যেকোনো পণ্য কিনে হতে পারেন মিলিয়নিয়ার

পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আছে এখনো অনেক দিন। এরই মধ্যে এ উপলক্ষে সারা দেশে শুরু হয়েছে ওয়ালটনের ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন ১১। যার মধ্যে রয়েছে ফ্রিজসহ অন্যান্য পণ্য কিনে মিলিয়নিয়ার হওয়ার সুযোগ। এ ক্যাম্পেইন নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো বিশেষ অনুষ্ঠান। অভিনয়শিল্পী সাফা কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সিএমও ফিরোজ আলম এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। অনুষ্ঠানটি ২৯ মে প্রথম আলোর ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই জানা যায় ডিজিটাল ক্যাম্পেইন বিষয়ে। ফিরোজ আলম বলেন, ‘আমরা আমাদের কাস্টমারদের ডেটাবেইস তৈরির জন্য একটা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। ফ্রিজ কেনার পর ফোন নম্বর আর প্রোডাক্টের সিরিয়াল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষের এসব ব্যাপারে উৎসাহ কম। এটি বাড়ানোর জন্য রেজিস্ট্রেশন করার পর ফিরতি মেসেজের মাধ্যমে নিশ্চিত ক্যাশব্যাক বা কোনো একটা উপহার অথবা মিলিয়নিয়ার হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে কাস্টমাররা রিটার্নে কিছু পান। এ উৎসাহকে ত্বরান্বিত করতে আমরা ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন লঞ্চ করি। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে করছি ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন ১১।’

ওয়ালটনের অফারকে অনেকটা আলাদিনের প্রদীপের সঙ্গে তুলনা করা গেলেও এটি তার চেয়েও বেশি কিছু। এ নিয়ে আমিন খান বলেন, ‘আমাদের অনেকের স্বপ্ন থাকে নিজের একটা বাড়ির, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের, ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষিত করার। কিন্তু সবার সেই সামর্থ্য থাকে না। তাই আমরা ভাবলাম, ওয়ালটন যেহেতু দেশি পণ্য, সেহেতু এ পণ্যের মাধ্যমে আমরা কিছু মানুষের স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করি। গত বছর সিজন ১০-এ এমন ফ্রিজসহ অন্যান্য পণ্য কিনে ১৬ থেকে ১৭ জন মিলিয়নিয়ার হয়েছেন। আলাদিনের চেরাগ তো স্বপ্নের বা কল্পনার জিনিস। আমরা বাস্তবেই সেই স্বপ্নটা পূরণে সহায়তা করছি।’

ওয়ালটনের ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন ১১ নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানে অভিনয়শিল্পী সাফা কবিরের উপস্থাপনায় অংশ নেন ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের সিএমও ফিরোজ আলম (বাঁয়ে) এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান।

কম্পিউটার প্রোগ্রামের মাধ্যমে হাজার হাজার রেজিস্ট্রেশনের মধ্য থেকে মিলিয়নিয়ার বিজয়ী বাছাই করা হয়। এ প্রক্রিয়া ওয়ালটনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। মিলিয়নিয়ার অফারটি শুধু ফ্রিজের ক্ষেত্রে। আর ওয়ালটনের অন্যান্য প্রোডাক্ট কিনে রেজিস্ট্রেশন করলে ফিরতি মেসেজে পাওয়া যাবে নিশ্চিত উপহার। যেমন এসি বা অন্যান্য অ্যাপ্লায়েন্স কিনে লাখ টাকা জেতার সুযোগ, এসি কিনলে ডিপ ফ্রিজ ফ্রি ইত্যাদি। অর্থাৎ কিছু না কিছু পাওয়া যাবেই। এ জন্য এ ক্যাম্পেইনকে ঈদ মেগা ফেস্টিভ্যাল বলা হচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে ইলেকট্রনিকস পণ্যের এত বড় ফেস্টিভ্যাল আগে কখনো হয়নি।

ওয়ালটনের সব পণ্যই বাজারে থাকা অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় বেশ সহজলভ্য এবং মানের দিক দিয়ে সেরা। দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে দেখে দাম সাধ্যের নাগালে। যেমন, ডাবল ডোরের ফ্রিজ অন্যান্য ব্র্যান্ডে লাখ টাকা নিচে পাওয়া যায় না। কিন্তু ওয়ালটনে বেশ কয়েকটি মডেলের ডাবল ডোরের ফ্রিজ আছে, যেগুলোর দাম মাত্র ৫০ হাজার ৯০০ থেকে ৮০ হাজার ৯০০ টাকার মধ্যে।

আমিন খান

এ নিয়ে আমিন খান বলেন, ‘আগে বিদেশি পণ্য কিনে আমরা এভাবে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা অপচয় করেছি। আর এখন আমরা দুই লাখ-তিন লাখ টাকার ফ্রিজ, ষাট-সত্তর হাজার টাকায় কেনার সুযোগ পাচ্ছি। এখানে আমরা কোনো লস করছি না; বরং বেশ প্রফিট হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে ফিরোজ আলম দর্শকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা ওয়ালটনের পণ্য কিনতে না-ই পারেন। অন্য পণ্যের প্রতি দুর্বলতা থাকতেই পারে। কিন্তু আপনার ঘরের বিদেশি পণ্যের দাম কমানোর জন্য আমরা কাজ করছি। কারণ, মার্কেটে আমরা চ্যালেঞ্জ ও চাপ সৃষ্টি করেছি, যাতে তারা ওভার প্রফিট করতে না পারে। যার জন্য বাধ্য হয়ে তাদের পণ্যের দাম কমাতে হচ্ছে। তাই আপনারা ওয়ালটন কেনেন আর না কেনেন, আমরা আপনাকে পরোক্ষভাবে বেনিফিট দিচ্ছি।’

ফিরোজ আলম

ওয়ালটন পণ্যের গুণগত মান অন্যান্য নামী ব্র্যান্ডের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও এসব পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। বিশ্বের মাত্র ১৫টি দেশে ফ্রিজের কম্প্রেসর উৎপাদিত হয়। এর ভেতর বাংলাদেশ অন্যতম। আর এ দেশে এটি ওয়ালটনই বানিয়ে থাকে।

ওয়ালটনের পণ্য কেনার সময় আরও পাওয়া যাবে সহজ কিস্তি আর এক্সচেঞ্জের সুবিধা। এক্সচেঞ্জ অফারে আছে যেকোনো ব্র্যান্ডের পুরোনো ফ্রিজ দিয়ে নতুন ডিপ ফ্রিজ (যেহেতু কোরবানি ঈদ) নেওয়ার দারুণ সুযোগ। এখানে কিছু ডিসকাউন্টও পাওয়া যাবে। সেটা নির্ভর করবে মডেলের ওপর। এ ছাড়া ওয়াশিং মেশিন এবং এসিতেও আছে এ সুযোগ।

অনেকেই আছেন, যাঁরা প্রোডাক্টের ওয়ারেন্টি কার্ড হারিয়ে ফেলেন। ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন এখানে সবচেয়ে বড় সুবিধাটি দিচ্ছে। ফোন নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা থাকলে সার্ভিসিংয়ের সময় নম্বরটি বললেই সব পণ্যের সব ইতিহাস পাওয়া যাবে। অর্থাৎ ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশনই ওয়ালটনের যেকোনো পণ্যের আসল ওয়ারেন্টি।
সাধারণ কোনো ব্র্যান্ডের সেলের ক্ষেত্রে অল্প একটা সময় দেওয়া হয়। কিন্তু ওয়ালটন প্রায় দুই মাসের বেশি সময় দিয়ে ক্যাম্পেইন করছে। ফিরোজ আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ ক্যাম্পেইন কাস্টমারদের কাছে আমাদের পে ব্যাক।

সঞ্চালক সাফা কবির

মানুষ আমাদের পণ্য কিনছে দেখেই এ বিজনেস বেড়ে চলেছে। তাদের দেওয়া অর্থের একটা অংশের প্রফিট দিয়ে কোম্পানি বড় হচ্ছে। আজকে ওয়ালটন একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি। ৪০টি দেশে এ ব্যবসা হচ্ছে। ছয়টা দেশে অফিস খুলছি, যেখানে আমরা নিজেদের ব্র্যান্ডে ব্যবসা শুরু করব। এগুলো সম্ভব হয়েছে এ দেশের মানুষের টাকায়। এ জন্য আমরা পে ব্যাক করতে চাই। যেহেতু পে ব্যাক করা হচ্ছে, সেহেতু কেউ যাতে অল্প সময়ে তাড়াহুড়ো করার চাপে না পড়ে, ধীরে-সুস্থে প্ল্যান করে যাতে এর সুবিধাটি নিতে পারে, তাই এত সময় দেওয়া হয়েছে।’

ওয়ালটন এ রকম ক্যাম্পেইন করে দেশীয় পণ্য কিনতে উৎসাহিত করছে। এর মাধ্যমে মানুষ দেশি পণ্য কিনে দেশের অর্থনীতির চাকা আরও সচল করবে—এমন আশা ব্যক্ত করেছেন ফিরোজ আলম ও আমিন খান।

এখানে জানিয়ে রাখতে চাই, ইতিমধ্যে মেগা ঈদ ফেস্টিভ্যালে ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে মিলিয়নিয়ার হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের মো. সেলিম মিয়া। সুযোগ আছে আপনারও মিলিয়নিয়ার হওয়ার।