চীনের বৃত্তি পেয়ে ব্যাচেলরের পর করছি মাস্টার্সও
চীনের জিয়াংনান বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসিতে মাস্টার্স করছেন সাবরিনা সুলতানা। পড়ুন তাঁর অভিজ্ঞতা
চীনা সরকারের বৃত্তি নিয়ে জিয়াংনান বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স করছি। বিষয় ফার্মেসি। স্নাতকও চীনেরই জিয়াংশু প্রদেশের হোয়াইন ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে করেছি। দ্বিতীয় বর্ষেই ইন্টার্নশিপের জন্য চীনের একটি ওষুধ কোম্পানিতে যোগ দিতে হয়েছিল। অর্গানিক কেমিস্ট্রি ও ফিজিক্যাল কেমিস্ট্রি নিয়ে গবেষণার সুযোগও স্নাতক পর্যায়েই পেয়েছি। তখন আমার একটি গবেষণাপত্রও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এখন জেনেটিক প্রকৌশলের এনজাইম নিয়ে গবেষণা করছি।
যেভাবে আবেদন করেছিলাম
চীনা সরকারের বৃত্তি দুই ধরনের। টাইপ এ ক্যাটাগরিতে চীনা দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। টাইপ বি–তে কোনো নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির অফার লেটার নিয়ে পড়তে আসা যায়। উচ্চমাধ্যমিকের পরপরই আমি টাইপ এ বৃত্তি নিয়ে এখানে ব্যাচেলরে ভর্তি হই। প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসে চীনা সরকারি বৃত্তির আবেদন গ্রহণ শুরু হয়।
চীনে ফার্মেসির পড়াশোনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটা বড় সুবিধা হলো চীনের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই ইংরেজি ভাষায় ফার্মেসি বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ আছে। তাই ভাষাগত জটিলতা নেই বললেই চলে। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখেই বিভিন্ন কোর্স ডিজাইন করা হয়েছে।
চীনের ফার্মেসি প্রোগ্রামগুলোতে ব্যবহারিক শিক্ষার ওপর বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়। আধুনিক গবেষণাগারে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ পাই। ওষুধ তৈরি প্রক্রিয়া, গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ, ফার্মাসিউটিক্যাল বিশ্লেষণ, ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি, রোগীর যত্নসহ ফার্মেসির প্রতিটি ব্যবহারিক দিক এখানে বিস্তারিতভাবে শেখার সুযোগ পেয়েছি। যাঁরা গবেষণায় আগ্রহী, নতুন কিছু আবিষ্কারের স্বপ্ন দেখেন—তাঁদের জন্য দারুণ একটা গন্তব্য হতে পারে চীন। মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্যও এখানে অত্যাধুনিক গবেষণাগার আছে। আছেন অভিজ্ঞ তত্ত্বাবধায়ক (সুপারভাইজার)।
চীনের ফার্মেসি ডিগ্রি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এখান থেকে পড়াশোনা করে শিক্ষার্থীরা ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণাগারে কাজ করারও সুযোগ মিলছে। এ কারণেই বোধ হয় চীনে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বাড়ছে।
পড়াশোনার পাশাপাশি
পড়াশোনার পাশাপাশি নানা রকম সাংস্কৃতিক কাজে যুক্ত হওয়ার সুযোগও এখানে আছে। আমি যেমন আমার ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আয়োজনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করি। পাশাপাশি চীনের বিভিন্ন ঐতিহ্যের সঙ্গেও পরিচিত হওয়ার সুযোগ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স ইংরেজিতে হলেও চীনা ভাষাটা শিখে নিয়েছি। তাই এখানকার জীবনযাত্রা কিছুটা হলেও সহজ হয়েছে।