আইপিএসের দাম এখন কেমন?

দাবদাহে চারদিক পুড়ছে। গরমে স্কুলেও চলছে ছুটি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে কাহিল হয়ে পড়ছেন সব বয়সের মানুষ। বাড়ি ফিরে যে একটু শান্তি করে বসবেন, সেই উপায়ও অনেক সময় থাকে না। তাই যাঁদের একটু সামর্থ্য আছে, তাঁরা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেতে কিনে ফেলেন ইনস্ট্যান্ট পাওয়ার সাপ্লাই বা আইপিএস। সামর্থ্যের বাইরে গিয়েও এখন আইপিএস কেনার দিকে ঝুঁকছেন কেউ কেউ। একটি আইপিএস সেটের কেমন দাম, চলুন জেনে নিই।

গরমের সময় আইপিএসের চাহিদা বেড়ে যায়
ছবি : সংগৃহীত

ভরসার নাম আইপিএস
সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের পণ্য ব্যবস্থাপক রিফাত নূর চৌধুরী বলেন, গরমের সময় আইপিএসের চাহিদা এমনিতেই বাড়ে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটা কয়েক গুণ বেড়েছে। কার্যক্ষমতার ওপর নির্ভর করে ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকায় আইপিএস কিনতে পাওয়া যায়।
বাজারে বেশ সুনামের সঙ্গে আইপিএসের ব্যবসা করছে রহিম আফরোজ। বাজারে তাদের বেশ কয়েক ধরনের আইপিএস আছে। ২৮০ ওয়াট থেকে শুরু করে ৭ হাজার ৫০০ ওয়াট। ৩৩ হাজার ৯০০ টাকায় ২৮০ ওয়াটের রহিম আফরোজ আইপিএস আপনাকে ২ ঘণ্টা পর্যন্ত ৪টি এলইডি লাইট ও ২টি ফ্যান চালানোর সুবিধা দেবে। ৪০০ ওয়াটের আইপিএস দেবে ৬টি এলইডি ও ৩টি ফ্যান চালানোর সুবিধা (২ ঘণ্টা), দাম ৪১ হাজার টাকা। রহিম আফরোজের ৫০০ ওয়াটের আইপিএস কেনা যাবে ৪৯ হাজার ২০০ টাকায়। রহিম আফরোজের ৭ হাজার ৫০০ ওয়াটের আইপিএসে ২ টনের এসি ছাড়াও ১২টি লাইট, ১০টা ফ্যান ও ২টি টিভি চালানো যায়। এই মুহূর্তে এই আইপিএসের স্টক নেই। তবে রহিম আফরোজের হট লাইন ১৬২১৩ নম্বরে ফোন করে চাহিদা জানালে তারা সংগ্রহ করে দিতে চেষ্টা করবে। আপনি বাসায় কী কী চালাবেন, সে অনুযায়ীও তাদের কাছ থেকে আইপিএস কিনতে পারবেন।
 সিঙ্গার আইপিএসের বর্তমানে মডেলের মধ্যে প্রাইম-১০৫০ ক্যাপাসিটি ৯০০ ভিএ আইপিএসের দাম ৩৮ হাজার ৯০ টাকা। এতে ৪টি ফ্যান, ৫টি টিউবলাইট অথবা ৪টি ফ্যান, ৫টি এলইডি লাইট একটি টিভি কমপক্ষে দুই ঘণ্টা চালানো যাবে।
এ ছাড়া বাজারে বাটারফ্লাই ব্র্যান্ডের জেনারেটর পাওয়া যায়। যার দাম আকার ভেদে ৪০ হাজার থেকে ৮০ হাজার পর্যন্ত। আইপিএস মিলবে নাভানা, হ্যামকো, সনি, ফিলিপস, অনিক ব্র্যান্ডেরও।  

বাসার তুলনামূলক শীতল ও উঁচু কোনো জায়গায় আইপিএস রাখতে হবে
ছবি : সংগৃহীত

বিক্রয়োত্তর সেবাসহ অন্য সুবিধা
কেনার আগে আইপিএসেরে বিক্রয়োত্তর সেবার বিষয় দেখে নেওয়া উচিত। সিঙ্গার আইপিসের প্রধান ইউনিট ২ বছর ও ব্যাটারি এক বছরের ওয়ারেন্টি দিয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির আইপিএস ৬ মাসের শূন্য শতাংশ কিস্তিতে ক্রয় করতে পারবেন। এ ছাড়া যেকোনো ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে ১২ মাস পর্যন্ত ইএমআই সুবিধায় ক্রয় করতে পারবেন। দেশ বা দেশের বাইরে থেকেও অনলাইনে অর্ডার করে ক্রেতার কাছাকাছি যেকোনো দোকানে ডেলিভারি দেয় সিঙ্গার।  

চাহিদা যেমন তেমন আইপিএস
চাইলে আপনি ফরমাশ দিয়ে বানিয়েও নিতে পারেন নির্দিষ্ট ওয়াটের আইপিএস। আইপিএস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রহমান মোটরসের স্বত্বাধিকারী আনিসুর রহমান জানান, ‘একসঙ্গে দুই-তিনটি বাতি ও ফ্যান চালাতে পারবেন, এমন আইপিএসের চাহিদা বেশি। বেশি ওয়াটের আইপিএস তৈরি করে নিলে কম্পিউটার, দুই টনের এসি ও মাইক্রোওয়েভ ওভেনও ব্যবহার করা যাবে। বাসা ও কাজের ধরনের ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন মডেলের বিভিন্ন ক্ষমতার আইপিএস আমরা বানিয়ে দিয়ে থাকি।’

বাসার রান্নাঘর বা বারান্দায় আইপিএস বসানো ঝুঁকিপূর্ণ
ছবি : সংগৃহীত

সতর্কতা
আইপিএস কেনার সময় দেখেশুনে কেনা উচিত। কারণ, আইপিএসের ব্যাটারি দু-তিন মাসেই অকেজো হওয়ার অভিযোগও কম নয়। সে জন্য ভালো মানের ব্যাটারি দেখেশুনে কিনতে হবে। বৃষ্টির পানি অথবা রোদ পড়ে, এমন কোনো স্থান, যেমন বাসার রান্নাঘর বা বারান্দায় আইপিএস বসানো ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সব সময় বসার ঘরের আশপাশে অথবা বাসার তুলনামূলক শীতল ও উঁচু কোনো জায়গায় আইপিএস রাখা উচিত। এ ছাড়া ব্যাটারির আয়ু দীর্ঘায়িত করতে ১৫ দিন বা এক মাস পর পর ব্যাটারিতে বিশেষ পানি দেওয়া প্রয়োজন। নির্দিষ্ট সময় পরপর আইপিএসের ব্যাটারির পানির মাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। বাড়ি বা ফ্ল্যাটের ভোল্টেজ পরীক্ষা করে আইপিএস ব্যবহার করুন।