নতুন বছরে যে কারণে পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য হয়ে উঠবে দক্ষিণবঙ্গ

কক্সবাজার, কুয়াকাটা, শ্রীমঙ্গল, বান্দরবান, রাঙামাটি—দেশে এগুলোই মূলত পর্যটকদের প্রধান গন্তব্য। জনপ্রিয় এ জায়গাগুলো বছরজুড়েই পর্যটকমুখর থাকে। ২০২৩ সালেও ধারাটা অব্যাহত থাকবে। তবে এর বাইরে নতুন কিছু জায়গা এবং বিষয়ে মানুষের আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে, নতুন বছরে যা আরও বাড়বে।

পেয়ারা বিক্রি করতে বাজারে যাচ্ছেন একজন কৃষক
ছবি: সজীব মিয়া

পিরোজপুর ও ঝালকাঠির ভাসমান পেয়ারা বাজার এখন পর্যটকদের জনপ্রিয় গন্তব্য। আগে এই ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে হলে হাতে অন্তত দুই রাত এক দিন রাখতে হতো। পদ্মা সেতু চালুর পর এখন চাইলে এক দিনেই সেরে ফেলা যায় এই ভ্রমণ। সাতসকালে ঢাকা থেকে বাসে চেপে তিন–চার ঘণ্টায় চলে যাওয়া যায় বরিশাল, সেখান থেকে সিএনজি অটোরিকশায় ৪০ মিনিটেই পৌঁছানো যায় পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার আন্দাকুল ঘাটে। এখান থেকেই নৌকায় শুরু হয় পেয়ারাবাগান ও বাজার ভ্রমণ। দিনভর ঘুরে বিকেলের বাসেই আবার ঢাকায় ফিরে আসা যায়। শুধু এই একটি জায়গা নয়, দক্ষিণবঙ্গের এমন অনেক বেড়ানোর জায়গায় এখন স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন ঢাকাসহ দেশের অন্য এলাকার মানুষ।

ইরাবতী রিসোর্টটি সুন্দরবন ঘেঁষে চালু হয়েছে
ছবি: মারুফ হাসান

সুন্দরবন ও কুয়াকাটা দেশের অন্যতম পর্যটন স্থান। এ দুটি জায়গায় আগে পর্যটক আসার ক্ষেত্রে মূল বাধা ছিল ফেরি। যাতায়াতের দুর্ভোগের কারণে অনেক পর্যটক সুন্দরবন-কুয়াকাটামুখী হতে দ্বিতীয়বার ভাবতেন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এই দুর্ভোগ কমে গেছে। এখন এই পথে নতুন যানবাহন চালু হয়েছে। নতুন নতুন আবাসনের ব্যবস্থা হচ্ছে। বাগেরহাটের মোংলা, খুলনার দাকোপে সুন্দরবন ঘেঁষে চালু হয়েছে রিসোর্ট। দিনব্যাপী সুন্দরবন ভ্রমণের ব্যবস্থাও করছে অনেক ট্রাভেল এজেন্সি।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পর্যটন করপোরেশনের হোটেল মধুমতি
ছবি: সংগৃহীত

শুধু সুন্দরবন বা কুয়াকাটা নয়, পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার তাড়ুয়া সমুদ্রসৈকত, চর কুকরি-মুকরিও জমজমাট পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে উঠছে। পাশাপাশি বরিশাল, পটুয়াখালী, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা, বরগুনা, গোপালগঞ্জেও বেড়েছে মানুষের আনাগোনা। এসব জেলায় এখন নিয়মিত মানুষকে বেড়াতে নিয়ে যাচ্ছে ফেসবুকভিত্তিক নানা ভ্রমণ গ্রুপ। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনও গোপালগঞ্জ ও কুয়াকাটায় নিজস্ব ব্যবস্থায় ট্যুর পরিচালনা করছে। এসব প্যাকেজে থাকছে পদ্মা সেতু, ভাঙ্গা চত্বর, টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজার কমপ্লেক্স, স্মৃতিবিজড়িত স্থান ও তাঁর জন্মভিটা দেখার সুযোগ। অনেকে এই প্যাকেজের সঙ্গে রাখছে বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও বাগেরহাটের মোংলায় রয়েছে পর্যটন করপোরেশনের হোটেল মধুমতি ও পশুর। দুটি হোটেলেই পর্যটকদের সংখ্যা বেড়েছে।

রাজধানী থেকে ঘণ্টা দুয়েকের পথ পেরিয়ে অনেকে হোটেল-রিসোর্টের সন্ধানও করছেন। এমন পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে নড়াইলে গড়ে উঠেছে আধুনিক মানের রিসোর্ট। গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরেও নতুন রিসোর্টের কাজ চলছে। তাই নতুন বছরে পর্যটকদের অন্যতম গন্তব্য হয়ে
উঠবে দক্ষিণবঙ্গ।