জেরিনকে নিয়ে প্রথমবার ফ্যাশন ফটোশ্যুটে ইমরান, দেখুন ছবিতে

সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুল ও স্ত্রী মেহের আয়াত জেরিন দম্পতির এটা দ্বিতীয় ঈদ। এবারের ঈদের সাজপোশাক নিয়ে কথা বললেন নকশার সঙ্গে তাঁরা।

‘রাতের সব তারা আছে দিনের গভীরে,

বুকের মাঝে মন যেখানে রাখব তোকে সেখানে...

তুই কি আমার হবি রে?’

বর্তমান প্রজন্মের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুল এ গানটি গেয়েই মেহের আয়াত জেরিনকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন কি না, জানা যায়নি। আসলে দুজনই অন্তর্মুখী আর ব্যক্তিজীবনকে আড়ালে রাখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাই মনে হলো, দুজনই যেন পণ করে এসেছেন প্রেম, বিয়ে, সংসার নিয়ে কোনো কথা বলবেন না!

ইমরান মাহমুদুল ও স্ত্রী মেহের আয়াত জেরিনের ছিমছাম সাজই পছন্দ
পাঞ্জাবি: টুয়েলভ, সালোয়ার-কামিজ: মুমু মারিয়া, স্থান কৃতজ্ঞতা: দিনাত জাহান ও কবির বকুল, সাজ: অরা বিউটি লাউঞ্জ, ছবি: কবির হোসেন

ইমরান ও জেরিন দম্পতির এটা দ্বিতীয় ঈদ। গত বছরের মে মাসে বিয়ের পরপরই কোরবানির ঈদ পড়েছিল। চেনা–জানা পর্ব পেরিয়ে প্রেম যে খুব বেশি দিনের, তা নয়। প্রথম পরিচয়ের চার থেকে পাঁচ মাসের ভেতরেই দুই পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে কিঞ্চিৎ হুড়াহুড়ির ভেতরেই হয়েছে বিয়ের আয়োজন। দুজনের কেউ ফ্যাশন নিয়ে খুব বেশি ভাবেন না। সাধারণ, ছিমছামভাবে চলাফেরা করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।

ইমরানের জন্ম রাজধানীর জিগাতলা হলেও বেড়ে ওঠা ডেমরার কোনাপাড়ায়। ছোটবেলার বেশির ভাগ ঈদও সেখানেই কেটেছে। ছোটবেলার ঈদ নিয়ে অন্য সবার মতো ইমরানেরও অনেক মধুর স্মৃতি আছে। নতুন কাপড় নিয়ে উত্তেজনা থাকত। কিছুক্ষণ পরপর নতুন কাপড় হাতে নিয়ে দেখতেন। ঘ্রাণ নিতেন। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলার ঈদের সঙ্গে আসলে কোনো কিছুর তুলনা চলে না। এখন আর তেমন উত্তেজনা কাজ করে না। সত্যি বলতে কি, কোনো উত্তেজনাই কাজ করে না।’ সালামি দেওয়া–নেওয়ার কথা জানতে চাইলে ইমরান বলেন, ‘আগে ১০ টাকা, ২০ টাকার একটা চকচকে নোট পেলেই দিতাম দৌড়। ১০০ টাকা হলে সে কী আনন্দ! সেই খুশি রাখার কোনো জায়গা ছিল না। এখনকার অনেকে সেটা বুঝবেই না। এখন তো কাউকে ৫০০ টাকার কম সালামি দিলে মন খারাপ করে।’

সাদার শেড পছন্দ করেন ইমরান
পোশাক: সাবেরা আনোয়ার ও টুয়েলভ ব্রেসলেট আর জুতার ভক্ত ইমরান। পাঞ্জাবি: টুয়েলভ

২০০৮ সালে ‘চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠের’ প্রথম রানারআপ হওয়ার পর থেকেই ইমরানকে বলা চলে তারকা। এর তিন বছর পর তাঁরা বেইলি রোডে চলে আসেন। সেখানে ছিলেন বছর ১৭। পরের গন্তব্য ধানমন্ডিতে। এখনো সেখানেই আছেন। তবে মাস চারেকের ভেতর উঠে যাবেন বসুন্ধরার নিজের ফ্ল্যাটে স্ত্রী, মা, মেজ বোন আর একমাত্র ভাগনি আরশীকে নিয়ে। মা, বোন আর স্ত্রীর জন্য কেনাকাটা শেষ। সবার জন্য কিনেছেন সালোয়ার–কামিজ। জমে থাকা রেকর্ডিং আর কয়েকটা টেলিভিশন শোর কাজ শেষ করেই ভাগনিকে নিয়ে বের হবেন শপিংয়ে। সবশেষে কেনাকাটা করবেন নিজের জন্য।

ব্রেসলেট আর জুতার ভক্ত ইমরান।
পাঞ্জাবি: টুয়েলভ

ইমরানভক্ত মানেই জানেন, তিনি সানগ্লাস আর ব্রেসলেটের ভক্ত। ভালোবাসেন বেল্ট আর জুতা। এমনও হয়েছে, দেশের বাইরে ঘুরতে গিয়ে কেবল এক জোড়া জুতা কিনে ফিরেছেন। কেননা, জুতাজোড়া কিনতে গিয়েই যে সব টাকা ফুড়ুৎ! এ ছাড়া সুগন্ধি কেনা ইমরানের নেশা। পছন্দের সুগন্ধি ঘরে থাকলেও আরও দুই-তিন কৌটা কিনে রাখেন। দেশের বাইরে গেলে সুগন্ধি কেনা আবশ্যক। দেশেও হুটহাট সুগন্ধি কেনেন। ইমরানকে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় কালো রঙের পোশাকে। তিনি মনে করেন, কালো যেকোনো কিছুতেই ছেলেদের ব্যক্তিত্ব সবচেয়ে সুন্দরভাবে ফুটে ওঠে। এর বাইরে সাদার শেড যেমন ধূসর, ক্রিম, আইভরি রঙে দেখা দেন। ভালো লাগে গাঢ় মেরুন। পারতপক্ষে ছাপা নকশার পোশাক পরেন না।

ঈদে পাঞ্জাবি আর শাড়ি পরবেন এই জুটি। পোশাক: টুয়েলভ, শাড়ি: গো দেশী
ছবি: নকশা

ইমরান জানান, হলুদ নাকি তাঁর অপছন্দের রং!

ইমরান পাঞ্জাবিতেই স্বাচ্ছন্দ্য। জুরহেম, ইলিয়েন, ওটু, হাউস অব আহমেদ থেকেই মিলে যায় ইমরানের পছন্দের পাঞ্জাবি। স্ত্রী জেরিন জানান, ইমরানের পছন্দেই এবার আনজারা থেকে কিনেছেন জমকালো নকশার পোশাক। তবে জামদানি শাড়ি এখনো কেনা বাকি আছে। এ ছাড়া ঈদের কেনাকাটায় এখন যুক্ত হয়েছে শ্বশুরবাড়ি। সেগুলোও দুজনে পরামর্শ করে একে একে কিনে ফেলবেন।

ঈদের পরই জার্মানি, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড আর ইতালিতে রয়েছে ইমরানের শো। তারপর যুক্তরাষ্ট্র আর কানাডাতেও শো করতে যাবেন এই তারকা শিল্পী। কেননা, উৎসবের মৌসুম মানেই সংগীতেরও মৌসুম! সব মিলিয়ে, ইমরানের ঈদ এখন যতটা না আনন্দের, উপভোগের, তার চেয়েও বেশি দায়িত্বের।