পাঁচ বছরে যে পাঁচ সুবিধা এনেছে গোযায়ান

গোযায়ানের পাঁচ বছর পূর্তি উদযাপনছবি: সংগৃহীত

ষষ্ঠ বছরে পদার্পণ করল গোযায়ান। ১০ আগস্ট ছিল এই প্রতিষ্ঠানের পঞ্চম বর্ষপূর্তি। গত পাঁচ বছরে সম্পূর্ণ নতুন একটি বিভাগ নিয়ে কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি পেয়েছে অভূতপূর্ব সাফল্য। পাশাপাশি বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকায় নিজেদের নাম লিখিয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে পর্যটনশিল্পের মাত্র ৫ শতাংশের অনলাইন কার্যক্রম দেখতে পাওয়া যায়। পাঁচ বছর আগেও অনলাইনে কোনো ভ্রমণসংক্রান্ত সমস্যার সমাধান পাওয়া যেত না। অফলাইনে বুকিং করায় বিভিন্ন দামের তারতম্য নির্ণয় করা সহজ ছিল না। তা ছাড়া গন্তব্যে পৌঁছানোর আগে ছবি দেখে হোটেল বাছাইয়ের সুযোগও ছিল কম। তাই ভ্রমণের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা বা স্বচ্ছতা—কোনোটাই মনমতো পাওয়া যেত না। এসব দিক বিবেচনায় গত পাঁচ বছরে পাঁচটি বিশেষ সুবিধা চালু করেছে গোযায়ান, যার ফলে ভ্রমণপিপাসুদের জীবন হয়েছে আরও সহজ।

১. ফ্লাইট-হোটেল-ট্যুর: একের ভেতর সব

আন্তর্জাতিক ফ্লাইট দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও দ্রুতই তাদের প্ল্যাটফর্মে ‘হোটেল’ এবং ‘ট্যুর’ কেও নিয়ে আসে গোযায়ান। নিজের ভ্রমণ সম্পূর্ণভাবে নিজে সাজিয়ে নেওয়ার স্বাধীনতা দিতে সক্ষম হয় গোযায়ান। শুধু ফ্লাইটের দাম তুলনা করে দেখাই নয়, ঘুরতে যাওয়ার আগেই হোটেল-রুমের ছবিসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা জেনে যাওয়ার ব্যবস্থাও করে দেয় কোম্পানিটি। ফলে খরচ করার আগেই গ্রাহকেরা যাচাই-বাছাই করে দেখে নিতে পারেন, কেমন সেবা তাঁরা পাবেন।

প্রযুক্তির ছোঁয়ার অভাবে টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রেও ছিল সীমাবদ্ধতা। অনলাইনে পেমেন্টের বদলে সব সময় নগদ টাকা নিয়ে ঘুরতে হতো। ফ্লাইট, হোটেল, ট্যুর—সব একসঙ্গে পাওয়ার পাশাপাশি লেনদেনবিষয়ক নানাবিধ সমস্যাও সমাধান করেছে গোযায়ান। অল্প সময়েই তারা ভ্রমণজনিত সমস্যার সামগ্রিক সমাধান এক ছাতার নিচে এনে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে ফেলে।

২. করোনার বিরুদ্ধে প্রযুক্তি দিয়ে যুদ্ধ

২০২০ সালের মহামারিতে বিশ্বব্যাপী পর্যটনশিল্পে রাতারাতি ৯ ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যের ধস নেমে আসে। তখন বাইরে ঘুরতে যাওয়া তো দূরের কথা, ঘর থেকে বের হওয়ার ব্যাপারেও ছিল নানা রকম নিষেধাজ্ঞা। বহির্বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকা অবস্থায় ভ্রমণের কথা চিন্তা করাটাই ছিল দুষ্কর। সেই সময় অনিবার্য ভ্রমণগুলো যাতে নিরাপদ হয়, তা নিশ্চিত করতে গোযায়ান নেমে পড়ে নতুন উদ্ভাবনের খোঁজে।

গোযায়ানের ‘গো-সেইফ’প্রোগ্রামের মাধ্যমে ব্যবহারকারী ব্যক্তিরা যেকোনো আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ভ্রমণসংক্রান্ত যাবতীয় বিধিনিষেধ সম্পর্কে জানতে পারেন। তা ছাড়া এই সময় বিমা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সাধ্যের মধ্যে ঝামেলাহীন আন্তর্জাতিক ভ্রমণ-বিমা কেনার সুযোগও করে দেয় তারা। তবে করোনাকালে তাদের সবচেয়ে বড় অর্জন—আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এবং আরটি-পিসিআর টেস্টসহ একই সঙ্গে বুকিংয়ে ব্যবস্থা করে দেওয়া। এটি সম্ভব হয় সরকার অনুমোদিত বিভিন্ন ল্যাবের সঙ্গে কাজ করে। কোভিডকালীন ভ্রমণের দীর্ঘ প্রক্রিয়া সহজ করতে এই সেবা যাত্রীদের ব্যাপকভাবে সহায়তা করে।

৩. শূন্য শতাংশ ইএমআইয়ে বিদেশ ভ্রমণ

মহামারির প্রকোপ কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় বিদেশ ভ্রমণের আগ্রহ বাড়ে। আন্তর্জাতিক ভ্রমণের উপচে পড়া চাহিদা মেটানোর জন্য গোযায়ান নিয়ে আসে চমকপ্রদ কিছু উদ্ভাবন। বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে পর্যটকদের মূল সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে গোযায়ান নিয়ে আসে শূন্য শতাংশ ইএমআই সুবিধা। বাজেটঘাটতির কারণে ভ্রমণ যেন থেমে না থাকে, সেটা নিশ্চিত করতেই ভ্রমণপিপাসুদের জন্য গোযায়ানের এই পদক্ষেপ। শুধু তা-ই নয়, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার ছাড়াও গোযায়ানের ‘ট্রাভেল লোন’ ব্যবহার করে মানুষ ইচ্ছামতো দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়াতে পারবেন। এ ছাড়া তাদের প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা হয় হাজার হাজার আন্তর্জাতিক হোটেল, যাতে বাংলাদেশে বসেও বিদেশে হোটেল বুকিং করা সম্ভব হয়।

৪. ট্যুরের ধারণা বদল

কয়েক বছর আগেও ‘ট্যুর’ বললে বোঝা যেত অপরিবর্তনীয় এক ভ্রমণসূচি, যেখানে অন্তর্ভুক্ত কার্যকলাপের বাইরে কিছু করার সময় বা সুযোগ থাকে না। পছন্দ হোক বা না-হোক, ট্যুরের বিভিন্ন উপাদান বদলানো অথবা অদল-বদল করে নেওয়াটাও ছিল বেশ কষ্টসাধ্য। নিজের অ্যাডভেঞ্চারগুলো নিজে বেছে নেওয়ার সুযোগ খুব কমই পেতেন ভ্রমণপিপাসুরা। গোযায়ান ট্যুর-সম্পর্কিত আগের সব ধারণা বদলে দেয় ভ্রমণের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো সম্পূর্ণ নিজের মতো সাজিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিয়ে। ভ্রমণকারীরা শুধু যে অভিজ্ঞতাগুলো চায়, সেগুলোই আলাদাভাবে বুক করতে পারে গোযায়ানের মাধ্যমে।

৫. সীমাহীন ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি

ভবিষ্যতে ভ্রমণসংক্রান্ত সব কার্যকলাপ যেন আরও সুবিধায় করা যায়, তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে গোযায়ান। দূর-দূরান্তের দেশ ভ্রমণের চিন্তা মাথায় এলে অনেকের জন্যই প্রথম বাধাটা হয় আর্থিক। কাছাকাছি কোথাও ঘুরতে গেলে এই বাধা অতিক্রম করাটা অপেক্ষাকৃত সহজ। কক্সবাজার ভ্রমণ এবং মেঘালয় ভ্রমণের হিসাবের খাতাটা খুললে দেখা যায়, মাত্র হাজার পাঁচেক টাকার পার্থক্য। কিন্তু একটু দূরের দেশে যেতে চাইলে পার্থক্যটা বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে গোযায়ানের সাহায্য নিতে পারেন। দেশের ভেতরে হোক বা বাইরে ফ্লাইট, হোটেল, ট্যুর—সবকিছুর জন্যই ব্যবহার করতে পারবেন গোযায়ানের ইএমআই সুবিধা; অর্থাৎ এখনই ঘুরতে গিয়ে পরবর্তী এক বছর ধরে কিস্তিতে শোধ করতে পারবেন প্রয়োজনীয় অর্থ। ছয় মাস পর্যন্ত কোনো রকম বাড়তি খরচ ছাড়াই সুবিধাটি উপভোগ করতে পারবেন। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কোনো অনলাইন ভ্রমণের প্ল্যাটফর্ম ফ্লাইটেও ছয় মাস পর্যন্ত শূন্য শতাংশ ইএমআই সুবিধা দিচ্ছে।

নিজেদের ব্যতিক্রমী উদ্ভাবন আর নিরবচ্ছিন্ন সেবা প্রদানের কারণে গত পাঁচ বছরে শুধু জাতীয় পর্যায়ে নয়, বিশ্বমঞ্চে উজ্জ্বল হয়েছে গোযায়ানের নাম। গোযায়ানের মূল লক্ষ্য এখন গ্রাহকদের কাছে ভ্রমণকে আরও স্বাচ্ছন্দ্য করে তোলা।