পুরোনো পোশাকে ঈদের নতুন সাজ

পুরোনো শাড়ি থেকে কাফতান বানানো যায় খুব সহজেইমডেল: তাসনিয়া ফারিণ, ছবি: প্রথম আলো

প্রতি ঈদেই নতুন পোশাক কেনার সুযোগ হয়ে ওঠে না সবার। আদতে নতুন পোশাক কেনার প্রয়োজনও থাকে না সব সময়। পুরোনো পোশাকেও সাজে নতুনত্ব আনা যায় দারুণভাবে। সেটার জন্য খুব বেশি কষ্ট না করলেও চলে। খরচও বাঁচে অনেকটা।
পুরোনো শাড়ি কেটে সালোয়ার-কামিজ, কো-অর্ড, টপ, ওড়না—বহু কিছুই তৈরি করা যেতে পারে। পুরোনো শাড়ির আঁচল দিয়ে পোশাকের হাতা হতে পারে, পাড়টিকে কাজে লাগানো যায় নানাভাবে। শাড়ি দিয়ে মা ও সন্তানের জন্য একই রকম পোশাক বানানো যেতে পারে। তবে এর বাইরেও নানা উপায়ে কাজে লাগানো যায় বিভিন্ন ধরনের পুরোনো পোশাক। অবশ্য এর জন্য আপনাকে একটু ভিন্নভাবে ভাবতে হবে। কাজে লাগাতে হবে নিজের সৃজনশীলতা। পুরোনো পোশাক থেকে চলতি ধারার পোশাক তৈরির এমন নানা উপায় জানালেন ফ্যাশন ডিজাইনার রিফাত রেজা রাকা।

আরামদায়ক কাফতান

পুরোনো ওড়না বা শাড়ি থেকে কাফতান বানানো যায় খুব সহজেই। আলাদা করে হাতা সেলাই করার ঝামেলা নেই। কেবল দেহের অংশের দুপাশে সেলাই করে নেওয়া আর গলার দিকটা পছন্দমতো আকারে কেটে সেলাই করে নেওয়া। তাতেই হয়ে যাবে আরামদায়ক কাফতান।

পুরোনো শাড়ি বা কাপড় কেটেই বানানো যাবে নতুন পোশাক
নিজের তৈরি পোশাকে মডেল হয়েছেন ডিজাইনার জাকিয়া ঊর্মি। ছবি: কবির হোসেন

কোটি বা শ্রাগ

কোটি বা শ্রাগ বানানো আরও সহজ। পুরোনো টপ, কামিজ বা কুর্তা সামনে থেকে কেটে নিলেই হলো। কাটা অংশ সোজাভাবে মুড়িয়ে সেলাই করে নিন। চাইলে হাতার সেলাই খুলে হাতার অংশটা পুরোপুরি বাদ দিয়ে দিতে পারেন। এই কোটি বা শ্রাগ আপনি পুরোনো যেকোনো পোশাকের ওপর চাপিয়ে নিতে পারেন অনায়াসেই।

পুরোনো শাড়ির ওপরেই চাপাতে পারেন এ ধরনের কাজ করা কোটি বা শ্রাগ
মডেল: তাবিন্দা, ছবি: প্রথম আলো

নানা রকম টপ
পুরোনো কামিজের নিচের অংশ কেটে নানান ধরনের টপ বানিয়ে নিতে পারেন। টপের কাটে আনতে পারেন বৈচিত্র্য। টি-শার্ট কেটে বানাতে পারেন ক্রপ টপ। যে পোশাকটি কাটছেন, সেটির কাটা অংশটা সোজাভাবে মুড়িয়ে সেলাই করে নিলেই হলো। চাইলে পুরোনো হাতা খুলে নেওয়া যেতে পারে। টপের সঙ্গে পরার জন্য মানানসই একটি প্যান্ট বের করে নিন নিজের সংগ্রহ থেকে। চাইলে পুরোনো পোশাকের হাতাজোড়াও জুড়ে দিতে পারেন অন্য একটি পোশাকে।

আরও পড়ুন

নতুনত্বের অনুষঙ্গ
যে নতুন পোশাকটি আপনি বানাচ্ছেন, তাতে কিছু অনুষঙ্গ জুড়ে দিলে উৎসবের আমেজ আসবে। বাহারি আকার এবং রঙের পুঁতি, পাথর, বোতাম, লেস বা ইয়ক বসানো যেতে পারে। চাইলে এসব খুঁটিনাটি অনুষঙ্গ কিনে নিতে পারেন। আবার একটি পুরোনো পোশাক থেকে এমন কোনো অনুষঙ্গ খুলে নিয়েও অন্য একটি পোশাকে জুড়ে দেওয়া যেতে পারে।

পুরোনো স্কার্টের ওপর নতুন লম্বা টপ পরে নিলেই পুরো সাজে চলে আসবে নতুনত্ব
মডেল: জলি, ছবি: প্রথম আলো

ফ্যাশনধারায় আরও যা
পুরোনো পোশাকের কোনো অংশ দিয়ে হেডব্যান্ড তৈরি করতে পারেন। পুরোনো কাপড়ের ব্যবহারযোগ্য অংশটুকু কাজে লাগিয়ে ফ্যাশনেবল ব্যাগও তৈরি করা যায় খুব সহজে। চাইলে একাধিক পোশাকের বিভিন্ন অংশও কাজে লাগাতে পারেন।

আরও পড়ুন

কেন করবেন এত সব

পোশাক রিসাইকেল বা আপসাইকেল করার একটি কারণ নিঃসন্দেহেই খরচ বাঁচানো। তবে পুরোনো যেকোনো কাপড়কে আপনি যখনই নতুনভাবে ব্যবহার উপযোগী করবেন, তখনই পৃথিবীর জন্য দারুণ কিছু করা হয়ে যাবে আপনার। ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক পরিবেশকে দূষিত করে। ফেলে দেওয়া কাপড়ও বাড়ায় পৃথিবীর বর্জ্য। তাই পোশাকের অপচয় করা অনুচিত।

ব্লাউজ হিসেবে এ ধরনের টপ নিয়ে আসবে ভিন্নতা
ছবি: প্রথম আলো

পৃথিবীর জন্য ভেবে হলেও কখনো কখনো অপ্রয়োজনীয় নতুন পোশাক কেনা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। ঈদের আনন্দ তো পুরোনো পোশাকেও আপনি পেতে পারেন শতভাগ। নতুন এবং ব্যবহার উপযোগী পুরোনো পোশাক দিতে পারেন সুবিধাবঞ্চিত মানুষদেরও। আপনার ঈদের আনন্দ তাতে বাড়বে আরও।

আরও পড়ুন