সিদ্দীকা কবীরের ৮টি টিপস ও দুটি রেসিপি

আজ রন্ধনশিল্পী সিদ্দিকা কবীরের দশম প্রয়াণবার্ষিকী। রন্ধনবিষয়ক তাঁর লেখা বইগুলোর জন্যই তিনি বেশি খ্যাত। রেসিপি নিয়ে তাঁর লেখা রান্না, খাদ্য, পুষ্টি বইটি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রীত রান্নার বইগুলোর মধ্যে অন্যতম। ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারি রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি মারা যান।

সিদ্দীকা কবীরের প্রয়াণদিবসে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নকশার পাঠকদের জন্য তাঁর কিছু রান্নার টিপস দেওয়া হলো। নকশায় বিভিন্ন সময় তাঁর রেসিপি ছাপা হয়েছে। সেখান থেকেই দুটি রেসিপিও আবার দেওয়া হলো।

সিদ্দীকা কবীর তাঁর রন্ধনবিষয়ক লেখা বইগুলোর জন্যই বেশি খ্যাত ছিলেন
ছবি: কবির হোসেন
  • অন্য রান্নায় উপাদানগুলো অনুমান করে দেওয়া যায়। কিন্তু বেকিং করতে চাইলে সেসব উপাদান সঠিক পরিমাণে দিতে হবে। না হলে খাবারটি ভালোভাবে তৈরি হবে না।

  • পোলাও রান্নার সময় দুই থেকে তিনবার বলক ওঠার পর ১৮ থেকে ২০ মিনিট ঢেকে রাখলেই পোলাও হয়ে যাবে।

  • শাকসবজি কাটার আগেই ধুতে হবে।

  • সবজি সেদ্ধ করতে চাইলে অল্প পানিতে করা উচিত। যতটুকু সময় প্রয়োজন, ততটুকুই দিন। বেশিক্ষণ ধরে জ্বাল দিলে খাবারের রং ও ভিটামিন নষ্ট হতে পারে।

  • খাবার ঢেকে রান্না করা দরকার। হাঁড়ির মুখ খোলা থাকলে বাষ্পের সঙ্গে ভিটামিনও বেরিয়ে যায়।

  • কোনো রান্নায় লবণ বেশি হয়ে গেলে আলু কেটে দিতে পারেন।

  • মাছ ও মাংসে তাড়াতাড়িই পচন ধরে। তাই কিনে আনার পরপরই রান্না করতে না পারলে প্যাকেটে মুড়িয়ে ফ্রিজে রেখে দেওয়া দরকার।

  • বাসায় অতিথি এলে নিরীক্ষাধর্মী নতুন রান্না না করাই ভালো। যেটা ভালো পারেন, সেটাই করুন।

সিদ্দীকা কবীরের রেসিপি

মটরশুঁটি পোলাও
ছবি : খালেদ সরকার

উপকরণ: পোলাও চাল ৮ কাপ, মটরশুঁটি ২ কাপ, গাজর (ছোট মিহি কুচি) আধা কাপ, পেঁয়াজ স্লাইস আধা কাপ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, আদা বাটা ৪ চা-চামচ, ঘি অথবা তেল ১ কাপ, টক দই আধা কাপ, দারুচিনি (২ সেন্টিমিটার) ৪ টুকরা, এলাচ ৮টি, ফুটানো গরম পানি ১৪ কাপ, লবণ ৩ টেবিল চামচ অথবা স্বাদ অনুযায়ী।

প্রণালি: হাঁড়িতে ঘি বা তেল গরম করে পেঁয়াজ বেরেস্তা করে ঘি অথবা তেল ছেঁকে তুলে কিচেন পেপারে রাখুন। একই তেল বা ঘিয়ে তেজপাতা ও গরম মসলার ফোড়ন দিয়ে আদা বাটা ও পেঁয়াজ বাটা দিয়ে ভালো করে কষিয়ে ফুটানো গরম পানি দিয়ে নেড়ে দিন। পানি ফুটে উঠলে চাল ও লবণ দিয়ে নাড়ুন। ফুটে উঠলে মটরশুঁটি ও টক দই ফেটে দিন (মটরশুঁটি খুব কচি হলে ১০ মিনিট পরে দেবেন)। তারপর ঝুরি করা মিহি গাজর ছিটিয়ে দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন। মৃদু আঁচে ঢাকনা না খুলে ২০ থেকে ২২ মিনিট রান্না করুন। এবার ঢাকনা খুলে কাঁচা মরিচ ও অর্ধেক বেরেস্তা ছিটিয়ে দিয়ে পোলাও দু-একবার আলতোভাবে নেড়ে ঢেকে দিন। চুলা থেকে নামিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে বাকি বেরেস্তা ছিটিয়ে গরম-গরম পরিবেশন করুন।

চিতল মাছের কোফতা কারি
ছবি : খালেদ সরকার

উপকরণ: (কোফতার জন্য) মাছ বাটা ১ কাপ, ভাত বাটা আধা কাপ, কাঁচা মরিচ বাটা আধা চা-চামচ, আদা বাটা আধা চা-চামচ, রসুন বাটা আধা চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, ধনে গুঁড়া আধা চা-চামচ, জিরা বাটা অথবা গুঁড়া আধা চা-চামচ, গরম মসলা বাটা এক চামচের চার ভাগের এক ভাগ, ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ, লবণ আধা টেবিল চামচ বা স্বাদমতো, তেল ভাজার জন্য।

প্রণালি: চিতল মাছের পিঠের অংশ আলাদা করে চামড়া ও কাটা ছাড়িয়ে মাছ বেটে নিন। মাছ বাটার সময় লবণ ও ভাত মিশিয়ে বাটুন। এবার মাছের মিশ্রণে তেল বাদে অন্য সব উপকরণ একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে ১০টি সমান ভাগ করুন। হাতের তালুতে সামান্য তেল মেখে একেকটি ভাগ নিয়ে গোল করে কোফতা তৈরি করুন। কড়াইয়ে তেল গরম করে ডুবো তেলে সোনালি করে ভেজে তুলুন।