যেমন নূপুর চলছে এখন

রুপার নূপুর টেকসই হয়, দামটাও থাকে নাগালের মধ্যে
ছবি : সাবিনা ইয়াসমিন

এক জোড়া নূপুর। রিনিঝিনি শব্দে ভুবন করে তোলে মাতোয়ারা। নূপুরের বিকল্প হিসেবে এক পায়ের পায়েলও এখন বেশ জনপ্রিয়। নূপুর বলতেই যে রিনিঝিনি শব্দের কথা মনে হয়, সেই শব্দও অনুপস্থিত এ সময়ের অনেক নূপুর বা পায়েলে। তবে নকশা বা ধরন-ধারণে যত পরিবর্তনই আসুক, নূপুরের উপকরণ হিসেবে রুপা এখনো গ্রহণযোগ্যতা হারায়নি। রুপা টেকসই, দামটাও এখনো সাধারণের নাগালের মধ্যে। তবে ধাতব অর্থাৎ, তামার নূপুরও পরছেন কেউ কেউ। বিশেষ কোনো নূপুর চাইলে সেটির জন্য সোনার মতো দামি উপকরণ তো রয়েছেই।

নূপুর হতে পারে কেবল মুক্তার গাঁথুনিতেও। আরও রয়েছে পাট, সুতা, কাপড়, এমনকি লেদারের নূপুর বা পায়েল। সব সময় পরার জন্য হালকা নকশার চিকন চেইনের মতো নূপুর বেছে নেওয়া হয়। এমন ক্ষেত্রে রুপার নূপুরই বহুল প্রচলিত। ঐতিহ্যবাহী ধারার পোশাকের সঙ্গে অবশ্য এখনো ভারী নকশার নূপুর পরা হয়, যাতে নূপুরের চিরন্তন মধুর শব্দটাকেও খুঁজে পাওয়া যায়। তবে সবকিছুর পরও নিজের পছন্দটাকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এমনটাই বলছিলেন সিক্স ইয়ার্ডস স্টোরির স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার জেরিন তাসনিম খান।

পাশ্চাত্যের পোশাকে, স্বাচ্ছন্দ্যে, যত্নে

শাড়ির সঙ্গে হালকা কিংবা ভারী সব রকম নূপুর পরারই চল রয়েছে। চুড়িদারের সঙ্গে ভারী নূপুর বেশি মানায়। সারা দিন নানা জায়গায় দৌড়ঝাঁপ করতে হলে সাধারণ ধাতব নূপুর না পরাই ভালো। এগুলো ভেঙে যাওয়ার ভয় থাকে। এ ক্ষেত্রে সোনা বা রুপার হালকা কোনো নূপুর মানানসই। সুতা, পাট বা কাপড়ের নূপুরও হতে পারে। পানিতে ভেজার ব্যাপার থাকলে সোনার নূপুরই ভালো। জিনস বা পাশ্চাত্য ধারার অন্যান্য পোশাকের সঙ্গে চিকন চেইনের মতো পায়েল পরতে পারেন। রিনিঝিনি শব্দ হবে, এমন নূপুর আপনি পরবেন কি না, তা আপনার ইচ্ছার বিষয়। তবে আপনি যে ধরনের জায়গায় যাচ্ছেন, নূপুরের শব্দ সেখানে মানানসই কি না, তা অবশ্যই খেয়াল রাখুন।

রুপার নূপুর

রুপা দিয়ে নানা ধাঁচের নূপুর হতে পারে। চিকন চেইনের নূপুর, কয়েক পরত চেইনের নূপুর কিংবা চওড়া নূপুর, যেকোনোটিই গড়িয়ে নিতে পারেন। ২২ ভরির এক জোড়া নূপুরের সন্ধান মিলল রাজধানীর চাঁদনি চক মার্কেটের সিলভার গ্যালারিতে। জানা গেল, আঠারো, একুশ ও বাইশ ক্যারেটের রুপার মধ্যে যেকোনোটি দিয়েই নূপুর হতে পারে। বাজেট কম থাকলে সনাতন রুপার নূপুরও বেছে নিতে পারেন। তবে শখের কারুকাজ করিয়ে নিতে চাইলে দামটা একটু বেশিই পড়বে। রুপার নূপুরে যেমন মিনা করাও থাকে। চাইলে ফরমাশ দিয়ে নিজের পছন্দের নকশার নূপুর বানিয়ে নিতে পারেন যেকোনো দোকান থেকে। রুপার নূপুর বানানোর জন্য প্রতি ভরিতে মজুরি দিতে হবে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকা, মজুরি নির্ভর করে রুপার ক্যারেট ও নূপুরের নকশার ওপর। পাঁচ শতাংশ ভ্যাটও যোগ হবে রুপার জন্য। গোল্ড প্লেটিং করিয়ে নিলে গুনতে হবে বাড়তি খরচ।

সোনার নূপুর চাইলে

সোনার নূপুরের জন্য অবধারিতভাবেই খরচটা একটু বেশি পড়বে। একুশ ক্যারেটের তিন আনার একটি পায়েলের জন্য মজুরি, ভ্যাট সব মিলিয়ে ন্যূনতম ২১ হাজার টাকা খরচ পড়বে বলে জানা গেল রাজধানীর নিউমার্কেটের সোনার দোকান ঘুরে। বাইশ ক্যারেটের জন্য আরেকটু বেশি। সোনার ভারী নকশা চাইলে ওজন বাড়বে, সঙ্গে দামটাও। নবজাতক অবস্থায় উপহার হিসেবে পাওয়া গলার চেইনটাও কিন্তু পায়েল হয়ে যেতে পারে অনায়াসে।

অন্যান্য উপকরণ

চাঁদনি চক মার্কেটে তামার নূপুরের জোড়া মিলবে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যেই। এ ক্ষেত্রেও ভারী নকশার জন্য খরচ বাড়বে। পছন্দমতো নকশার তামার নূপুরের ফরমাশ দিতে পারবেন এখানে। তামার ওপর গোল্ড প্লেটিংও করিয়ে নেওয়া যায়। এসবের বাইরেও ভিন্ন ধারার নূপুর বা পায়েল আপনার পছন্দ হতে পারে। পাটের বেণি, সুতার বুনন বা কাপড়ের নূপুরে বৈচিত্র্যময় রঙেরও দেখা মিলবে। একটু মজার লুক চাইলে বিডসের নূপুরও হতে পারে চমৎকার।