স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের এই ১০ বৈশিষ্ট্যের কতগুলো আপনার ভেতর আছে, মিলিয়ে নিন

সঙ্গীর সঙ্গে একান্তে খানিকটা সময় কাটানো, ঘুরতে যাওয়া, হাঁটতে বের হওয়া, বাজার করা, প্রাকৃতিক পরিবেশে মন খুলে কথা বলা, দিনের সমস্ত ঘটনা, সুখ–দুঃখ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য কি আপনার মনটা আকুপাকু করে? তবে আপনাদের সম্পর্কটা স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের একটি চমৎকার উদাহরণ। ছবিতে টয়া ও শাওন (প্রতীকী ছবি)
ছবি: ছায়াছবি

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটা মিম ভাইরাল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেটার মূলকথা হলো, এখনকার সম্পর্কে নাকি ‘হাইপ’ যতটা, শান্তি ততটা না। আসলেই কি তাই? উত্তর হলো, হ্যাঁ। এখন সম্পর্কটাও অনেকটা ‘অনলাইনকেন্দ্রিক’ হয়ে পড়ায় সত্যিকারের গভীরতার চেয়ে লোকদেখানো ‘পারফেকশন’–ই প্রাধান্য পায় বেশি। আপনার সম্পর্ক যদি ‘টক্সিক’ হয়, তাহলে সেই সম্পর্ক ঠিক দেখাতে আপনাকে অনেকখানি ‘এফোর্ট’ দিতে হবে। অন্যদিকে আপনার সম্পর্ক যদি সুন্দর, স্বাস্থ্যকর হয়, তবে সেই সম্পর্ক আপনাকে শুধু মানসিক শান্তি–ই দেবে না, বরং আপনার জীবনটাও করে তুলবে সহজ আর সাবলীল।

কিন্তু আপনার সম্পর্ক হেলদি তথা স্বাস্থ্যকর কি না, সেটা কীভাবে বুঝবেন? নিচের বৈশিষ্ট্যগুলো থেকে মিলিয়ে নিন। এগুলোর বেশির ভাগ বৈশিষ্ট্য যদি আপনার সম্পর্কে উপস্থিত থাকে, তবে আপনি নিজেকে ভাবতে পারেন সৌভাগ্যবান মানুষদের একজন।

১. স্বাস্থ্যকর সম্পর্কে ভালোবাসাটা শুধু সঙ্গীর ভেতরেই আবদ্ধ থাকে না। বরং আপনি সঙ্গীর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর স্বপ্ন, লক্ষ্যকেও মন থেকে শ্রদ্ধা করতে শুরু করেন। যতটুকু সম্ভব, সঙ্গীর স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করেন। কেবল সঙ্গী হিসেবে নয়, একজন মানুষ হিসেবে আপনি তাঁর মেধা, শ্রম, সততা, গুণের কদর করেন। শ্রদ্ধা করেন। অভিনন্দন, আপনি একটি স্বাস্থ্যকর সম্পর্কে আছেন।

২. স্ত্রী বা প্রেমিকা আপনার জন্য কিছু করলে মন থেকে কৃতজ্ঞতাবোধ চলে আসে? ছোট ছোট কাজের জন্য নিয়মিত সঙ্গীকে ধন্যবাদ দেন? বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে সঙ্গীকে পাশে পেলে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সৌভাগ্যবান মানুষ মনে হয়? তবে আপনাদের সম্পর্কটা স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের একটি চমৎকার উদাহরণ।

৩. সঙ্গীর সঙ্গে দ্বিমত হন কিন্তু অসম্মান করেন না। কথা–কাটাকাটি বা ঝগড়ার সময় মাথায় রাখেন এমন কথা যেন বেফাঁসেও না বলে ফেলেন, যাতে অপর পক্ষ আহত হন বা মনে দুঃখ পেতে পারেন।  

৪. সঙ্গীর সঙ্গে একান্তে খানিকটা সময় কাটানো, ঘুরতে যাওয়া, হাঁটতে বের হওয়া, বাজার করা, প্রাকৃতিক পরিবেশে মন খুলে কথা বলা, দিনের সমস্ত ঘটনা, সুখ–দুঃখ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য কি আপনার মনটা আকুপাকু করে? তাহলে আপনি সত্যিকার অর্থের সঙ্গীর সঙ্গে জীবনটা ভাগাভাগি করছেন।

৫. সঙ্গী যদি একাডেমিক বা পেশাগত জীবনে আপনার চেয়ে ভালো করে, তাহলে আপনি গর্বিত হন?

৬. স্বাস্থ্যকর একটা সম্পর্কে আপনি নিজের সবচেয়ে ‘ভঙ্গুর’ মুহূর্তেও সঙ্গীকে পাশে পেলে হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন, নিরাপদ বোধ করবেন। সঙ্গী আপনার কথাকে কীভাবে নেবে, এই আশঙ্কাটা হেলদি সম্পর্কে থাকে না।  


৭. নিজেদের সম্পর্কের ভুল–বোঝাবুঝি নিয়ে যদি আপনি তৃতীয় কোনো ব্যক্তির কাছে অভিযোগ না করেন, সমাধান প্রত্যাশা না করেন, বরং নিজেদের মতো করেই সবকিছু সমাধান করে নিতে পারেন, তবে আপনাদের সম্পর্কে বোঝাপড়া, আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গাটা অনেক বেশি।  


৮. সঙ্গী যেমন, তেমন করেই তাঁকে ভালোবাসতে পারেন। কোনো কিছু পরিবর্তনের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন না। এর অর্থ হলো, আপনি আপনার সঙ্গী আর সম্পর্ক নিয়ে খুশি।  


৯. সঙ্গী বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে মিশলে আপনার খারাপ লাগে না, বরং ভালোই লাগে। আপনাদের সম্পর্কে যদি খবরদারি না থেকে স্বাধীনতার চর্চার জায়গাটা বেশি থাকে, তবে আপনাদের সম্পর্ক একটা সুস্থ সম্পর্ক।


১০. সবচেয়ে বড় কথা হলো, সঙ্গীর সঙ্গে থেকে ক্রমেই যদি আপনার সেরা ‘ভার্সন’টা বের হয়ে আসে, আর খারাপ দিকগুলো ক্রমেই বিলীন হয়ে যায়, তাহলে নিশ্চিতভাবেই আপনি একটা স্বাস্থ্যকর সম্পর্কে আছেন।


সম্পর্কে জড়ানোর উদ্দেশ্য ভালো থাকা, ভালো রাখা। একজন যখন যে কোনো পরিস্থিতিতে আরেকজনের পাশে থাকেন, বন্ধুত্ব, সম্মান, সহানুভূতি আর ভালোবাসার সঙ্গে আরেকজনকে গ্রহণ করে নেন, তখন সেই সম্পর্কটা  স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক। আর এমন সম্পর্ক কার না কাম্য?


সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট