কেন এই পেশাজীবীদের সঙ্গে কেউ ডেট করতে চায় না
তরুণ ভারতীয় ব্লগার আরহাম চোরদিয়ার একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল কদিন আগে। ব্যাপক আলোচনার সূত্রপাত ঘটিয়েছে ভিডিওটি। যেখানে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের তরুণদের তিনি জিজ্ঞেস করছেন, ‘কোন পেশার মানুষের সঙ্গে আপনি কখনোই ডেট করবেন না?’ নারী-পুরুষনির্বিশেষে বেশির ভাগই উত্তর দিয়েছেন ‘চিকিৎসক’। তারপর তরুণেরা কেন জীবনসঙ্গী হিসেবে চিকিৎসক চান না, সে বিষয়ে হয়ে গেছে খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ, আলোচনা।
চিকিৎসা পেশার চাহিদা সব সময়ই তুঙ্গে। অথচ অন্য পেশার কেউ এই পেশাজীবীর সঙ্গে প্রেম করতে আগ্রহী নন। কেন? অস্ট্রেলিয়ান ফ্যামিলি লইয়ার্সের জরিপ অনুসারে, যেসব পেশাজীবীর মধ্যে বিচ্ছেদের হার সবচেয়ে বেশি, সেই সংক্ষিপ্ত তালিকায়ও উঠে এসেছে চিকিৎসা পেশা। পপুলেশন অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকার গবেষণায় উঠে এসেছে, যেই চিকিৎসকেরা অন্য চিকিৎসকে বিয়ে করেছেন অথবা যেসব পুরুষ চিকিৎসকের স্ত্রী গৃহিণী, কেবল তাঁদের মধ্যে বিচ্ছেদের হার তুলনামূলকভাবে কম; তারপরও সেটা ৮ শতাংশ। চিকিৎসক ও অন্য পেশাজীবী দম্পতিদের বিচ্ছেদের হার ছাড়িয়ে গেছে ২৬ শতাংশ। এদিকে দুজন পেশাজীবী দম্পতির মধ্যে নারীটি যদি হন চিকিৎসক ও পুরুষ অন্য পেশার, সে ক্ষেত্রে বিচ্ছেদের হার সর্বোচ্চ—৩৯ শতাংশ!
আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ১০ হাজার চিকিৎসকের ওপর জরিপ চালিয়েছিল। সেখান থেকে জানা যায়, তাঁদের মধ্যে ২৫ শতাংশ বিয়েই করেননি। যাঁরা বিবাহিত, তাঁদের (সর্বোচ্চসংখ্যক) ৩২ শতাংশের বেশি আরেকজন চিকিৎসককে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এ কারণেই সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসকদের আরেকজন চিকিৎসককে জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করার পরামর্শ দেন।
কেন জীবনসঙ্গী হিসেবে চিকিৎসকদের চাহিদা কম
১. চিকিৎসকেদের প্রায়ই লম্বা শিফটে কাজ করতে হয়। রাতে এবং ছুটির দিনেও দায়িত্ব পালন করতে হয়। ফলে চিকিৎসকদের অনেক ক্ষেত্রেই রুটিনমাফিক জীবনযাপন করা এবং পরিবারকে সময় দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
২. চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্র ভীষণ চাপের। এটা অনেক সময় তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৩. বাস্তবতা হলো একজন চিকিৎসকের কাছে তাঁর সঙ্গী প্রথম প্রাধান্য নন। চিকিৎসকের কাছে প্রথম প্রাধান্য তাঁর রোগী। এ কারণেই একজন চিকিৎসকের জন্য ব্যক্তিগত জীবন থেকে পেশাজীবনই মুখ্য।
৪. চিকিৎসকেরা খুব কমই ভ্রমণ করতে পারেন এবং পারিবারিক অনুষ্ঠান বা সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন।
৫. একটা সম্পর্ক চালিয়ে নিতে সেখানে প্রতিনিয়ত ‘এফোর্ট’ দিতে হয়। চিকিৎসকেরা প্রতিদিন পেশাজীবনে নিজেদের এতটা ঢেলে দেন যে সম্পর্কে এফোর্ট দেওয়ার মতো এনার্জি অবশিষ্ট থাকে না। ফলে অনেক সময় সঙ্গীর মানসিক ও আবেগীয় চাহিদা পূরণের জন্য তাঁরা ‘অ্যাভেইলেবল’ থাকেন না।
সূত্র: আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ও ডিভোর্স ডটকম