সুন্দরবন যাচ্ছেন? আপনার ভ্রমণ সহজ করবে এই ১০ তথ্য

তিন মাস বন্ধ থাকার পর ১ সেপ্টেম্বর আবারও পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে সুন্দরবন। এখন সুন্দরবন ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। তবে সুন্দরবনে ভ্রমণে যেতে হলে আগে থেকেই সঠিক পরিকল্পনা ও অভিজ্ঞ ট্যুর অপারেটরের সঙ্গে যোগাযোগ করা জরুরি। যাঁরা সুন্দরবন ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন, তাঁদের জন্য এই ১০ পরামর্শ—

১ সেপ্টেম্বর আবারও পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে সুন্দরবনছবি: মারুফ হাসান

১. ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে সরাসরি খুলনায় যাওয়া যায়। খুলনাগামী নন-এসি বাসের ভাড়া ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা। এসি বাসের ভাড়া ৭৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা। ঢাকা থেকে খুলনায় যাওয়ার বেশ কয়েকটি ট্রেনও রয়েছে।

২. খুলনা, বাগেরহাটের মোংলা ও সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে সুন্দরবন ভ্রমণ করা যায়। তবে লঞ্চ বা জাহাজে যেতে হলে খুলনা ও মোংলা থেকে যেতে হবে।

৩. পর্যটকদের সুন্দরবন ঘুরিয়ে দেখানোর জন্য বাগেরহাটের মোংলা, খুলনার চালনা ও সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জ এলাকায় অনেক ট্রলার রয়েছে। এক দিনের সফরের জন্য মোংলা থেকে পশুর নদ হয়ে করমজল ও হাড়বাড়িয়া, খুলনা থেকে রূপসা-শিবসা নদী হয়ে কালাবাগী ও শেখেরটেক এবং সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জ থেকে কলাকাছিয়া ও দোবেকীতে ট্রলার নিয়ে যাওয়া যায়।

৪. ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে গেলে সাধারণত সব ধরনের ফি প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত থাকে। তবে এক দিনের জন্য নিজ উদ্যোগে গেলে প্রতিটি জায়গার জন্য প্রবেশ ফি আলাদাভাবে দিতে হয়।

সুন্দরবন
প্রথম আলোর ফাইল ছবি

৫. মোংলা থেকে খুব সকালে রওনা দিলে করমজল ও হাড়বাড়িয়া দুটি জায়গাই এক দিনে ঘুরে দেখা যায়। মোংলা ফেরিঘাট থেকে সারা দিনের জন্য নৌযান ভাড়া করা যায়। শুধু করমজল ঘুরতে ভাড়া লাগে এক–দুই হাজার টাকা। করমজল ও হাড়বাড়িয়া দুটিতেই যেতে ভাড়া লাগে চার–পাঁচ হাজার টাকা। দুপুরের খাবার সঙ্গে করে নেওয়া ভালো।

৬. খুলনার দাকোপ উপজেলার সুন্দরবন–সংলগ্ন কৈলাশগঞ্জ ও বাণীশান্তা ইউনিয়নে বেশ কিছু ইকো কটেজ গড়ে উঠেছে। অনেক পর্যটক এখন সেখানে থেকে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করেন। খুলনা থেকে মোংলা হয়ে কিংবা খুলনা থেকে চালনা হয়ে এসব কটেজে যাওয়া যায়।

৭. বর্তমানে খুলনা থেকে সুন্দরবনে ভ্রমণকারীদের জন্য প্রায় ৬০টি জলযান রয়েছে। একেকটি জলযানে ৬ জন থেকে শুরু করে ৭৫ জন পর্যন্ত ভ্রমণ করা যায়। ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের (টোয়াস) নিবন্ধিত ট্যুর অপারেটর আছেন ১৩৪ জন।

লঞ্চ বা জাহাজে সুন্দরবনে যেতে হলে খুলনা ও মোংলা থেকে যেতে হবে
ছবি: সাদ্দাম হোসেন

৮. সাধারণত ট্যুর হয় তিন দিন দুই রাতের। বেশির ভাগ সময় শুক্র, শনি ও রোববার ট্যুর থাকে। ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বাড়তি চাহিদার কারণে সপ্তাহে দুটি ট্যুরও আয়োজন করা হয়। কোনো কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করলে আগে থেকেই ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ অগ্রিম দিতে হয়। উৎসব বা দীর্ঘ ছুটির সময় বুকিং বেশি থাকে। তাই কয়েক মাস আগে থেকেই বুকিং দেওয়া ভালো।

৯. খরচের দিক থেকে নন-এসি জলযানে জনপ্রতি ৮ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা এবং এসি জলযানে জনপ্রতি ১৪ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লাগে। এই খরচের মধ্যে অনুমতি ফি, থাকার ব্যবস্থা, গাইড, সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার এবং দুটি স্ন্যাকস অন্তর্ভুক্ত থাকে। অর্থাৎ জলযানে ওঠা থেকে সুন্দরবন ঘুরে ফিরে এসে নামা পর্যন্ত পুরো খরচই এর মধ্যে ধরা থাকে।

১০. সুন্দরবনে ড্রোন ওড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কোনো আগ্নেয়াস্ত্র নিয়েও বনে প্রবেশ করা যাবে না। কারও কাছে এ ধরনের জিনিস পাওয়া গেলে আইনগতভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বন বিভাগ। বনের পশুপাখিরা বিরক্ত হয়, এমন কোনো কাজ করা যাবে না।

আরও পড়ুন