মেলানিয়া ট্রাম্প টুপির নকশা দিয়ে কী বুঝিয়েছেন
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানের দিকে নজর ছিল সবার। সবার মধ্যে উজ্জ্বল হয়ে থাকে প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর পরিবার। শপথ অনুষ্ঠানের শপথ নিয়ে যেমন আলোচনা হয়, তেমনি তাঁরা কে কী পরে অনুষ্ঠানে এসেছেন, কথা হয় সেটা নিয়েও। এ কারণে এলেনর রুজভেল্ট থেকে মেলানিয়া ট্রাম্প অনুষ্ঠানের সময় এবং পরে বল নাচের সময় কী পরবেন, সেটা অনেক ভেবেচিন্তেই ঠিক করেন।
সোমবার মেলানিয়া ট্রাম্প তাঁর স্বামী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের সময় অংশ নিয়েছিলেন। মেলানিয়া ট্রাম্পের পোশাকের চেয়ে তাঁর মাথার টুপি এখন বেশি আলোচনায় আছে। বিভিন্ন পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোখঢাকা টুপি নিয়ে বেশ আলোচনাও হচ্ছে।
প্রেসিডেন্টের অভিষেকে টুপি পরা অস্বাভাবিক কিছু নয়। মেমি আইজেনহাওয়ার, ন্যান্সি রিগান, জ্যাকি কেনেডিসহ আগের ফার্স্ট লেডিরা অভিষেকের দিনে টুপি পরেছেন। তবে টুপিগুলো সাধারণত পিলবক্স ধরনের হতো, যেটায় চেহারা ঢেকে যাবে না। অনুষ্ঠানে তাঁর অভিব্যক্তি টুপির কারণে দেখা অসম্ভব ছিল। স্বামী ডোনাল্ড ট্রাম্প এই টুপির কারণে চুমুও দিতে পারেননি স্ত্রীকে।
শক্ত বোতামযুক্ত কোট এবং উঁচু গলার ব্লাউজের সঙ্গে টুপিটি রহস্য এবং দুর্গম একটি লুক তৈরি করেছিল। এটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য ছিল কিছুটা অস্বাভাবিকই। প্রেসিডেন্টের পরিবারের সবার চেহারাই দেখতে চায় সাধারণ জনগণ। ক্যাপিটল রোটুন্ডার ভেতরেও তিনি টুপি ও কোট খুলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন, এমনকি ট্রাম্প যখন শপথ গ্রহণ করছিলেন, তখনো। মিসেস ট্রাম্প অনেকটাই যেন নিজের জন্য সীমানা এঁকে দিয়েছেন।
নিউইয়র্কের ডিজাইনার অ্যাডাম লিপস নকশা করেছেন ডাবল ব্রেসটেড নেভি কোটটির এবং এরিক জাভিটস বানিয়ে দিয়েছেন টুপিটি। বোটার-স্টাইলের এই টুপির নকশা পাওয়া যাবে ব্রিটিশ রাজকীয় স্টাইলের প্লেবুকে। তাঁর গতকালের সাজটি ২০১৭ সালের পাউডার নীল রঙের র্যাফ লরেনের পোশাক এবং কোটের সম্পূর্ণ বিপরীত ছিল, যেটাকে অনেকে জ্যাকলিন কেনেডির সঙ্গে সে সময় তুলনা করেছিলেন।
তারকা স্টাইলিস্ট এবং ফ্যাশনবিশেষজ্ঞ লরেন রথম্যানের মতে, ‘এটি গ্রীষ্মকালীন টুপি। এটি ঐতিহ্যগতভাবে ভেনিসে নৌকাচালকেরা পরেন। তাই না? হিমশীতল ঠান্ডা ওয়াশিংটন ডিসিতে নয়। তবে আন্তর্জাতিক বৈশ্বিক ফ্যাশনের জগতে টুপিটি বিশেষ বার্তা এবং ফ্যাশনের একটি দুর্দান্ত ব্যবহার তুলে ধরতে পেরেছে। একই সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী এবং রাজনৈতিক শক্তিকেও বুঝিয়েছে।’ অনেকের মতে, মেলানিয়া বুঝিয়েছেন, তিনি আগের মতো আর নমনীয় নেই। বরং নিজেরটা বুঝতেই এবার এসেছেন।
সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, এবিসি