সম্পর্কে যে ভুলগুলো করবেন না
যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলে গিয়েছে আজকালকার সম্পর্কগুলোও। ল্যান্ডলাইনে বা চিঠিতে নয়, আজকাল প্রেম হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। একে অপরের থেকে দূরে থেকেও কাছে থাকা যায়। তবে প্রতিটি সম্পর্কের ভিত কিন্তু সেই এক জায়গাতেই আছে। বিশ্বাস, পরস্পরের প্রতি সম্মান আর ভালোবাসা।
তবে অনেক সময়ই একটা সুন্দর সম্পর্কে চিড় ধরতে পারে। দুজনের সর্বোচ্চ চেষ্টার পরও সামান্য ভুল থেকে শুরু হয় ভুল–বোঝাবুঝি। সেখান থেকে টানাপোড়েন, মানসিকভাবে আঘাত পেয়ে শুরু হয় দুজন দুজনকে ছেড়ে যাওয়ার চিন্তা। ঠিকভাবে যোগাযোগ রক্ষা করতে না পারা, একে অপরের প্রয়োজনকে উপেক্ষা করা, ছোট ছোট ভুল-অভিমান জমা হয়ে বড় সমস্যার তৈরি করে। যে সমস্যা অনেক শক্তিশালী সম্পর্কের ভিতও দুর্বল করে দেয়। অথচ ঠিক সময়ে ভুলগুলো বুঝতে পারলে আর সেভাবে নিজেকে শুধরে নিলে হয়তো অসময়ে সম্পর্কটা ভাঙত না। বরং নিজেদের বন্ধনকে শক্তিশালী করে গড়তে পারতেন একটি দীর্ঘস্থায়ী, পরিপূর্ণ সম্পর্ক।
সহনশীলতার অভাব
এই পৃথিবীতে কেউই নিখুঁত নয়। প্রতিটি সম্পর্কেই টুকটাক সমস্যা থাকবেই। কোনো সম্পর্কে সমস্যা না থাকাটাই বরং আশ্চর্যজনক। এই খুঁতগুলোকে প্রাধান্য না দিয়ে সঙ্গীর সীমাবদ্ধতা বুঝতে চেষ্টা করুন। এ নিয়ে দুজনে প্রাণ খুলে কথা বলুন। এতে করে নিজেরা যেমন নিজেদের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানতে পারবেন, তেমনই যোগাযোগও পাকাপোক্ত হবে।
বাইরের জীবনকেও সমান অগ্রাধিকার দিন
সম্পর্ককে কেন্দ্র করে নিজের জীবন গড়ে তুলবেন না। বরং সম্পর্কের বাইরে নিজের একটি আলাদা জগৎ তৈরি করুন, সেখানে সময় দিন। অনেকেই সম্পর্ককে নিজের জীবনের অংশ মনে না করে সম্পর্ককেই নিজের জীবন হিসেবে গড়ে তোলেন। নিজের ভালো লাগা, খারাপ লাগা—সবটাই সম্পর্কের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে। ফলে অনেক সময়ই সম্পর্কে সামান্য কোনো বিষয়ে মনোমালিন্য দমবদ্ধ বোধ করাতে পারে। সম্পর্কের বাইরে সামাজিক জীবন আপনাকে শ্বাস নেওয়ার সুযোগ করে দেবে।
দোষারোপ করবেন না
সামান্য মনোমালিন্যে কখনোই সরাসরি সঙ্গীকে দোষারোপ করবেন না। রাগের মাথায় বলে ফেলা প্রতিটি শব্দ অপর পক্ষের মনে গেঁথে থাকে। ফলে রাগের মাথায়ও এমন কিছু বলবেন না, যা নিয়ে পরে নিজেদের অনুশোচনা বোধ হয়। সম্পর্কে মনোমালিন্য হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। বরং মনোমালিন্য শেষে কীভাবে নিজেদের সম্পর্ক পুনরায় আগের অবস্থানে ফেরত আনবেন, সেটি বুঝতে পারা সবচেয়ে বেশি জরুরি। কঠিন পরিস্থিতিতে সঙ্গীকে দোষারোপ না করে নিজেদের অবস্থান বুঝতে শিখুন, নিজেদের ভুল বুঝতে শিখে সেখান থেকে শিক্ষালাভ করুন।
পরিবার তুলে কথা নয়
পরিবার সবার কাছেই একান্ত আপন জায়গা। খেয়াল রাখবেন অতিরিক্ত রেগে গিয়ে যাতে কখনোই একে অপরের পরিবার টেনে কথা না বলেন। খুব ঝামেলায়ও বাড়ির প্রসঙ্গ টেনে আনবেন না বা কাউকে অযথা জড়াবেন না।
অতিরিক্ত নির্ভরশীল হবেন না
একে অপরের সাহায্য ছাড়া একটি সুস্থ সম্পর্ক তৈরি করা অসম্ভব। কিন্তু সেই নির্ভরশীলতা যাতে মাত্রা ছাড়িয়ে না যায়। এতে করে সঙ্গীর সহযোগিতা না পেলে বা সঙ্গ না পেলে নিজেকে অসহায় মনে হতে থাকবে। সঙ্গীর প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা হতে পারে সুস্থ সম্পর্কের জন্য হানিকারক।
বাইরের কথায় কান নয়
দুই পক্ষের মধ্যকার সম্পর্কে যতই টানাপোড়েন হোক না কেন, বাইরের মানুষকে এতে টানবেন না। বন্ধুবান্ধব বা কাছের মানুষজনের কথায় প্ররোচিত হয়ে সঙ্গীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবেন না। বরং কোনো সমস্যা তৈরি হলে নিজের সঙ্গীর সঙ্গে আগে ব্যাপারটি নিয়ে বসুন, কথা বলুন। কখনোই নিজেদের সমস্যায় তৃতীয় ব্যক্তিকে ডেকে আনবেন না। এতে করে সমস্যার সমাধান তো হবেই না, বরং তৃতীয় ব্যক্তির হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস