সহজ কিস্তিতে সহজ জীবন

বাজারে প্রচলিত প্রায় সব কটি নামী ব্র্যান্ডের ফ্রিজ কিস্তিতে অথবা ইএমআই সুবিধায় কেনা যায়।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রভাব পড়ছে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে। প্রয়োজনীয় জিনিসও সময়মতো কিনতে পারছেন না অনেকেই। অপেক্ষার পালা ফুরোতেই চায় না। অথবা যেই না কিছু টাকা জমিয়েছেন, সেটা বেরিয়ে যায় অন্য কিছু কিনতে। এসব ক্ষেত্রে কিস্তিসুবিধা একটা ইতিবাচক দিক। কিস্তিতে পণ্য কেনার মাধ্যমে মানুষ সহজেই সময়মতো তাঁর প্রয়োজনীয় পণ্যটি পাচ্ছেন। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বেড়ে যায় কিস্তিতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ কেনার হার। জানা যাক বিস্তারিত।

১. মিনিস্টার
মিনিস্টার ফ্রিজ কেনা যাবে তিন হাজার টাকা মাসিক কিস্তিতে। যদি তিন মাস মেয়াদের কিস্তিতে ফ্রিজ কিনতে চান, তাহলে ফ্রিজের প্রকৃত দাম অনুযায়ী টাকা পরিশোধ করতে হবে। অর্থাৎ বাড়তি কোনো সুদ দিতে হবে না। ৬ মাস, ১২ মাস বা ২৪ মাসের কিস্তিসুবিধা নিতে হলে প্রকৃত দামের ওপরে কিছু সুদ প্রদান করতে হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটি ৮ থেকে ১২ শতাংশর মধ্যে হয়ে থাকে।

২. যমুনা
ঘরে ঘরে দেশীয় পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। এবার ঈদে অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন যমুনা ফ্রিজ কেনার ব্যাপারে। সর্বনিম্ন মাসিক ১ হাজার ২৪০ টাকা কিস্তিতে ফ্রিজ দিচ্ছে যমুনা ইলেকট্রনিকস। এ স্কিমের আওতায় ৫ হাজার ২৯২ টাকা ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ক্রেতারা ফ্রিজ কিনতে পারবেন। বাকি টাকা ১২ মাস পর্যন্ত সহজ কিস্তিতে পরিশোধ করা যাবে।

৩. কনকা
কনকা ফ্রিজের ৭০টির বেশি মডেল রয়েছে। এর মধ্যে সর্বনিম্ন ১২ হাজার ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দামের ফ্রিজ রয়েছে। ফ্রিজ কেনার ক্ষেত্রে প্রায় ৩৫টি ব্যাংকের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড ব্যবহার করা যাবে। নগদ ও মাসিক ৩ থেকে ১৮ মাসের কিস্তিতে কনকার পণ্য বিভিন্ন শোরুম, ডিসপ্লে সেন্টার ও ডিলারদের মাধ্যমে কেনা যায়। ঈদুল আজহা উপলক্ষে স্ক্র্যাচ কার্ডের মাধ্যমে ‘একটি কিনলে একটি ফ্রি’ অথবা নগদ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় এবং বিশেষ উপহারও থাকছে ক্রেতাদের জন্য।

৪. ওয়ালটন
ওয়ালটনের পণ্য যেমন দামে সাশ্রয়ী, তেমনি ক্রেতাদের সুবিধার্থে রয়েছে তাঁদের মাসিক কিস্তিতে টাকা পরিশোধের সুব্যবস্থা। ওয়ালটনের ফ্রিজ কিনতে চাইলে বাজেট অনুযায়ী পছন্দের ফ্রিজ পেয়ে যাবেন। এই ফ্রিজ আপনি ৩, ৬ ও ১২ মাস থেকে সর্বোচ্চ ২৪ মাসের কিস্তিতেও কিনতে পারেন। সে ক্ষেত্রে নিকটস্থ ওয়ালটনের শোরুমে যোগাযোগ করতে হবে। আপনার বাজেট, পছন্দের ফ্রিজ ও কিস্তিবিষয়ক খুঁটিনাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে কিনতে হবে ফ্রিজ। কোন মাসে কত টাকা পরিশোধ করতে হবে, কেনার সময় তা বুঝে নিতে হবে।

৫. ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকস
ট্রান্সকম ইলেকট্রনিকসে পাবেন প্যানাসনিক, ট্রান্সটেক, হিটাচি, ওয়ার্লপুল আর স্যামসাংয়ের ফ্রিজগুলো। ঘরে বসে অনলাইনে কিনতে চাইলে আছে ট্রান্সকম ডিজিটাল। প্রায় ৩৪টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২৪ মাস পর্যন্ত বিনা সুদে ইএমআই সুবিধায় ট্রান্সকমের শোরুম অথবা ওয়েবসাইট থেকে ফ্রিজ কিনতে পারবেন। তবে মূল্য পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানোর সঙ্গে স্বল্প হারে সুদ যোগ হবে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট সাতটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ফ্রিজ কিনলে ডিসকাউন্ট, অতিরিক্ত ইএমআই সুবিধা ও আকর্ষণীয় ক্যাশব্যাক অফারও রয়েছে। চাকরিজীবী ক্রেতারা ক্রেডিট কার্ড ছাড়াও ট্রান্সকমের শোরুম থেকে কিস্তিতে ফ্রিজ কিনতে পারবেন।

৬. এসকোয়ার ইলেকট্রনিকস
বাংলাদেশে যে কয়টি সুপরিচিত ও আস্থা অর্জনকারী হোম অ্যাপ্লায়েন্স ব্র্যান্ড রয়েছে, তাদের মধ্যে এসকোয়ার ইলেকট্রনিকস অন্যতম। এদের শার্প ফ্রিজ বেশ জনপ্রিয়। শার্প একটি জাপানি কোম্পানি। এদের পণ্যের মান ও সেবা বরাবরই ভালো। অনলাইনে বা শোরুমে গিয়ে সহজেই কিস্তিতে কিনতে পারবেন শার্প ব্র্যান্ডের ফ্রিজগুলো। ঈদ উপলক্ষে থাকছে বিভিন্ন রকমের ছাড়।

৭. বাটারফ্লাই
বাটারফ্লাইয়ের সব শোরুমে থাকছে কিস্তিতে পণ্য ক্রয়ের সুবিধা। ক্রেডিট কার্ড ছাড়াই এখন কিস্তিতে কিনতে পারবেন পছন্দের ফ্রিজটি। এ প্রতিষ্ঠানের পণ্য কিনলে পাবেন ১৫ শতাংশ এককালীন টাকা দেওয়ার সুযোগ, কোনো রকম সুদ ছাড়া ১৮০ দিন বা ৬ মাসের কিস্তিসুবিধা, ১৮ মাস পর্যন্ত কিস্তিসুবিধা ও ক্রেডিট কার্ড ছাড়াই কিস্তিসুবিধা।

আরও জানা জরুরি

কিস্তিতে ফ্রিজ কিনতে হলে শোরুম থেকে একটি ফরম দেওয়া হবে। ফরমটির প্রয়োজনীয় সব তথ্য পূরণ করে জমা দিতে হবে। সঙ্গে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ন্যাশনাল আইডি কার্ড (ফটোকপিসহ), আপনার আত্মীয় নন—এমন দুজন ব্যক্তি, যাঁরা গ্যারান্টি অথবা নিশ্চয়তা প্রদানকারী হবেন এবং আপনার অবর্তমানে বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের নাম–ঠিকানা প্রদান করতে হবে।