ফ্রিজ কেনার সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন

ফ্রিজ কেমন হবে, তা ঘরের আয়তন ও পরিবারের সদস্যসংখ্যার ওপর নির্ভর করবে।
ছবি : খালেদ সরকার

বাজার ঘুরে পছন্দমতো ফ্রিজ কিনে এনে অনেক সময়ই দেখা যায়, ঘরের পছন্দসই জায়গাটায় আর বসানো যাচ্ছে না। অনেক পরিবারেই আবার দেখা যায়, প্রথমে একটা সাধারণ ফ্রিজ কিনেছেন, পরে সব চাহিদা না মেটায় আবার একটা ডিপ ফ্রিজ কিনেছেন, ফলে প্রয়োজন হয় বাড়তি জায়গা। এসব নানা কারণে ফ্রিজ কেনার আগে অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। চাহিদা অনুযায়ী কার কেমন ফ্রিজ লাগতে পারে, সে বিষয়ে আমরা জানতে চেয়েছিলাম ট্রান্সকম ডিজিটালের কারওয়ান বাজার শাখার সহকারী শাখা ব্যবস্থাপক মেহেদি হাসানের কাছে। শুরুতেই তাঁর কাছে জানতে চাই ব্যাচেলর বাসার ফ্রিজ কেমন হওয়া উচিত। মেহেদি হাসান জানান, ব্যাচেলররা বেছে নিতে পারেন নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ। যে ফ্রিজের ভেতরে সংরক্ষিত খাবারে বরফ জমে না, তাকে বলে নন-ফ্রস্ট। অন্যদিকে ফ্রিজের ভেতরে সংরক্ষিত খাবারে যদি বরফ জমে যায়, তখন সেটা ফ্রস্ট ফ্রিজ। বরফ জমে না বলে নন-ফ্রস্ট ফ্রিজ থেকে সহজেই যেকোনো সময় খাবার বের করে খাওয়ার উপযোগী করা যায়।

‘স্থানাঙ্ক’র প্রধান স্থপতি ইন্টেরিয়র ডিজাইনার সায়মা জাহান বলেন, ‘ঘরে ফ্রিজ কোথায় বসাবেন, এ নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করে। জায়গার অভাবে দেখা যায় ফ্রিজ রান্নাঘরে রাখা যায় না, আবার ডাইনিং রুমেও রাখা যায় না। তাই ঘরের আয়তন বুঝে ফ্রিজ কেনা হবে বুদ্ধিমানের কাজ। বেশি সদস্যের পরিবারে অনেকেই দুটো ফ্রিজ কিনে থাকেন। তবে দুটি ফ্রিজ না কিনে ভালো হয় শুরুতেই যদি ডাবল চেম্বারের একটি ফ্রিজ কিনে নেওয়া যায়। তাতে যেমন ঘরের জায়গা বাঁচে, তেমনি ফ্রিজের প্রয়োজন মেটে।’ ফ্রিজের আকার বড় হলে খুব সহজেই অনেক কিছু নিশ্চিন্তে স্টোর করে রাখা যায়। অফিস ও নানা ব্যস্ততায় রোজ রোজ বাজারের যাওয়ার ঝামেলা এড়াতে অনেকে একসঙ্গে সপ্তাহ কিংবা সারা মাসের বাজার সেরে ফেলেন। এত বাজারসদাই স্টোর করার জন্য চাই অধিক ধারণক্ষমতার ফ্রিজ।

ব্যাচেলর কিংবা যাঁদের পরিবারে সদস্য কম, চাহিদা অনুযায়ী ছোট ফ্রিজ কিনে থাকেন তাঁরা। ফ্রিজ ছোট হলেও স্টোরিং করার ওপর নির্ভর করে ফ্রিজের সর্বোত্তম ব্যবহার। বাজার থেকে আনা শাকসবজি, মাছ, মাংস কেটে প্রক্রিয়া করে পরিপাটিভাবে ফ্রিজে রাখুন। এতে করে অল্প জায়গায় অনেক কিছুই এঁটে যাবে। পরিবারের দুজনকেই যখন বাসার বাইরে কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত থাকতে হয়, তখন অনেকেই একবারে কয়েক দিনের খাবার রেঁধে ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করে থাকেন। ফ্রিজে রান্না করা খাবার সংরক্ষণের জন্য ভালো মানের ফুড কনটেইনার বেছে নিতে পারেন। ফ্রিজ বাছাইয়ে দামও একটা বড় ফ্যাক্টর। ধারণক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দামও বাড়তে থাকে।

নবদম্পতি কিংবা কম সদস্যের ছোট পরিবারের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী স্বাভাবিক ছোট ফ্রিজ নেওয়া যায়, যেখানে ডিপ ফ্রিজ ও সাধারণ অংশের সমন্বয় থাকে। বাজার ঘুরে দেখা গেল, ২৭৫ লিটারের স্যামসাং আরটি ২৯ ফ্রিজ ৩ হাজার টাকা ছাড়ে সর্বনিম্ন ৫৯ হাজার ৯০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ৩২১ লিটার ৭৫ হাজার ৯০০ টাকা। হিটাচি ব্র্যান্ডের ৩৭৫ লিটারের দাম পড়বে ১ লাখ ৬ হাজার ৪০০ টাকা। ২৩৬ লিটার ধারণক্ষমতার ওয়ার্লপুল নিতে পারেন ২ হাজার টাকা ছাড়ে ৪০ হাজার ৯৯০ টাকায়। বেশি সদস্যের বড় পরিবারের জন্য ডাবল চেম্বারের বড় ফ্রিজ কেনাই উত্তম। সে ক্ষেত্রে ৭০০ লিটারের ডাবল চেম্বারের স্যামসাং আরএস ৭২ মডেল ১০ হাজার টাকা ছাড়ে নেওয়া যাবে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯০০ টাকায়। ওয়ালটনের ফ্রিজের দাম পড়বে ১৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কনকা ফ্রিজের দাম পড়বে ৩১ হাজার ৭৮৫ টাকা থেকে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৯০ টাকা।