মাছের দুটি পদ

ছবি: প্রথম আলো

মাছ বাঙালির বরাবরের প্রিয়। কি শীত কি গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা, বাঙালির পাতে মাছ যে সানন্দে উপস্থিত থাকবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর এখন মধ্যহেমন্তে পানি কমতে শুরু করেছে খালে–বিলে। দেশি মাছে বেশ আমদানি তাই। বিশেষত জিয়ল মাছের। এই সময়ে গরম ভাতের সঙ্গে বড় দেশি কইয়ের পাতুরি কিন্তু দারুণ জমবে। কিংবা দই রুই। আহা! ছেলে–বুড়ো সবাই সবকিছু ফেলে চেটেপুটে খাবে। আমরাও না হয় শীতের সূচনায় জেনে নিই দুটি মজাদার পদের আদ্যোপান্ত। রেসিপি দিয়েছেন ফাতিমা আজিজ

কই পাতুরি

কই পাতুরি
ছবি: প্রথম আলো

উপকরণ
বড় কই মাছ (সম্ভব হলে ডিমসহ) ৫টি, হলুদগুঁড়া ৫ চা-চামচ, নারকেল কোরা ১ কাপ (বেটে নেওয়া), শর্ষের তেল সিকি কাপ ও ১ টেবিল চামচ, দুটি লাল পাকা মরিচ দিয়ে সাদা শর্ষেবাটা ১ টেবিল চামচ, টক দই ৫ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ টেবিল চামচ, লবণ ১ চা-চামচ বা স্বাদ অনুযায়ী, চিনি ২ চা-চামচ বা স্বাদ অনুযায়ী, কলাপাতা ২টি, টমেটোবাটা ৫ কাপ, চেরা কাঁচা মরিচ ৪টি, লাল মরিচের গুঁড়া অথবা শুকনা মরিচের গুঁড়া ৫ চা-চামচ।

প্রণালি
বাটিতে টক দই, লাল পাকা মরিচ দিয়ে শর্ষেবাটা, কাঁচা মরিচবাটা, টমেটোবাটা, নারকেলবাটা, হলুদ ও মরিচের গুঁড়া, লবণ, চিনি ও সিকি কাপ সরিষার তেল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন।

ট্রে অথবা ডিশে মাছ সাজিয়ে তার ওপর তৈরি করা মিশ্রণ ঢেলে দিন ও তা মাছের দুই পিঠেই ভালো করে মাখিয়ে তিন-চার ঘণ্টা ফ্রিজারে রেখে দিন।

ফ্রাইপ্যানে সামান্য শর্ষের তেল (১ চা-চামচ) মেখে তার ওপর একটি কলাপাতার অর্ধেককে দুই টুকরা করে বিছিয়ে দিন। একটি একটি করে কই মাছ তাতে সাজিয়ে ডিশে বা ট্রেতে লেগে থাকা মিশ্রণ ওপর থেকে দিয়ে দিন, যেন মাছগুলো ঢেকে যায়। এতে চেরা কাঁচা মরিচ দিয়ে বাকি অর্ধেক কলাপাতাকে দুই টুকরা করে ঢেকে দিন। চুলার আঁচ মাঝারি রেখে ৩০–৪০ মিনিট রাখুন। তারপর ঢেকে দেওয়া কলাপাতা তুলে নিয়ে ১ টেবিল চামচ শর্ষের তেল দিয়ে একটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে চুলা বন্ধ করে দিন।
পরিবেশন ডিশে মাপমতো কলাপাতা বিছিয়ে পাঁচ মিনিট পর চুলা থেকে নামিয়ে মাছগুলো সাবধানে তাতে তুলে নিয়ে গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

নারকেল রুই

নারকেল রুই
ছবি: প্রথম আলো

উপকরণ
রুই মাছের টুকরা গাদা ও পেটি একত্রে ৮টি (৭০০ গ্রাম), জিরা (ভেজে গুঁড়া করা) ১ চা-চামচ, ধনেগুঁড়া ৫ চা-চামচ, আদাবাটা দেড় চা-চামচ, রসুনবাটা ৫ চা-চামচ, টমেটোবাটা ১ কাপ, নারকেল কোরা ৫ কাপের একটু বেশি, লবণ স্বাদ অনুযায়ী, পেঁয়াজকুচি ২ চা-চামচ, সয়াবিন তেল ৫ কাপ, তেঁতুলের ক্বাথ ৫ কাপ, চেরা কাঁচা মরিচ ৪টি, শুকনা মরিচের গুঁড়া ৫ চা-চামচ।

মসলা পেস্টের জন্য
নারকেল কোরা ১ কাপ, শুকনা মরিচ (মাঝারি) ৪টি, গোটা গোলমরিচ ১৬টি, পেঁয়াজকুচি সিকি কাপ, একত্রে পাটায় পিষে নিন অথবা গ্রাইন্ডারে গ্রাইন্ড করে নিন।

প্রণালি
রুই মাছের টুকরাগুলোয় ৫ চা-চামচ লবণ মেখে ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন।
বাটিতে আদাবাটা, রসুনবাটা, শুকনা মরিচ বা লাল মরিচের গুঁড়া ধনেগুঁড়া ও জিরার গুঁড়া দিয়ে মাছগুলোকে মেখে দুই-তিন ঘণ্টা মেরিনেট করে রাখুন। ফ্রাইপ্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজকুচি দিয়ে বাদামি করে ভেজে টমেটোবাটা দিয়ে কিছুক্ষণ নাড়ুন। তারপর তৈরি করা মসলার পেস্ট দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন। একটু একটু করে পানি দিয়ে কষাবেন।

মসলা কষানো হলে তেল মসলা থেকে ছেড়ে দিলে নারকেল কোরা দিয়ে কিছুক্ষণ নেড়ে সামান্য পানি দিয়ে কষিয়ে তেঁতুলের ক্বাথ দিয়ে লবণ ও চিনি দিয়ে নাড়ুন। আঁচ কমিয়ে ঢেকে রাখুন কিছুক্ষণ। ১০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে মেরিনেট করা মাছের টুকরাগুলো দিয়ে পাঁচ মিনিট পর সাবধানে উল্টে দিন। এবারে যেই বোলে মাছ মেরিনেট করা হয়েছিল, তাতে সিকি কাপ পানি ঢেলে ধুয়ে মাছের ওপর দিয়ে হালকা নেড়ে ঢেকে দিন। কিছুক্ষণ পর ঢাকনা খুলে চেরা কাঁচা মরিচ ও ১ টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি ওপর থেকে ছিটিয়ে ঢেকে চুলা বন্ধ করে দিন। ৫–১০ মিনিট পর ডিশে বেড়ে গরম গরম ভাত বা রুটির সঙ্গে পরিবেশন করুন।