‘এ ধরনের আয়োজনে নতুন বন্ধু তৈরির সুযোগ হয়’

এন আর মাধব মেনন গ্লোবাল জুরাল কনক্লেইভ ২০২৩–এ বিইউপি থেকে অংশ নেওয়া তিন শিক্ষার্থী
ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভারতের লয়েড ল কলেজে অষ্টমবারের মতো আয়োজিত হলো অধ্যাপক এন আর মাধব মেনন গ্লোবাল জুরাল কনক্লেইভ ২০২৩। গত ১৫ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০টির বেশি দেশের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন বৈশ্বিক এই প্রতিযোগিতায়। পুরো প্রতিযোগিতায় ৫২টি দলের মধ্যে আমরা বাংলাদেশের ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছিলাম। বাংলাদেশ থেকে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ও লন্ডন কলেজ অব লিগ্যাল স্টাডিজ।

আরও পড়ুন

অনুষ্ঠানে আমরা ভারত, নেপাল, নাইজেরিয়া, শ্রীলঙ্কাসহ নানা দেশের আইনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা ও প্রতিযোগিতায় সুযোগ পাই। এই সুবাদে দেখা হয় ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। ভারতের কেরেলা প্রদেশের মার গ্রেগরিজ কলেজ অব ল-এর শিক্ষার্থী নিহাল। তিনি বলছিলেন, ‘এ ধরনের আয়োজনে নতুন বন্ধু তৈরির সুযোগ হয়। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের আইনের শিক্ষার্থীরা কী ভাবছেন, কী করছেন, তা জানার সুযোগ পাচ্ছি।’

এ ধরনের আয়োজনে শুধু ব্যক্তিগত দক্ষতাই বাড়েনি, বরং ভবিষ্যতের আইনজীবী হিসেবে আমাদের কোন কোন বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে, কীভাবে বিশ্বের বড় বড় আইনি বিষয় মোকাবিলা করতে হয়, এসব সম্পর্কেও জেনেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অংশ নিয়েছেন ওমর ফারুক ও তাঁর দল। তিনি বলছিলেন, ‘বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে উপস্থাপনের সুযোগ পেয়ে আমরা গর্বিত। আইনের শিক্ষার্থী হিসেবে কীভাবে আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হয়, তা আমরা শেখার সুযোগ পেয়েছি।’

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস থেকে আমরা টিম বিইউপি অংশগ্রহণ করি প্রতিযোগিতায়। আমাদের দলের কোচ হিসেবে ছিলেন প্রভাষক মনিরুজ জামান এবং সদস্য হিসেবে আমার পাশে ছিলেন মায়েশা আফিয়া ও রাফা রাবি। ভারতের উত্তর প্রদেশের গ্রেটার নয়দায় অবস্থিত লয়েড ল কলেজে আয়োজন করা হয় এই প্রতিযোগিতা।

শ্রীলঙ্কার সুপ্রিম কোর্টের বিচারক এস থুরাইরাজা, ভারতের অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেনকাটারামানিসহ বিভিন্ন দেশের বিখ্যাত বিচারকেরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদের বাণিজ্যিকায়নের কারণে আন্তসীমান্ত সম্পর্ক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ ছিল এবারের ‘মুট প্রোপোজিশন’-এর বিষয়। বাংলাদেশ থেকে টিম বিইউপি হিসেবে আমরাই শীর্ষ আটটি দলের একটি হিসেবে নির্বাচিত হই। এই বিশ্ব প্রতিযোগিতায় আমি একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে সেরা অ্যাডভোকেট (সেরা মুটার) হিসেবে সম্মাননা লাভ করি।

টিম বিইউপির সদস্য হিসেবে নির্দিষ্ট সমস্যা-সংশ্লিষ্ট নানা সংকটের আইনি সমাধান বিচারকদের সামনে উপস্থাপন করি আমরা। সেরা অ্যাডভোকেট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার জন্য আমাকে পুরো বিষয়টি একজন আইনজীবীর চোখে দেখতে হয়েছিল। আমি সমস্যার পেছনে কার্যত বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে নিজের অবস্থান শক্তভাবে প্রকাশ করতে চেষ্টা করেছি। যেহেতু আমার বিপক্ষে নানান দেশের কৃতী আইন বিষয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ছিলেন, তাই প্রথম দিকে কিছুটা ধীরস্থিরভাবে শুরু করেছিলাম। এরপর একটু একটু করে আইনি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে পুরো কোর্ট রুমকে আমাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি। এ ধরনের আয়োজনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভবিষ্যতের আইনজীবী হিসেবে আমাদের সামনে বহুমাত্রিক দক্ষতা বিকাশের সুযোগ তৈরি হয়েছে।