করফু দ্বীপের কল্লোল ৩

আখিলিয়ন প্রাসাদ থেকে সাগরের হাতছানি

ক্যাফেটি সড়কের একেবারে শেষ প্রান্তে। এটি ছাড়া আর কিছু নেই। আছে পাহাড়ের ঢাল। মানে যেখান দিয়ে আমি উঠে এসেছি কেবল। ওয়েটার মেয়েটি বলছিল, এখান থেকেও নাকি করফু শহরের মূল কেন্দ্র, মানে যেটিকে তারা ওল্ড টাউন বলে, সেখানে যাওয়া সম্ভব। দূরত্ব খুব বেশি নয়। তাহলে এখন আমি কোন দিকে যাব? কফিটা শেষ করে এ রাস্তা ধরে পুরোনো শহরের দিকে হাঁটব? নাকি হোটেলে ফিরে গিয়ে অ্যালেক্সের গাড়ি ভাড়া করে আখিলিয়ন প্রাসাদের দিকে যাব? সঠিক কোনো জবাব খুঁজে না পেয়ে অবশেষে এক ইউরোর একটা কয়েন পকেট থেকে বের করে টস করি। কয়েন আমাকে প্রাসাদের দিকে ঠেলে দেয়।

‘কী, ফিরে এলে যে? আখিলিয়নে যাওয়ার জন্য গাড়ি চাই বুঝি?’ আমাকে হোটেলের গেট দিয়ে ঢুকতে দেখেই অ্যালেক্সের প্রশ্ন। আমি মাথা নাড়ি। অ্যালেক্স অফিসের গুমটিঘর থেকে দ্রুত বের হয়ে কাকে যেন হাঁকে। দেখি, সাঁতারপুকুরের কাছে এতক্ষণ যে ছোকরা খানিকটা অবসর পেয়ে সিগারেট ফুঁকছিল, সে দ্রুত ছুটে আসে।

ছোট্ট একটা সাদা গাড়ি। মুহূর্তের মধ্যেই অফিসঘরের সামনে এসে হাজির। চালকের আসনে সেই ছেলে। করফুর সংকীর্ণ সড়ক ধরে বেশ দ্রুতগতিতে ছোটে সে গাড়ি। মাত্র দুই লেনের সড়ক। ওভারটেকের তেমন জায়গা নেই বললেই চলে। ফলে কোনো গাড়ি ধীরগতিতে চললে পেছনের গাড়িগুলোকেও গতি কমাতে হবে। প্রাপ্তিস্বরূপ খেতে হবে গালাগাল। সবাইকেই তাই মোটামুটি একই গতিতে চলতে হয় পথের নানা বাঁকের কথা মাথায় রেখেই। দ্বীপে সদ্য আগত কারোর পক্ষে সেটা চট করে বুঝে নেওয়া কিংবা মানিয়ে নেওয়া কিছুটা কঠিন। এই তো গাড়িতে ওঠার আগে অ্যালেক্স বলছিল, বছর দুয়েক আগে এক অস্ট্রেলিয়ান যুগল খুব উৎসাহ নিয়ে গাড়ি ভাড়া করে তার কাছ থেকে। সারা দিন দ্বীপের আনাচকানাচে ঘুরে বেড়াবে, এই ছিল পরিকল্পনা। কিন্তু আধেক দিন যেতেই খবর এল, আরেকটি গাড়ির সঙ্গে টক্কর লাগিয়ে বিশ্রী এক দুর্ঘটনা বাধিয়েছে তারা। তারপর তো থানা-পুলিশ, হাসপাতাল—নানা ঝামেলা।

‘আমার নিজের গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা আছে বলেই যে তোমার কাছে গাড়ি গছাতে চাই, তেমন নয়। বরং বলব, নিজে চালানোর জন্য গাড়ি ভাড়া নেওয়ার আগে দুবার ভাবো। যদি মনে করো, এখানকার রাস্তাঘাটে তুমি গাড়ি চালাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে, তবেই নিয়ো। বেড়াতে এসে উটকো বিড়ম্বনায় পড়ো, সেটা আমি চাই না,’ অ্যালেক্স বলে।

সাগরপারের মূল রাস্তা ছেড়ে গাড়িটি ঢুকে পড়ে একটা পাড়ার ভেতর। খানিকটা উতরাই পেরোতে হয়। দুই ধারে ছড়ানো–ছিটানো বাড়িঘর। উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। অনেকটা যেন সাবেকি আমলের দালানের মতো। সামনের দিকে লৌহনির্মিত পেল্লায় আকারের সদর দরজা। ঘন নিকুঞ্জে সম্মুখ ঢেকে থাকায় বাড়িগুলোর ভেতর ভাগ গাড়ি থেকে নজরে আসে না।

‘তোমার কি কখনো করোনা হয়েছে?’ চালক ছেলেটির প্রশ্ন শুনে ইচ্ছা হয় ক্যাপ্টেন হ্যাডকের মতো করে ‘টেন থাউজেন্ড থান্ডারিং টাইফুনস’ বলে চেঁচিয়ে উঠি। হঠাৎ এমন অলক্ষুণে প্রশ্ন কেন, বাপু? হ্যাঁ, টিকা নেওয়ায় মনে খানিকটা সাহস আছে বৈকি, কিন্তু গত দেড়টা বছরে করোনা যে হারে প্রাণসংহার করেছে, সেটি মনে খানিকটা স্থায়ী আতঙ্ক তো তৈরি করেছেই। নিজেকে খানিকটা সামলে নিয়ে বলি, ‘না। কিন্তু হঠাৎ এমন প্রশ্ন করলে কেন বলো তো?’

গাড়িটা নতুন হলেও ম্যানুয়াল গিয়ারে চলে। আমেরিকায় অবশ্য আজকাল ম্যানুয়াল গিয়ারের গাড়ি তেমন একটা দেখাই যায় না। দু–একজন শখ করে কেনে। তাই বলা চলে, বেশ কিছুকাল পর ব্যাপারটি দেখছি। খানিকটা খাড়া পথে ওঠার সময় গিয়ার দ্রুত বদলে নিয়ে ও বলে, ‘এমনি জিজ্ঞাসা করলাম। আমাদের এখানে কয়েক সপ্তাহ ধরে এর প্রকোপ একটু বেড়েছে তো, তাই প্রশ্নটা মাথায় এল।’

‘কিন্তু অ্যালেক্স যে বলল তোমাদের এখানে গত বছর থেকেই মোটামুটি ভালো, নিরাপদ অবস্থা?’ পথের দিকে নজর রেখে জিজ্ঞাসা করি।

‘খুব একটা ভুল বলেনি।’ নিজের মুখের মাস্কটাকে ভালো করে টেনে নিয়ে ও যোগ করে, ‘আগে ভালোই ছিল, তবে কিছুদিন আগে ইস্টার হলো। সবাই হুড়মুড় করে নেমে এল রাস্তায়। তারপর থেকে একটু বেড়েছে।’ এটুকু বলে আমার দিকে তাকিয়ে আশ্বস্ত করার ভঙ্গিতে বলে, ‘ভয় পেয়ো না। আমরা যারা হোটেলের কর্মচারী, প্রত্যেকেই তিন-চার দিন অন্তর টেস্ট করি।’

কিন্তু সেটা বললেই কি আর পুরোপুরি আশ্বস্ত হওয়া যায়? মনের মধ্যে একটা খচখচে অনুভূতির জন্ম হলো। এখানে এসে ভুল করলাম না তো?

আমাকে আখিলিয়ন প্রাসাদের দোরগোড়ায় নামিয়ে দিয়ে সে জানায়, এখানে ঘোরাঘুরি শেষ হওয়ার পর ফোন করলেই আবার এসে নিয়ে যাবে। আসলে হোটেল থেকে প্যালেসটি তো বেশি দূরে নয়। মাত্র মিনিট দশেকের পথ।

রাণী সিসি
ছবি: উইকিপিডিয়া

অবসরে এসে খানিকটা সময় কাটানোর জন্য যিনি এই প্রাসাদ নির্মাণ করেছিলেন, তাঁর ব্যক্তিগত প্রাসাদে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগে। ভিয়েনায়। তবে সেটি এত বিশাল যে এ মাথা থেকে ও মাথায় ঘুরতেই প্রায় পুরো দিন প্রয়োজন। প্রাসাদজুড়ে অসংখ্য চিত্রকর্ম আর ভাস্কর্যের ছড়াছড়ি।

এত এত প্রাচুর্যের মধ্যে বাস করেছেন যে মহারানি, তাঁর ব্যক্তিগত জীবন কিন্তু সুখের ছিল না। সুবিশাল অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের অধিকারী সম্রাটের সঙ্গে দূরত্ব তো ছিলই, সেই সঙ্গে ছিল মনের নানা কোণে জমে থাকা অব্যক্ত বেদনা। হয়তো সেই বেদনার হাত থেকে বাঁচতেই মাঝেমধ্যে চলে যেতেন দূরদেশ গ্রিসের উপকূলে কিংবা জুরিখে। জুরিখেই এক বিকৃত মস্তিষ্ক আততায়ীর তীক্ষ্ণ ছোরার আঘাতে তাঁর মৃত্যু ঘটে। আখিলিয়ন গড়ার মাত্র সাত বছর পর। তাই এ প্রাসাদে মহারানি সিসির খুব যে পদধূলি পড়েছে, তেমন নয়।

অথচ প্রাসাদটি কিন্তু সিসি গড়েছিলেন বড্ড সাধ করে। সেকালের এক বিখ্যাত ইতালিয়ান স্থপতিকে ডেকে এনেছিলেন নকশা আঁকার জন্য। তখন অবশ্য এ এলাকা নিছকই এক গ্রাম। কমলালেবু, জলপাই, সাইপ্রাস, ডুমুরগাছে ছেয়ে থাকা এক পাহাড়কে নিয়ে সে গ্রাম। শতবর্ষের ব্যবধানে গ্রামের রূপ খানিকটা বদলে গেলেও সেই গহিন অরণ্যের অবগুণ্ঠন কিন্তু পুরোপুরি উবে যায়নি।

রাণী সিসির সখের আখিলিয়ন প্রাসাদ

প্রাসাদটি অবশ্য ভিয়েনার সেই শোনব্রুন প্রাসাদের মতো বিশাল নয়। মাঝারি আকারের। শ্বেতপাথরে গড়া। বেশ সাদামাটা। নিচতলায় গাড়ি বারান্দা। ওপরের দুটি তলে বেশ প্রশস্ত ছাদ–বারান্দা; হয়তো সাগরের নীল জলে চোখ রাখার সুবিধার্থে। সিসি অকালে গত হওয়ার পর প্রাসাদটি নানা সময়ে হাতবদল হয়। সে জন্য অবশ্য এর বহির্ভাগ কিংবা অন্তর্ভাগে খুব একটা পরিবর্তন আসেনি। এমনকি পেছনের দিকের উদ্যানে সিসি স্বর্গের যে নটী কিন্নরীর ভাস্কর্য স্থাপন করেছিলেন, পরবর্তী তত্ত্বাবধায়কেরা সেগুলোকেও সরিয়ে ফেলেননি। কালের খেয়ায় ভাসমান অবস্থায় এর স্থাপত্যে খুব একটা উত্থান-পতন না হলেও, ভাবমূর্তিতে পতন একবার ঘটেছিল। সেটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষভাগে। দখলদার ইতালীয় বাহিনী গ্রিস ছেড়ে চলে গেলে দ্রুত এসে শূন্যস্থান পূরণ করে জার্মান বাহিনী। গোলাবারুদ নিয়ে করফুতে এসে ঢোকে নাৎসিরা। আর সেই নাৎসি এসএস বাহিনীর স্থানীয় সদর দপ্তর খোলা হয় এ ভবনে।

প্রাসাদের শুভ্র দেয়ালে ছোপ লাগে রক্তজবা রঙের।
গাড়িবারান্দার দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই প্রশস্ত সিঁড়ি। অনেকটা যেন টাইটানিক সিনেমার বিখ্যাত সেই সিঁড়ির মতো, যেখানে জ্যাক দাঁড়িয়ে ছিল রোজের প্রতীক্ষায়। গেল শতকের শুরুর দিকের বনেদি স্থাপনাগুলোয় এমন সিঁড়ি বেশ দেখা যেত। ঘরের মাঝবরাবর থেকে শুরু হয়ে যেটি ল্যান্ডিংয়ে গিয়ে দুটি শাখায় বিভক্ত হয়। এখানেও তা-ই। সিঁড়ির পদমূলে দুই দিকে একটি করে ভাস্কর্য। দেবরাজ জিউস আর তাঁর স্ত্রী হেরা। জিউসের হাতে বজ্র আর পায়ের কাছটায় অনুগত ইগল।

সিঁড়ির একদিকে ছোট্ট চ্যাপেল
ছাদ থেকে ঝুলছে পিতলের ঝাড়বাতি চারটে শিকলের মাধ্যমে

সিঁড়ির একদিকে ছোট্ট চ্যাপেল। সিলিংয়ের কাছটায় উজ্জ্বল ফ্রেসকো। সেখানে যিশুর বিচারানুষ্ঠানকে করেছে মূর্ত। ফ্রেসকোর নিচে কুমারী মেরির ছবি। ছাদ থেকে ঝুলছে পিতলের ঝাড়বাতি চারটে শিকলের মাধ্যমে। প্রতিটি শিকলের প্রান্তে একটি করে বাজপাখি। চ্যাপেলের উল্টো দিকের ঘরগুলো বেশ নিরাভরণ। শোবার ডিভান, প্রাসাদের পরবর্তী মালিক জার্মান সম্রাট কাইজার ভিলহেমের তৈলচিত্র, সিসির ব্যবহৃত দু–একটি পড়ার টেবিল—এমন এলোমেলো কিছু সে ঘরগুলোতে।

ওপরতলায় কী আছে, জানার উপায় নেই। ওখানে যাওয়া মানা। এককালে অবশ্য যাওয়া যেত। সেটি আশির দশকের আগেকার সময়ের কথা। এক ক্যাসিনো কোম্পানি সেখানে জুয়ার আসর বসাত। কিন্তু পরে গ্রিক সরকার প্রাসাদটি অধিগ্রহণ করে একে পর্যটনের জন্য উন্মুক্ত করলে ক্যাসিনো কোম্পানি পাততাড়ি গুটিয়ে পালায়, সেই সঙ্গে বোধ হয় রুদ্ধ হয় প্রাসাদের সব কোণে বিচরণের অবাধ সুযোগ।

ভেতরে ঢুকতেই প্রশস্ত সিঁড়ি

ভেতরে যেহেতু খুব একটা কিছু দেখার কিংবা করার নেই, আমি তাই পেছনের বাগিচায় এসে দাঁড়াই। বলতে গেলে আখিলিয়নে এসেছি এই বাগিচার লোভেই। আর এখানে পা দেওয়ামাত্র বুঝেছি, ঠকিনি একটুকুও।

আইসক্রিমের মাথার মতো করে ছাঁটা কিছু সাইপ্রেসগাছ আর মোজাইক পাথরে ঢাকা বাগিচার অধিকাংশ দেহস্থল। এখানে-ওখানে হোমার, অ্যাপোলো—এমন নানা পৌরাণিক চরিত্রের ভাস্কর্য। দুই দিকের সীমানা দেয়ালের কাছে ফুলের বাগান। আর সম্মুখে সমুদ্র। সেদিকে ধেয়ে গেলে আখিলিসের প্রকাণ্ড মূর্তি। বিজয়ী বেশের মূর্তি নয়। গোড়ালিতে শরবিদ্ধ অবস্থায় স্বর্গের সাহায্যের প্রতীক্ষারত। ডান হাতটি চেষ্টা করছে শরটিকে তুলে ফেলতে।

অ্যাকিলিস ছিলেন গ্রিসের বীরযোদ্ধা। অমর। গ্রিক পুরাণমতে, জন্মের পরই শিশু অ্যাকিলিসকে পবিত্র স্তিক্স নদীর জলে নিমজ্জিত করে তাঁর মা। মা-ছেলে কেউই জানলেন না, পুরো দেহ অবিনশ্বর হলেও একটি অংশ রয়ে গেল আশীর্বাদবঞ্চিত। অ্যাকিলিসকে জলে ডোবানোর সময় গোড়ালির যে অংশটি মা ধরে ছিলেন, সে অংশ মন্ত্রপূত জলের ছোঁয়া পায়নি। যৌবনে রাজা আগামেননের কাছে ভাইয়ের স্ত্রী প্রহৃত হলে অ্যাকিলিসের ডাক পড়ে। তিনিও ট্রয়ের যুদ্ধে শামিল হন। যুদ্ধের একপর্যায়ে অ্যাকিলিসের দেহের সবচেয়ে দুর্বল যে স্থান, সেখানেই যেন নিয়তি শত্রুসেনার শরকে পথ চিনিয়ে নিয়ে যায়। প্রবাদতুল্য যোদ্ধা হয়েও পরাজয় মেনে নিতে বাধ্য হন তিনি।

অ্যাকিলিসের ভাস্কর্য

এমন এক গ্লানি এই ভাস্কর্যের পেছনে লুকিয়ে থাকায় জার্মান সম্রাট কাইজার খানিকটা বিরক্ত হন। তিনি একে সরিয়ে বরং অ্যাকিলিসের একটি বীরত্বব্যাঞ্জক ভাস্কর্য তৈরি করতে নির্দেশ দেন। আর সে কারণেই এখন এ বাগিচায় অ্যাকিলিসের দুটি ভাস্কর্য—একটি বিজয়ীর বেশে গ্রীবা–উন্নত ভঙ্গিতে, অপরটি করুণাপ্রত্যাশী বিজিতের ভঙ্গিতে। যদিও পরবর্তীকালে সমঝদার মানুষের কাছে বেশি নন্দিত হয়েছে দ্বিতীয় ভাস্কর্যটিই।
অনেকটা যেন ঝুলবারান্দার মতো করেই বাগিচার শেষ প্রান্তে প্রস্তরনির্মিত রেলিংঘেরা একটি স্থান। ওখানে দাঁড়ালে পায়ের নিচে ভেসে ওঠে টুকরা মেঘ, ক্ষণভঙ্গুর পরাগের মতো দূরের সাগরের বাষ্প ধেয়ে এসে মিলিয়ে যায় আর বহু নিচে পাহাড়ের সানুদেশ থেকে ঊর্ধ্বপানে ধেয়ে যাওয়া শীর্ণ বৃক্ষশাখা দৃষ্টিতে সৃষ্টি করে অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যাঘাত।

এই বিশেষ স্থান কিন্তু মোটেও আমার অপরিচিত নয়। বহুকাল আগে দেখা প্রিয় জেমস বন্ড সিনেমা ‘ফর ইয়োর আইজ অনলি’র একটি রোমান্টিক দৃশ্যের চিত্রায়ণ হয়েছিল ঠিক এখানেই। শুধু চিত্রায়ণ নয়, সিনেমাটির একটি উল্লেখযোগ্য অংশজুড়েই ছিল এই করফু দ্বীপ। ব্রিটিশ একটি গোয়েন্দা জাহাজ নিমজ্জিত হয় এ দ্বীপের আশপাশে। সেটি জানতে পেরে শত্রুরা চেষ্টা চালায় ব্রিটিশরা খুঁজে পাওয়ার আগেই জলের তলদেশ থেকে জাহাজের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ চুরি করার। সে অপচেষ্টা নস্যাৎ করার জন্যই দ্বীপে জেমস বন্ডের আগমন। এখানে এসে পরিচয় সুন্দরী বন্ডকন্যার সঙ্গে। আর তাঁর সঙ্গেই এই ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে কিছু বাক্যালাপ।

প্রাসাদের ব্যালকনিতে লেখক

সিনেমাটি তৈরি করা হয়েছিল ১৯৮২ সালে। প্রায় ৪০ বছর পর বন্ডের দাঁড়ানোর সেই একই স্থানে দাঁড়িয়ে অবাক হয়ে দেখি, সিনেমার সেই দৃশ্যের সঙ্গে এখনকার সময়ের দৃশ্যের খুব একটা অমিল নেই। (চলবে)

ছবি: লেখক