প্রেমের প্রস্তাব দিলাম

পাঠকের সুখ–দুঃখ, হাসি–আনন্দ, পছন্দ, ভালোলাগা, ভালোবাসাসহ যে কোনো না বলা কথা শুনতে চায় মনের বাক্স। প্রতি সপ্তাহে পাঠকের পাঠানো সেসব লেখা থেকে নির্বাচিত কিছু লেখা আজ প্রকাশিত হলো এখানে

মনের বাক্স

মহাকালের বাঁধন

ছোটগল্পের মতো এই জীবনে; বহু রংতুলির আঁচড় পড়েছে। প্রিয় সব মানুষের নিবিড় রংতুলির আঁচড়ে আমার মতো ভুলোমনা মানুষ নিজের অজান্তেই হয়ে উঠেছে অনিন্দ্য সুন্দর এক ছবি। কিন্তু আমি জানি, শিল্পীর শ্রমের মর্যাদা, বীরোচিত ভাবগাম্ভীর্য ও চিত্র প্রদর্শনী প্রতিযোগিতায় আমি বরাবরের মতো উদাসীন।

বহুকাল ধরে যে প্রিয় মানুষগুলো আমার সুপ্ত প্রতিভার আগ্নেয়গিরিকে উসকে দিয়ে আমাকে গতিশীল করেছে, তাদের অন্যতম হলো আমার বাল্যবন্ধু ইসমাইল। আমি জানি, আমার কিছু ভুলোমনা আচরণে তুই শক্ত অভিমান করে আছিস। তবে তুই হয়তো জানিস, আমাকে দেখতে কঠিন মনে হলেও ভেতরটা শিশুর মতো। বয়স ২৫ ছুঁই ছুঁই হলেও শৈশব এখনো তাড়া করে। বয়সের ভারে অনেকের চোখের জল হিম হয়ে আসে। আমার আচরণে কেউ কষ্ট পেলে নিজেকে অপরাধী ভেবে শৈশবের মতো মায়ের আঁচলে মুখ লুকিয়ে কাঁদি।

আমি জানি, তোর সকাল শুরু হয় পত্রিকাপাঠ দিয়ে। সকালে মনোজগৎ সাধারণত সুকোমল থাকে, তাই আমি অনলাইনের যুগেও খাতা–কলমে হাত দিয়েছি। ভাবছিস, হয়তো নতুনের ভিড়ে তোকে যোজন যোজন দূরে ঠেলে দিচ্ছি। পৃথিবীর নিয়ম কিনা জানি না, তবে অদৃশ্য এক নিয়ম তৈরি হয়ে আছে আমাদের সমাজে, একজীবনে কখনো প্রিয় মানুষকে বলা হয় না ‘ভালোবাসি’।

মাসুম আলভী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

ভালো থাকুক সে...

আমি চাঁদকে বলেছি, আলো দিয়ো আমার প্রিয়ার ঘরে। সে যেন জাগে না রাত একলা আঁধারে। প্রিয়া, তুমিও কি জাগো রাত আমার জন্য? সারা দিনের এতশত ব্যস্ততার মধ্যে হয়তো আমাকে নিয়ে ভাবা হয়ে ওঠে না তোমার। তবু আমি জানি, আমার জন্য তোমার ভালোবাসা কমেনি। তোমার সঙ্গে এক মিনিট কথা বলার জন্য আমার অপেক্ষার যে যন্ত্রণা, তা কি তুমি বুঝতে পারো না? আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্তগুলো ছিল তোমার সঙ্গে কাটানো সেই সময়। আর সেই স্মৃতিগুলোকে বুকের ভেতরে পুষে, যত্ন করেই দিন কাটে আমার।

যত দূরেই থাকো না কেন, শুধু চাই ভালো থেকো, আর ভালোবেসে যেয়ো আমাকে। মৃত্যুর আগপর্যন্ত একবুক ভালোবাসা নিয়ে অপেক্ষা করব তোমার জন্য।

ফাহিম, রংপুর

ছেড়ে আসা বন্ধু ও প্রতিবেশীদের জন্য

খুব মনে পড়ে ছোটবেলার সেই দিনগুলো। আমি যেখানে ছিলাম, যেখানে আমার জীবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে, সেই দিনগুলো বারবার মনে পড়ে। সেই প্রতিবেশী আন্টি, স্কুল যাওয়ার বন্ধুগুলো, ঈদের দিন বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাফেরা—কী চমৎকার দিন ছিল আমাদের। বাসা বদল করার কারণে এখন আমরা তাদের থেকে দূরে চলে এসেছি। দূরে, কিন্তু খুব কি দূরে? সেই তো ঢাকার মধ্যেই। আসলে ঢাকার কম দূরত্বের পথগুলো অনেক দূরত্বের হয়ে গেছে জ্যামের কারণে। চাইলেও ব্যস্ততার কারণে কারও সঙ্গে দেখা করতে পারি না। স্বপ্নে ও স্মৃতিতে সেই মানুষগুলো যেন ঘুরে বেড়ায় সারাক্ষণ। অনেক ভালোবাসা আমার বন্ধু ও প্রতিবেশীদের, যাদের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও আছে আত্মার গভীর সম্পর্ক।

আরেফিনা, ঢাকা

প্রেমের প্রস্তাব দিলাম

এটা ভালোবাসা কি না, আমি জানি না। কিন্তু তোমাকে না দেখে যদি কষ্ট লাগে, যদি তোমার সঙ্গে থাকার অজুহাত খুঁজে বেড়াই, তবে শুধু তোমাকেই ভালোবাসি। গত বছরের ৫ নভেম্বর তোমার সঙ্গে আমার প্রথম দেখা। আর প্রথম দেখাতেই তোমাকে আমার ভালো লেগেছিল। ভালো লাগা থেকে তোমাকে যে কখন আমি ভালোবেসে ফেলেছি, তা টের পাইনি।

তোমার সঙ্গে প্রতিদিন সকালে পথে দেখা হতো, এখনো হচ্ছে। হ্যাঁ ‘নাফিয়াম’, আমি তোমাকেই আমার মনের কথাগুলো জানালাম। আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি। তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে?

সামনাসামনি কথাগুলো বলার মতো সাহস খুঁজে পাইনি। তাই মনের বাক্সে চিঠি লিখলাম। আমি জানি, তুমি এই বিভাগের নিয়মিত পাঠক। ভালো থেকো, নিজের প্রতি খেয়াল রেখো। তোমার উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম।

মুহাম্মদ জোবায়ের আহমেদ, দর্শন বিভাগ, পটুয়াখালী সরকারি কলেজ, পটুয়াখালী

বিদায় প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

জীবনের কয়েকটা বছর একটা প্রতিষ্ঠানে অতিবাহিত করার পর সেই প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি স্থান, জিনিস ও মানুষের ওপর একটা অকল্পনীয় মায়ার সৃষ্টি হয়। এই মায়া তখনই সবচেয়ে বেশি বোঝা যায়, যখন প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে আসতে হয়। অনেক বছরের অভ্যাস ও মায়া কাটিয়ে ওঠা বড়ই কঠিন। প্রতিমুহূর্তে স্মৃতির জানালায় উঁকি মারে স্কুলের সেই সোনাঝরা দিনের স্মৃতি। তবু সময়ের দাবিতে সবকিছুই মেনে নিতে হয়। তবে এখন আমার প্রাণের শিক্ষকদের জন্য সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে। মা-বাবার পর তাঁরাই আমাদের অভিভাবক। সব সময় বন্ধুরূপে তাঁদের পাশে পেয়েছি। একটাই চাওয়া আজ, মা-বাবার পাশাপাশি যেন ভালো থাকেন আমার সব শিক্ষক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, রনকেলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ, গোপালগঞ্জ

প্রিয় বান্ধবী আমার

আমি এখনো চাঁদনি রাতে জ্যোৎস্না দেখি, বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজি। এখনো গ্রামের মেঠো পথে হাঁটি, শুধু পাশে নেই তুমি। আজও বিলের পানি থেকে শাপলা তুলি, কিন্তু তোমার মতো আর কারও হাতে সেই ফুল দিতে পারি না। মাঝি হয়ে বইঠা দিয়ে বহুদিন ডিঙি নৌকা চালাইনি। কারণ, ছোট নদীটাও শুকিয়ে গেছে। তুমি যেমন আমাকে পর করেছ, ঠিক তেমনি সবকিছুই যেন আমাকে ছেড়ে চলে যেতে চাচ্ছে।

মুঈন হুসাইন, টেকাকাশিপুর, সাতক্ষীরা

লেখা পাঠানোর ঠিকানা

অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

ই-মেইল: [email protected], ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA খামের ওপর

ও ই-মেইলের subject–এ লিখুন ‘মনের বাক্স’