্ঠানের নানা রূপ-রস উপভোগ করছি। স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে সবাই বিয়ের ভোজের জন্য লাইন ধরে পরিপাটি সাজিয়ে রাখা টেবিলে বসলাম। টেবিলের প্রতিটি খাবারকে নতুন বর–বধূর সুখ, সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ শুভেচ্ছা স্মারক বলা যায়। ক্ষুধা পেটে হাপুসহুপুস করে যা খেয়েছিলাম, তার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী কিছু খাবারের কথা না বললেই নয়।

নিম বা চা জিও। একধরনের মচমচে স্প্রিং রোল
ছবি: দিয়েন ফু নুয়ান, ভিয়েতনাম

নিম বা চা জিও (একধরনের মচমচে স্প্রিং রোল)

এটি ভিয়েতনামের প্রায় প্রতিটি বিয়ের অনুষ্ঠানের জনপ্রিয় খাবার। এর প্রধান উপকরণগুলোর মধ্যে থাকে মেরিনেট করা মুরগি বা মহিষের মাংস, চালের গুঁড়া, বাদাম, কিশমিশ, নারিকেল কোরানো, মাশরুম, ডিম, শর্ষ্যে ফুলের রেণু, শিমের স্প্রাউট ইত্যাদি। সব উপাদান ভালোভাবে স্থানীয় মসলা দিয়ে মেশানো হয় এবং তারপর চালের আটা দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হয়। মচমচে ভাব আনার জন্য উত্তপ্ত প্যানে ডুবো তেল বা ঘিয়ে ভাজা হয়। ‘নিম’ বা ‘চা জিও’ রোলগুলো জিবে জল নিয়ে আসার মতো আকর্ষণীয়। এটি খাবারের মূল পর্ব শুরু করার আগে পরিবেশন করা হয়। এর সঙ্গে থাকে মাখন, বিভিন্ন বাদাম, টমেটো ও তেঁতুলের সস। এই রোল স্বামী-স্ত্রীর বিবাহিত জীবনের টক-ঝাল-মিষ্টি সম্পর্কের স্বাদকে উপস্থাপন করে বলে ভিয়েতনামের অধিবাসীরা মনে করেন।

জোই গ্যাক (গ্যাক ফল দিয়ে রান্না করা একধরনের আঠাল ভাত)

ডাইনিং হলে সাজানো বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে জোই গ্যাক
ছবি: দিয়েন ফু নুয়ান, ভিয়েতনাম

এ ভাতের সাধারণ রং লাল। এই রং সুখের প্রতীক। লাল রংটি প্রাকৃতিকভাবে ‘গ্যাক’ ফল থেকে আসে। এই খাবারে নতুন চালের আঠালো ভাতের সুঘ্রাণের পাশাপাশি ‘গ্যাক’ ফলের সুগন্ধযুক্ত ও আঠালো স্বাদ রয়েছে। এর সঙ্গে দেওয়া হয় সবুজ শিম ও চিংড়ির পেস্ট। ভিয়েতনামের বিশ্বাস অনুসারে, জোই গ্যাক ছন্দময় সুন্দর বিয়ের অর্থ বহন করে। এই ধরনের স্টিকি ভাত পুরো ভিয়েতনামজুড়ে বিয়ের খাবারের টেবিলের পাশাপাশি স্থানীয় উৎসব ও নববর্ষেও তুমুল জনপ্রিয়।

গা লুওক (সেদ্ধ মুরগি)

সেদ্ধ মুরগি সম্পদ এবং সুখের প্রতীক হতে পারে বলে বিশ্বাস করে ভিয়েতনামের মানুষেরা
ছবি: দিয়েন ফু নুয়ান, ভিয়েতনাম

ভিয়েতনামের প্রাচীন মানুষেরা বিশ্বাস করত যে, সেদ্ধ মুরগি সম্পদ এবং সুখের প্রতীক হতে পারে। সুতরাং ভিয়েতনামের ঐতিহ্যবাহী বিয়ের মেনুগুলোতে এই খাবার অপরিহার্য উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়েছে সুদীর্ঘ সময় ধরে। এ ছাড়া তারা বিশ্বাস করে, সেদ্ধ মুরগি বিয়ের ক্ষেত্রে শান্তি বয়ে আনে। আজকাল অবশ্য সেদ্ধ মুরগির সঙ্গে অন্যান্য সংস্করণ, যেমন গ্রিলিং বা বারবিকিউ বা স্টিমিং তৈরি করা হয়। তবে রান্নার কৌশল যাই হোক না কেন, মুরগি ভিয়েতনামে বিবাহের টেবিলে একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য।

গিও চা (একধরনের সসেজ)

এটি মূলত গৃহপালিত প্রাণীর পাকস্থলীকে বিশেষ পদ্ধতিতে প্রক্রিয়া করে তৈরি করা হয়। খাবার ডেকোরেশনের ট্রেগুলোতে গিও চা-এর টুকরোগুলোকে ৮–১০টি তারা আকারে ভাগ করা হয়, যার অর্থ ভাগ্য। একে অপরের কাছাকাছি সসেজের টুকরোগুলোর বিন্যাস বিবাহিত জীবন, আনুগত্য ও সাদৃশ্যকে স্মরণ করিয়ে দেয়, যা নতুন কনে ও বর সম্মান করেন।

থিট খো তাউ (ক্যারামেলাইজড মাংস এবং ডিম বা হালকা সসের মধ্যে ডিমযুক্ত মাংস)

এটি ভিয়েতনামের ঐতিহ্যবাহী বিয়ের খাবার, যেখানে মেরিনেটেড মাংস ও সেদ্ধ ডিম নারকেলের রসে ডুবানো থাকে। আসলে থিট খো তাউ মানে হলো জনপ্রিয় থালা। এই খাবারকে নব বিবাহিত দম্পতির জীবনের ভালোবাসা ও সুখের প্রতীক বলে মনে করা হয়।