মনের বাক্স
আজ আমার কান্নাটা শুধু তার জন্য
পাঠকের সুখ–দুঃখ, হাসি–আনন্দ, পছন্দ, ভালোলাগা, ভালোবাসাসহ যে কোনো না বলা কথা শুনতে চায় মনের বাক্স। প্রতি সপ্তাহে পাঠকের পাঠানো সেসব লেখা থেকে নির্বাচিত কিছু লেখা আজ প্রকাশিত হলো এখানে
প্রিয়তমা আকাশলীনা
আমার স্বপ্নের ক্যানভাসে একদিন হয়তো এই পৃথিবী নিস্তব্ধ হয়ে যাবে। থাকবে না আজকের মতো কোলাহল, পৃথিবীটা থমকে যাবে, পৃথিবীর রং হবে ধূসর। সেই দিন হয়তো আপনাকে নীল শাড়িতে দেখতে চাওয়ার অনুভূতিটা আরও তীব্র হবে। আমি চাইলেও হয়তো সেই ভোঁতা অনুভূতিটা প্রকাশ করার জন্য আপনাকে আমার পাশে পাব না। আপনি আপনার অভিমান আর ক্রোধ নিয়ে আমাকে দূরে ঠেলে দেবেন। তারপর কেটে যাবে কয়েকটা মাস কিংবা কয়েকটা বছর। আমি আপনাকে মনে না রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করব, কিন্তু তবু কোনো একদিন রাস্তার পাশে কিংবা পার্কের বেঞ্চে নীল শাড়ি পরে কোনো এক আকাশলীনাকে দেখে আচমকা আপনাকে মনে পড়ে যাবে। এভাবে আমার অনিশ্চিত জীবনে কাটতে থাকবে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর। আর আমার বুকের বাঁ পাশটা ভরে উঠবে অদ্ভুত এক দীর্ঘশ্বাসে।
রাসেল, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা
আপনাকেই বলছি
এই যে শুনছেন! হ্যাঁ, প্রিয়তমা আপনাকেই বলছি। আমার খুব একা একা লাগছে। কারও সঙ্গে একটু কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে, কিন্তু কেউ নেই কথা বলার মতো। তেমন কোনো বন্ধুবান্ধব নেই, নেই কোনো কাজিনও। আপনি থাকলে ভালো হতো। আপনার দিকে তাকিয়ে থাকতাম একপলকে। আমার সঙ্গে একটু কথা বলার মতো সময় দিতে পারবেন তো? আমার কিছু ভালো লাগছে না। আপনাকে মিস করছি...অনেক!
সাদ হোসাইন, মেখল মাদ্রাসা
একবার কাছে আয় সখী
প্রিয় সখী,
গোটা একটা দিন গেল, সঙ্গে গোটা একটা রাইত। যেতে যেতে কাত্তিকের গোটা মাসটাও গেল, তবু তোর দেখা পাওয়া গেল না। পুকুরধারের জোড়া আমগাছ তলাটায় মাঝেমধ্যেই যাই, কিন্তু চৌতলার বাত্তিটা জ্বলে না। বেঁচে আছি এক প্রকার বলাই যায়। যদি শুধাস কখনো যে ‘কেমন আছিস?’ উত্তরটা হবে ঠিক, ‘বোবা চোখ আর ঠোঁটখানা যেমন নিষ্পলক ও নিশ্চুপ থাকে, তেমন ভালোই আছি।’ আসলে ভালো নেই কেউই। জোর করে ভালো আছি বলতে গেলে চোখ দুখানা থেকে অশ্রু কাজলাদিঘির টলটলা পানির মতো আছড়ে পড়তে চায়। কাত্তিকের রাইতগুলা মেলা বড়। জোছনার কাছে ঠাঁই পাই না, তোর ডাকও আসে না। আমি জানি, তুই এখন একাকিত্বের নীল বিষাদে ঠিকই দুঃখবিলাস করিস। তোর গাঢ় নীল বিষাদের দিনে একটিবারের জন্য দেখা দিয়ে যাস। করুণা করে হলেও একটিবার কাছে আসিস।
ইতি তোর সখা
আমার একটাই অপূর্ণতা
মাঝেমধ্যে ভাবি, একা একটা ঘর, কবরের মতো অন্ধকার। গায়ে ছেঁড়া শাল পরে জীবনানন্দের একটা কবিতার বই বুকে জড়িয়ে আমি হু হু করে কাঁদছি। আমার কোনো দুঃখ নেই, কোনো আকাঙ্ক্ষা নেই, আমার একটা অপূর্ণতা আছে। আমি তাকে কিছুতেই আমার করে পাইনি। আমার ভীষণ একলা লাগার ক্ষণে আমি প্রাণ খুলে হেসেছি বহুদিন। কিন্তু আজ আমার কান্নাটা শুধু তার জন্য। সে আমার না, সে অন্য কারও। আমার জীবনের আকুলতা মুগ্ধ করেনি তাকে। সে আমাকে ভালোবাসেনি।
মোহনা মাহি, ডুয়েট, গাজীপুর
ভালো থাকবেন
প্রিয় আঁখি মিস, আপনার সঙ্গে যোগাযোগের দুই বছরের মধ্যে আপনাকে বিদায় বলতে হচ্ছে। এটা একদিকে যেমন আনন্দের, অন্যদিকে বিষাদের। বিদেশযাত্রা যেমন হয় আরকি! আপনি বলতেন, ‘আনন্দের সঙ্গে বিষাদ না থাকলে তা আর আনন্দ হয় না।’ হয়তো তা-ই। আমাদের সবার এই দুই বছরে খুব সুন্দর কিছু মুহূর্ত কেটেছে, যা চাইলেও ভোলা যাবে না। চাকরিজীবনে আপনাদের মতো সহকর্মী পাওয়া সত্যিই সৌভাগ্যের। আপনার মতো স্পষ্টবাদী মানুষ হয়তো অনেক আছে, তবে আমার এই গণ্ডিবদ্ধ জীবনে আমি তাদের দেখা পাইনি। তাই আপনি আমার কাছে একটা বিস্ময়। মানুষকে ভালোবাসা ও আপন করে নেওয়ার ক্ষমতা আপনার সহজাত। জীবনে অনেক চড়াই-উতরাই গেছে, তবু আপনি ভেঙে পড়েননি। আশা করি আপনার প্রবাসজীবন আপনাকে আরও নতুন নতুন অভিজ্ঞতায় পূর্ণ করে তুলবে।
নিপা, নারায়ণগঞ্জ
ফিরে এসো
তুমি বলেছিলে, ‘মানুষ কখনো কোনো মানুষের অপেক্ষায় থাকে না, থাকে শুধু তার সঙ্গে কাটানো সময়।’ তখন ভেবেছিলাম, আমাকে হয়তো সেই পরিস্থিতিতে পড়তে হবে না।
কিন্তু ভালোবেসে আমিও আজ কারোর অপেক্ষায়, কারও সঙ্গে কাটানো সময়গুলো ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায়। তার আলতো ছোঁয়ার অপেক্ষায়, আবার তার হাসিতে ডুবে হাজার স্বপ্ন দেখার অপেক্ষায়। তাকে দেওয়া প্রতিজ্ঞাগুলো পূরণ করতে চাই। এই অপেক্ষায় বসে যেন তিলে তিলে পুড়ছি আমি। আচ্ছা, শেষবার দুনিয়ার সব ভুলে ভালোবেসে কাছে আসা যায় না? বরাবরের মতো আরেকবার মাফ করা যায় না? হয়তো যায়, আবার হয়তো যায় না।
এই চাঁদকে সাক্ষী রেখে তারাদের সঙ্গে নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকলাম এই আশায় যে তুমি আবার আসবে ফিরে। পায়ে পা মিলিয়ে দুজনে সাঁঝের হলুদ-নীল আকাশের নিচে আবার হারিয়ে যাব।
তালহা জুবায়ের, দিনাজপুর
লেখা পাঠানোর ঠিকানা
অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। ই-মেইল: [email protected], ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA খামের ওপর ও ই-মেইলের subject–এ লিখুন ‘মনের বাক্স’