পাইলটের ইউনিফর্মের এসব স্ট্রাইপ দিয়ে কী বোঝানো হয়
উড়োজাহাজের পাইলটরা একটি নির্দিষ্ট ধরনের পোশাক পরেন। সাদা শার্টের ওপর কালো বা গাঢ় নীল কোট পরতে দেখা যায় উড়োজাহাজের পাইলটদের। তাঁদের ইউনিফর্মের একটি বিশেষত্ব হলো কাঁধের স্ট্রাইপ। এসব স্ট্রাইপ দেখতে ভালো লাগলেও এর ব্যবহার পোশাকের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য নয়, বরং পাইলটের পদমর্যাদার প্রতীক।
পাইলটের পোশাকের কাঁধের ওপর পরা কাপড়কে বলা হয় ‘অ্যাপোলেট’। সামরিক বাহিনীর সদস্যদের পোশাকে এমন অ্যাপোলেট দেখা যায়। বিভিন্ন স্কুল ও ক্যাডেট কলেজের পোশাকেও ব্যবহৃত হয়। পাইলটের অভিজ্ঞতা ও অর্জনের সঙ্গে বাড়তে থাকে অ্যাপোলেটে স্ট্রাইপের সংখ্যা। বিশ্বের প্রায় সব এয়ারলাইন পাইলটদের পোশাকের এই রীতি মেনে চলে।
মার্কিন নৌবাহিনীর তথ্যমতে, ১৭ শতকের শেষের দিকে কাপড়ের স্ট্রাইপের উদ্ভব হয়েছিল। তবে এর উদ্ভাবনের কারণ এখনো নিশ্চিত নয়। বেল্ট আটকে রাখার জন্য অথবা কাঁধকে আঘাত থেকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এর ব্যবহার হতে পারে। ইতিহাস বলছে পদমর্যাদার প্রতীক হিসেবে প্রথম অ্যাপোলেট পরার ব্যবস্থা চালু করেছিলেন ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন। তাঁর সৈন্যরা কাঁধে সোনালি রঙের ঝালরযুক্ত অ্যাপোলেট পরতেন। এরপর অন্যান্য দেশেও একই ব্যবস্থা চালু হয়।
পাইলটদের পোশাকের স্ট্রাইপের প্রকারভেদ
একটি স্ট্রাইপ: সাধারণত একজন ক্যাডেট বা প্রশিক্ষণার্থী পাইলট তাঁর ইউনিফর্মের সঙ্গে অ্যাপোলেটে একটি স্ট্রাইপ পরেন।
দুটি স্ট্রাইপ: একজন ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার বা সেকেন্ড অফিসার সাধারণত দুটি স্ট্রাইপ পরেন। তাঁরা উড়োজাহাজ উড্ডয়নের আগে ও অবতরণের পর পরিদর্শনে সহায়তা করেন এবং উড্ডয়নকালে উড়োজাহাজ পর্যবেক্ষণ করেন।
তিনটি স্ট্রাইপ: একজন ফার্স্ট অফিসার বা সহপাইলট অ্যাপোলেটে তিনটি স্ট্রাইপ পরেন। ফার্স্ট অফিসার সাধারণত ক্যাপ্টেনের সঙ্গে ফ্লাইটের দায়িত্ব ভাগ করে নেন।
চারটি স্ট্রাইপ: উড়োজাহাজের ক্যাপ্টেন চারটি স্ট্রাইপ পরেন। তাঁকে পাইলট-ইন-কমান্ডও বলা হয়। তিনি বিমানের সামগ্রিক দায়িত্ব পালন করেন।
বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সব এয়ারলাইনে স্ট্রাইপের এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। কিছু কিছু এয়ারলাইন তাদের নির্ধারিত পোশাকের রং বা নকশায় হালকা পরিবর্তন আনলেও স্ট্রাইপের সংখ্যার ভিত্তিতে পাইলটদের অবস্থান চিহ্নিত করার এই ঐতিহ্য এখনো বহাল আছে।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট