জলদস্যুদের সঙ্গে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হলো টোকিও ডিজনিল্যান্ডে

টোকিও ডিজনিল্যান্ডে প্রবেশের মূল ফটক
ছবি: লেখক

নব্বই দশকে আমরা যারা টেলিভিশনের পর্দায় বিভিন্ন কার্টুন দেখে বড় হয়েছি, তাদের কাছে মিকি মাউস, গুফি, ডোনাল্ড ডাক, সিম্বা খুব পরিচিত নাম। পত্রিকা-ম্যাগাজিনে পড়েছি, স্বপ্নরাজ্য ডিজনিল্যান্ডে এসব চরিত্রের দেখা পাওয়া যায়। এই ‘বুড়ো’ বয়সে ৬৪তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের বাংলাদেশ গণিত দলের ৬ জনের সঙ্গে অবজারভার হিসেবে জাপানে গিয়ে ডিজনিল্যান্ডে যাওয়ার সুযোগ হলো।

ভাস্কর্যে ওয়াল্ট ডিজনি ও তাঁর বিখ্যাত মিকি মাউস
ছবি: লেখক

মধ্য জুলাইয়ে টোকিওর তাপমাত্রা আর ঢাকার তাপমাত্রার মধ্যে তেমন পার্থক্য টের পেলাম না। ঢাকার কারওয়ান বাজারে দাঁড়িয়ে যেমন গরম লাগে, টোকিওতেও সেই একই গরম। এমনই এক গরমের দিনে ১০৮টি দেশের খুদে গণিতবিদদের সঙ্গে টোকিও ডিজনিল্যান্ড থিম পার্কে যাই। ১১৫ একরের এই জায়গায় সকাল-সন্ধ্যা হাজারো মানুষের ভিড়।

টোকিও ডিজনিল্যান্ডে লেখক

ডিজনিল্যান্ডে প্রবেশের পরই গিফট শপ। টি–শার্ট, মগ থেকে নানা সুভেনির। এরপর তো মাঝেমধ্যেই চমক—এই মিকি মাউস, তো এই সিনডারেলার সামনে পড়ে যাই। পুরো এলাকায়ই কার্টুন চরিত্রদের ঘুরতে–ফিরতে দেখে ছোটবেলায় ফিরে গেলাম। কখনো গান গেয়ে, কখনো শারীরিক কসরত দেখিয়ে আনন্দ দিয়ে যাচ্ছিল তারা।

পুরো পার্কেই নানা ধরনের রাইড আর বিনোদনের অনুষঙ্গ। স্পেস মাউন্টেন নামে বিখ্যাত রাইডটির সামনে লম্বা সারি। সেই রাইডে চড়ে আকাশ বা মহাশূন্যে ঘোরার অনুভূতি মেলে। এত দ্রুত ছুটল যে মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠল। এই রাইডের ধাক্কা সহ্য করতে না করতেই সামনে পড়ল স্প্ল্যাশ মাউন্টেন। বিশাল পর্বত থেকে হুট করে জলপ্রপাতের মধ্যে পড়ে গেলাম। না চাইলেও ভিজতে হলো।

পুরো পার্কেই এমন নানা ধরনের রাইড আর বিনোদনের অনুষঙ্গ আছে

পার্কের এখানে-সেখানে ঘুরতে ঘুরতে আমরা বিগ থান্ডার নামে আরেকটা রাইডের সন্ধান পেয়ে গেলাম। বিশাল একটা ট্রেনে চড়ে এক সোনার খনিতে হারিয়ে গেলাম। খনির অন্ধকারে হুটহাট সামনে এসে হাজির হলো ভয়ংকর দানব কিংবা হাস্যকর সব চরিত্ররা।

হ্রদে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ আছে টোকিও ডিজনিল্যান্ডে
ছবি: লেখক

ডিজনিল্যান্ড যেন সত্যিকারের কল্পরাজ্য। শিশু-কিশোরদের মনোরঞ্জনের জন্য সবই আছে এখানে। আবার যাঁরা বয়স্ক, তাঁদের জন্যও কম চমক নেই। গরমে ঘেমে–নেয়ে ঘুরতে ঘুরতে আমাদের সামনে আসে ল্যান্ড গো সিক নামের রাইড। এই রাইড পৃথিবীর অন্য কোনো ডিজনিল্যান্ডে নেই বলেই যেন একটু বেশি ভিড়। এই রাইডে মনস্টার সিনেমার চরিত্রদের দেখা মিলল।

পাইরেটস অব দ্য ক্যারিবিয়ান নামের রাইডে চড়ে নিজেকে মনে হলো ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো। জলদস্যুদের সঙ্গে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিয়ে টোকিও ডিজনিল্যান্ডকে বিদায় বলি।