ফ্রিজে নতুন নতুন ধারণা যুক্ত হচ্ছে, কেনার আগে দেখে নিন

রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ কেনার আগে বেশ কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি
ছবি: অধুনা

রেফ্রিজারেটর এখন প্রতিটি পরিবারে দরকারি যন্ত্র। তাই নিয়মিত নানা ধরনের উন্নত প্রযুক্তি যুক্ত হচ্ছে তাতে। নাগরিক জীবন অনেকটা সহজ করে দিয়েছে ঘরের কোণের এই আধুনিক যন্ত্র। ব্যস্ত জীবনে খাবার সংরক্ষণের মতো জরুরি আর কিছু আছে কি! রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ কেনার আগে তাই হালনাগাদ মডেলের খোঁজ জানতে চান সবাই। রেফ্রিজারেটর তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলোও তাই প্রতিনিয়ত নিরীক্ষা চালাচ্ছে ফ্রিজকে আরও আধুনিক করতে।

সাধারণত বিদেশ থেকে আগে ফ্রিজ আমদানি করা হতো বেশি। এখন তো দেশেই অনেক প্রতিষ্ঠান ফ্রিজ তৈরি করছে। সম্প্রতি ওয়ার্লপুল বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করেছে আরও বড় পরিসরে। ট্রান্সকম গ্রুপের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য বিশেষভাবে পণ্য ডিজাইন করতে ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট তৈরি করছে তারা। গ্লোবাল অ্যাপ্লায়েন্স লিমিটেড নামে এই যৌথ উদ্যোগের কোম্পানিটি খোলা হয়েছে ঢাকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রায় ৮৫ হাজার বর্গফুট জায়গার ওপর।

দেশের ক্রেতাদের চাহিদা বুঝে ফ্রিজ বানাচ্ছে ওয়ার্লপুল
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের নানা ধরনের গ্রাহকের চাহিদা বুঝে ওয়ার্লপুল নিয়ে এসেছে বিশেষ নো-ফ্রস্ট এবং ডিরেক্ট কুলিং রেফ্রিজারেটর। এই ফ্রিজগুলোর নকশা করা হয়েছে আন্তর্জাতিক টেকনোলজিতে, যা ভেতরে থাকা খাবারকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ফ্রেশ রাখে।

অনেক ফ্রিজে ডিপ ও সাধারণ অংশ অদল–বদলের সুবিধা আছে। তাই প্রয়োজন বুঝে যে অংশ যখন যতটা দরকার সেভাবে সেট করে নিতে পারবেন। ফ্রিজের ভেতরে খাবার রেখে বাইরে থাকা ডিসপ্লে বোর্ডে খাবারের ছবি সেট করে রাখার সুবিধা আছে আধুনিক ফ্রিজে। যে কারণে, অনেক দিন কোনো খাবার ফ্রিজ থাকলেও ভুলে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া ফ্রিজের দরজা লক করার জন্যও বাইরে স্মার্ট ডিসপ্লে থাকে। বাইরে থেকে তাপমাত্রা কমানো–বাড়ানোর সুবিধাও মিলবে এই সময়ের ফ্রিজে।

কেনার আগে যা দেখবেন

রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ কেনার আগে বেশ কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি। এতে কেনার পর ব্যবহার করতে গিয়ে আফসোসে পুড়তে হবে না। এর মধ্যে অতি জরুরি একটি বিষয় হচ্ছে কম্প্রেসরের বিষয়ে জেনে–বুঝে নেওয়া। এটা ফ্রিজের প্রধান ইঞ্জিন। তাই কম্প্রেসর যত উন্নত হবে, বুঝতে হবে ফ্রিজটি তত ভালো। কম্প্রেসর খারাপ মানের হলে বিদ্যুৎ খরচও বাড়বে। এ ছাড়া আপনার ফ্রিজটি বিদ্যুৎসাশ্রয়ী কি না, সেটা দেখার আরও একটি উপায় আছে। ফ্রিজের গায়ে যদি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় স্টার চিহ্ন দেওয়া থাকে, তাহলে বুঝতে হবে ফ্রিজটি বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী।

ফ্রিজ কেনার আগে জেনে নিতে হবে সেটি ফ্রস্ট, নাকি নন–ফ্রস্ট। মডেল: বাপ্পা ও হৃদি
ছবি: অধুনা

এখন ফ্রিজে যুক্ত থাকে ন্যানো হেলথ কেয়ার টেকনোলজি। এই ছোট্ট জিনিসটি ফ্রিজে সংরক্ষণ করা খাবার স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে। এই তথ্যটি আপনি নিজেই চেক করে নিতে পারেন ফ্রিজের গায়ে যুক্ত থাকা স্টিকার দেখে। ন্যানো হেলথ টেকনোলজিযুক্ত রেফ্রিজারেটর হলে সেটা এখানে লেখা থাকবে।

ফ্রিজের আরেকটি দেখে নেওয়া বিষয় হচ্ছে কপার কনডেন্সার। কপার কনডেন্সরযুক্ত ফ্রিজের কম্প্রেসরের সঙ্গে তামার তৈরি কুলিং সিস্টেম পাইপ থাকে। যেগুলো ফ্রিজের পেছনে ও বডির ভেতরে থাকে। কপার কনডেন্সরযুক্ত ফ্রিজ অনেক টেকসই, বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে। এর ফলে ফ্রিজের গ্যাস লিকেজ হয় না, মরিচা পড়ে না, ক্যাপেলরি জ্যাম হয় না আর ফ্রিজের ভেতর তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হয়।

ফ্রিজ কেনার আগে জেনে নিতে হবে সেটি ফ্রস্ট, নাকি নন–ফ্রস্ট। ফ্রিজের ভেতরে ও সংরক্ষিত খাবারে যদি বরফ জমে যায়, তখন সেটা ফ্রস্ট ফ্রিজ। অন্যদিকে যে ফ্রিজের ভেতরে ও সংরক্ষিত খাবারে বরফ জমে না, তাকে বলে নন–ফ্রস্ট।

বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের স্মার্ট ফ্রিজ পাওয়া যায়। স্মার্ট ফ্রিজে অনেক ইনভার্টার প্রযুক্তি থাকে। এতে পাঁচটি মোড কাজ করে। একটিতে ওপরে ডিপ আর নিচে সাধারণ ফ্রিজ থাকে। এই ফ্রিজে কেউ বাসার বাইরে গেলে দীর্ঘ সময়ের জন্য অ্যানার্জি সেভিং মোড চালু করে রাখতে পারেন। অনেক ফ্রিজে এখন থাকে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়া প্রযুক্তি। ফ্রিজ কেনার সময় তাই এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে।