পর্বতের নেশায় চাকরি ছেড়েছিলেন, এবার যাচ্ছেন বিশ্বের অষ্টম উঁচু পর্বত অভিযানে

পৃথিবীর অষ্টম উঁচু পর্বত মানাসলু অভিযানে যাচ্ছেন বাংলাদেশের পর্বতারোহী তৌফিক আহমেদছবি: তৌফিক আহমেদের সৌজন্যে

পৃথিবীর অষ্টম উঁচু পর্বত মানাসলু অভিযানে যাচ্ছেন বাংলাদেশের পর্বতারোহী তৌফিক আহমেদ। হিমালয় পর্বতমালার ৮ হাজার ১৬৩ মিটার পর্বতটির চূড়া ছুঁতে তাঁর অভিযান শুরু হবে ৬ সেপ্টেম্বর। এ উপলক্ষে আজ শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজন করা হয় সংবাদ সম্মেলন ও হাতে পতাকা তুলে দেওয়ার অনুষ্ঠান।
তৌফিক আহমেদ পরিচিত তমাল নামে। তিনি ‘অলটিটিউড হান্টার বিডি মাউন্টেনিয়ারিং ক্লাব’ নামে রোমাঞ্চকর ভ্রমণ পরিচালনাকারী প্ল্যাটফর্মের সদস্য। আজকের আয়োজনটি হয় এই ক্লাবের উদ্যোগে। এতে তৌফিক আহমেদের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন বাংলাদেশের প্রথম নারী এভারেস্টজয়ী নিশাত মজুমদার। তিনিই ছিলেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। পর্বতারোহণ প্রশিক্ষক ও চলচ্চিত্র গবেষক মীর শামছুল আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলার ট্রেকার এক্সপ্লোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও অভিযাত্রী নিজাম উদ্দিন এবং রোপ ৪ আউটডোর এডুকেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও পর্বতারোহণ প্রশিক্ষক মহিউদ্দিন মাহি।

আজ শনিবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজন করা হয় সংবাদ সম্মেলন ও তৌফিক আহমেদের হাতে পতাকা তুলে দেওয়ার অনুষ্ঠান
ছবি: অলটিটিউড হান্টার

তৌফিক আহমেদের বেড়ে ওঠা কুমিল্লায়। পাহাড়ের প্রেমে পড়েন কলেজে পড়ার সময়। একসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলই হয়ে ওঠে তাঁর আরেক ঠিকানা। ২০১৭ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর শেষে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়েছিলেন। কিন্তু তত দিনে হিমালয়ের প্রেমে মজে গেছেন বলে চাকরিতে থিতু হতে পারেননি।
পরের বছর চাকরি ছেড়ে ভ্রমণ আয়োজনকেই পেশা হিসেবে নিয়েছেন। শুরুতে পর্যটকদের গাইড হিসেবে দেশের পাহাড়ে যেতেন। তারপর ভ্রমণ পরিচালনা শুরু করেন ভারত ও নেপালের বিভিন্ন পার্বত্য দর্শনীয় স্থানে। বর্তমানে বছরের বড় একটা সময় নেপালের পার্বত্য অঞ্চলেই কাটে তাঁর। তিনি দেশটির এভারেস্ট বেজক্যাম্প, অন্নপূর্ণা বেজক্যাম্পসহ বিভিন্ন গন্তব্যে গাইড হিসেবে বাংলাদেশিদের নিয়ে যান।

আরও পড়ুন
ভারত ও নেপালের বিভিন্ন উচ্চতার পর্বতশৃঙ্গে উঠেছেন এই পর্বতারোহী
ছবি: তৌফিক আহমেদের সৌজন্যে

এ কাজের পাশাপাশি নিজেকেও পর্বতারোহী হিসেবে গড়ে তোলেন তৌফিক। ভারতের নেহরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং থেকে নিয়েছেন পর্বতারোহণের প্রশিক্ষণ। পাশাপাশি দেশটির একটি প্রতিষ্ঠান থেকে রক ক্লাইম্বিংয়ের ওপর মৌলিক ও উচ্চতর প্রশিক্ষণও নিয়েছেন তিনি।


হিমালয়ের বিভিন্ন অভিযানে এরই মধ্যে সাফল্য অর্জন করেছেন তৌফিক। মাউন্ট আমা দাবলাম (৬ হাজার ৮১৪ মিটার), ভাগীরথী-২ (৬ হাজার ৫১২ মিটার), আইল্যান্ড পিক (৬ হাজার ১৬০ মিটার), থারপু চুলি (৫ হাজার ৬৯৫ মিটার), মাউন্ট কানামোসহ (৫ হাজার ৯৭০ মিটার) ভারত ও নেপালের বিভিন্ন উচ্চতার পর্বতশৃঙ্গে উঠেছেন।
তৌফিক আহমেদ বলেন, ‘পর্বতারোহণই আমার ধ্যানজ্ঞান। দীর্ঘদিন এ অভিযানের প্রস্তুতি নিয়েছি। নিজস্ব অর্থায়নেই ৪০ দিনের এই মানাসলু অভিযানে যাচ্ছি। আর আমার এই অভিযানের মধ্য দিয়েই “অলটিটিউড হান্টার বিডি” দেশের নতুন পর্বতারোহণ ক্লাব হিসেবে যাত্রা শুরু করল।’

আরও পড়ুন