আপনি যেখানে, ওষুধ পৌঁছাবে সেখানে

অনলাইনে অ্যাপের সাহায্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ ফরমাশ দিলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনার হাতে পৌঁছে যাবে ওষুধ
ছবি : সংগৃহীত

ধরুন, হঠাৎই পছন্দের কোনো খাবার খেতে ইচ্ছা করল, অনলাইনে ফরমাশ দিয়ে সেই খাবার ঘরে আনিয়ে খেলেন। কোনো একটা পোশাক বা প্রয়োজনীয় কোনো অনুষঙ্গ অল্প সময়ের মধ্যে ঘরে বসেই পেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু জীবনের অন্যতম মৌলিক প্রয়োজন ওষুধের জন্য আপনাকে বের হতে হচ্ছে ঘর থেকে। শুধু তো ঘর থেকে দুই পা ফেলে বের হওয়াই নয়, প্রয়োজনীয় ওষুধটির জন্য এই ফার্মেসি থেকে ওই ফার্মেসিতে ঘুরতে হয়। কারণ, একই ফার্মেসিতে প্রয়োজনীয় সব ওষুধ অনেক সময় পাওয়া যায় না।

এখন আপনি যেখানে, ওষুধ পৌঁছে যাচ্ছে সেখানে। অনলাইনে অ্যাপের সাহায্যে, ওয়েবসাইট বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রয়োজনীয় ওষুধ ফরমাশ দিলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনার হাতে পৌঁছে যাবে ওষুধ।

অনলাইনে ওষুধ কেনার জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম। এর মধ্যে অন্যতম ‘মেডইজি’। যেখান থেকে ক্রেতারা নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় ওষুধ বাছাই করে অর্ডার করতে পারেন। বাইরের বিভিন্ন ফার্মেসিতে ওষুধের দাম নিয়ে নানান ধরনের অনিয়ম–নৈরাজ্যের অভিযোগ থাকলেও ‘অনলাইন ফার্মেসি’ থেকে ওষুধ কেনা যায় সঠিক দামেই। ফলে বেঁচে যায় ক্রেতার মূল্যবান সময় আর নিশ্চিন্তে ঘরে বসেই পাওয়া যাবে প্রয়োজনীয় সব ওষুধ। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়েবসাইট এবং অ্যাপের মাধ্যমে দাম যাচাই করার সুযোগও রয়েছে।

 এই প্ল্যাটফর্মগুলো নিম্নমানের ওষুধ বা ভেজাল ওষুধ সরবরাহ না করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ রকম বেশ কয়েকটি অনলাইন ফার্মেসির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পেজ ও ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা গেছে, সরাসরি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে ওষুধ এনে সরবরাহ করে তারা। ফলে গ্রাহকেরা প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর আস্থা রাখতে পারছেন এবং নিয়মিত তাদের থেকে সেবা নিতে পারছেন।

ব্যাংক কর্মকর্তা আরিফ মাহমুদ। হিসাবের টাকায় চলতে হয় তাঁকে। ডায়াবেটিস, কিডনিসহ নানাবিধ চিকিৎসায় তাঁর মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার ওষুধ কিনতে হতো। সংসারের সব ব্যয় সামলে এত টাকার ওষুধ কিনতে নাভিশ্বাস উঠে যেত তাঁর। এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে আরিফ মাহমুদ জানতে পারেন মেডইজির কথা।

 ‘এখন ঘরে বসে মেডইজির ফেসবুক পেজে প্রয়োজনীয় ওষুধ ফরমাশ করি। ঘরে বসেই পেয়ে যাই। মেডইজি সাশ্রয়ী মূল্যে ওষুধ সরবরাহ করে। ১০ শতাংশ ছাড় পাচ্ছি। সেই সঙ্গে আছে ফ্রি ডেলিভারি। এতে করে আগের চেয়ে ওষুধের খরচ কমে গেছে আমার,’ জানালেন আরিফ মাহমুদ।

সরকারি কর্মকর্তা সায়কা আঞ্জুম। তাঁর কর্মক্ষেত্র ঢাকার বাইরে। প্রবীণ মা–বাবা থাকেন ঢাকায়। তাঁদের দেখাশোনার জন্য সার্বক্ষণিক লোক আছে। ছুটিতে কিংবা মাসে একবার ঢাকায় এসে মা–বাবার সারা মাসের প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনে দিয়ে যেতেন তিনি। তারপরও মাঝেমধ্যেই তাঁদের জরুরি কিছু ওষুধের প্রয়োজন হয়। বয়সের কারণে অনেক সময় ঘর থেকে বের হতে পারেন না মা–বাবা। তাই পড়াশোনা না জানা গৃহসহকারীকে দিয়ে ওষুধ সংগ্রহ করতে গিয়ে নানা রকম বিড়ম্বনায় পড়তে হতো। কখনো ঠিকঠাক ওষুধ আনতে পারতেন, কখনোবা ভুল ওষুধ ঘরে নিয়ে ফিরতেন গৃহসহকারী। এ সমস্যা থেকে সায়কা উদ্ধার পান অনলাইন ওষুধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।

সায়কা আঞ্জুম বলেন, ‘আমি ঢাকার বাইরে থাকি। মাসে একবার গিয়ে যতটুকু পারি মা–বাবাকে সবকিছু গুছিয়ে দিয়ে আসি। কিন্তু ওষুধটা নিয়ে মাঝেমধ্যে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছিল। আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে অনলাইন ফার্মেসি “মেডইজি”র কথা জানার পর তাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ অর্ডার দিয়েছিলাম। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ওষুধগুলো তারা আমার আব্বার হাতে পৌঁছে দেয়। যে ওষুধগুলো ঢাকায় গিয়ে বিভিন্ন নামকরা ফার্মেসি ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করতাম, কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই সেসব ওষুধ ঘরে বসেই পেয়ে গেছি। এই সেবা পেয়ে প্রথমবার একটু বিস্মিত হয়েছিলাম। রাজধানীর এত পেরেশানির জীবনকে চাইলেই হাতের মুঠোয় আনা যায়!’

 এমন স্বস্তি এখন বাংলাদেশের অনেক মানুষই পাচ্ছেন অনলাইনে ওষুধ কিনে। তাই ওষুধ কিনতে এখন আর ফার্মেসি থেকে ফার্মেসিতে ছোটাছুটি নয়, ঘরে বসেই সংগ্রহ করে ফেলুন জরুরি এই পণ্য।