হাইহিল পরে পায়ের ক্ষতি করছেন না তো

সব সময় হাইহিল পরলে পায়ের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে
ছবি: সংগৃহীত

হাইহিলে আপনাকে যতই আকর্ষণীয় দেখাক না কেন, জানেন কি, সব সময় হাইহিল পরা আপনার পায়ের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

সব নারীর হাড় এক রকম নয়। অনেকেই মডেল, অভিনয়শিল্পীদের দেখে তাঁদের অনুকরণের চেষ্টা করেন। কিন্তু এই চর্চা সব সময়ের জন্য উপযুক্ত নয়। কোথাও বেড়াতে গেলে অল্প সময়ের জন্য হাইহিল পরা যেতে পারে, কিন্তু দীর্ঘ সময়ের জন্য, বিশেষত দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার কাজ করতে হয়, এমন পরিস্থিতিতে হাইহিল পরা একেবারেই ঠিক নয়। পরিবর্তে ব্যালেন্স হিল পরা উচিত। ব্যালেন্স হিল মানে যেসব জুতার সামনের ও পেছনের হিল প্রায় সমান। এতে পায়ের সামনের আঙুলে ওপর চাপ পড়বে না।

হাইহিলের পেছনের অংশ উঁচু থাকে। ফলে গোড়ালিতে চাপ লাগে কম। দেহের ভার গিয়ে পায়ের আঙুল অর্থাৎ পাতলা হাড়গুলোর ওপর পড়ে। পায়ের আঙুল গোড়ালির তুলনায় সাধারণত দুর্বল হয়। দীর্ঘ সময় হাইহিল পরে থাকলে দুর্বল হাড়গুলোর ওপর চাপ পড়ে বেশি। ফলে পা, কোমর, গোড়ালিতে ব্যথা হয়। কারণ, আমাদের পায়ের আঙুলসহ সারা দেহে রয়েছে অগণিত স্নায়ু, শিরা ও উপশিরা। এই শিরা, উপশিরা ও স্নায়ুর মাধ্যমে দেহের যেকোনো জায়গার ব্যথা একস্থান থেকে আরেক স্থানে পৌঁছে যায়।

অতিমাত্রায় হাইহিলের জন্য গোড়ালি উঁচু হয়েই থাকে। আর পায়ের আঙুলগুলো নিচু অবস্থানে থাকে। দীর্ঘ সময় এমন অবস্থায় থাকলে বা এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে পায়ের আঙুলগুলো দুর্বল হয়ে যায়। যেসব নারীর হাড় অতিমাত্রায় দুর্বল, তাঁদের পায়ের পাতলা হাড়গুলো চূড়ান্ত পর্যায়ে ভেঙেও যেতে পারে। বছরের পর বছর অতি উঁচু হিলের জুতা পরার জন্য মেরুদণ্ড সোজা অবস্থানে থাকতে পারে না। পরিণামে বৃদ্ধি পায় কোমরে ব্যথা, হাড়ের ভঙ্গুরতা।

এ ছাড়া কোমর, পা, হাঁটু বা পায়ের আঙুলের বড় কোনো অপারেশনের পর অবশ্যই ফ্ল্যাট জুতা পরতে হবে। গর্ভাবস্থায় অধিকাংশ নারীর হাড় দুর্বল থাকে। এ সময় হাইহিল বাড়িয়ে তুলবে কোমর ও পায়ের ব্যথা। ফ্ল্যাট জুতা একেবারেই পরতে ভালো না লাগলে ব্যালেন্স জুতা ব্যবহার করতে পারেন। তবে গর্ভাবস্থায় যাঁদের রক্তে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডির মাত্রা অনেক কম থাকে, তাঁদের ফ্ল্যাট জুতা ব্যবহার করা উচিত।

রোদ আমাদের রক্তে ভিটামিন ডির মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। শহুরে জীবনে শরীরে রোদ লাগানোর সুযোগ অনেক কম। এখন ঘর-অফিস সব জায়গাতেই এয়ার কন্ডিশনার। রৌদ্রবিহীন পরিবেশে কাজ করতে হয়তো ভালো লাগে, তবে টানা এ ধরনের পরিবেশে থাকলে দ্রুত হাড় ক্ষয় হয়। রক্ত পরীক্ষা করলে দেখা যাবে, যাঁরা কম রোদে যান, তাঁদের রক্তে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডির মাত্রা তুলনামূলকভাবে কম থাকে।

অন্যদিকে, মেনোপোজের পর নারীদের হাড় দুর্বল হয়ে যায়। নারীদের রক্তে তখন জরুরি অনেক হরমোনের ঘাটতি তৈরি হয়। পরিণামে বাড়তে থাকে হাড়ের ক্ষয়রোগ। তাই মেনোপোজের পর একেবারেই হাইহিল পরা উচিত নয়।