বাদাম কেন ভালো খাবার
ক্যাম্পাসে আড্ডা দিতে দিতে বাদামওয়ালাকে দেখে ‘অ্যাই বাদামওয়ালা’ বলে ডাক দেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বাদাম খেতে খেতে কত না উজির-নাজির আমরা মেরেছি। অবসরে আড্ডা জমিয়ে তুলতে বাদামের জুড়ি নেই। শুধু আড্ডাই নয়, বাদাম কিন্তু আমাদের শরীরের জন্যও বেশ উপকারী। বাদামের নানান কার্যকারিতা নিয়ে রিডার্স ডাইজেস্টে পুষ্টিবিদ নিনা হারভি একটা লেখা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বাদাম খুবই পুষ্টিকর খাবার। তাই অনেক খাবারের বিকল্প হিসেবে বাদাম খেতে পারেন। যাঁরা বিকেলে মাফিন বা চকলেট খাচ্ছেন, তাঁরা বিকল্প হিসেবে বাদাম খেতে পারেন। চিজ বা ক্র্যাকার্সের চেয়ে বাদাম অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। সপ্তাহে ৪-৫ বার ৩০ গ্রাম করে বাদাম নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। নানান ধরনের বাদামে নানা রকমের পুষ্টির দেখা মেলে।
একেক বাদামের একেক কাজ
কোলেস্টেরল কমাতে বাদাম বেশ কাজের। কাজুজাতীয় বাদামে পলিআনস্যাচুরেডেট ফ্যাট থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। ফলে কমে যায় হৃদ্রোগের ঝুঁকি। কাজু ওমেগা থ্রি ও ওমেগা সিক্স ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ বাদাম। যেহেতু খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়, তাই হৃৎপিণ্ডের ধমনি শক্ত হয়ে যাওয়াকে প্রতিরোধ করে। চিনাবাদাম ও আখরোট শরীরের জন্য বেশ কাজের। বাদাম ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধেও কাজ করে। যাঁদের টাইপ–২ ডায়াবেটিস, তাঁদের জন্য বাদামের ফ্যাট ও পুষ্টি গ্লুকোজ ও ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
নারী ও পুরুষ সবার কাজে আসে
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, বাদাম অনেক ক্যানসারের কোষের বৃদ্ধিকে ধীর করে। গবেষণায় দেখা যায়, যেসব পুরুষ সপ্তাহে অন্তত দুবার বাদাম খান, তাঁদের হৃদ্যন্ত্র বন্ধ হয়ে মৃত্যুর হার ৪৭ ভাগ কম থাকে। যেকোনো ধরনের করোনারি আর্টারির রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ৩০ ভাগ কমায়। যেসব নারী সপ্তাহে ১৪০ গ্রাম বাদাম খান, তাঁদের হার্ট অ্যাটাকের আশংকা ৩৫ ভাগ কম। প্রাপ্তবয়স্ক যাঁরা সপ্তাহে ৪-৫ বারের মতো বাদাম খেয়ে থাকেন, তাঁদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৫০ ভাগের চেয়ে কম থাকে। বাদাম খেলে নারীদের টাইপ–২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।
এক টুকরা বাদামের কাজ অনেক
আখরোটে ভিটামিন ই থাকে, যা ফুসফুস ও প্রোস্টেট ক্যানসারের কোষের বৃদ্ধি কমিয়ে দিতে পারে। বাদামের গামা-টোকোফেরোল ক্যানসার কোষকে আক্রমণ করে। আখরোটে মেলাটোনিন থাকে। যা ক্যানসার কোষের বিকাশে বাধা তৈরি করে। অনেক বাদামে সেলেনিয়াম থাকে, যার অ্যান্টি–অক্সিডেন্টও ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। যাঁরা নিয়মিত বাদাম খান, তাঁদের শরীরের উচ্ছলতা বাদাম না খাওয়াদের তুলনায় বেশি বোঝা যায়। বাদাম খেলে ক্ষুধার মাত্রা কমে যায় বলে কম খাবার খেতে উৎসাহ পান সাধারণ মানুষ।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট