ভ্রমণ বদলে দেওয়ার ছয় বছরে গোযায়ান

ফ্লাইট এবং হোটেল বুকিং ছাড়াও সম্পূর্ণ নিজের মতো ট্যুরের সুযোগ এনেছে গোযায়ান

বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ এখন কেবল শখ নয়, প্রয়োজনীয়তায় পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের ভ্রমণ খাতে প্রযুক্তির হাওয়া নিয়ে এসেছে গোযায়ান। প্রযুক্তিভিত্তিক ভ্রমণবিষয়ক এই প্ল্যাটফর্ম গত ছয় বছরে বাংলাদেশের বাজারে ভ্রমণ–সম্পর্কিত নতুন নতুন বহু সেবা নিয়ে এসেছে। আজ ১০ আগস্ট গোযায়ানের ষষ্ঠ বর্ষপূর্তি। এই ছয় বছরে ভ্রমণকে নতুনভাবে দেখার কার্যক্রম চালিয়ে গেছে গোযায়ান।

ছয় বছর আগের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে দেখা যায়, ভ্রমণ বুকিংয়ের প্রক্রিয়াটা ছিল একেবারেই ভিন্ন। ঘুরতে যেতে চাইলে ফোন দিয়ে খোঁজ নিতে হতো বিভিন্ন জায়গায়। কোথায় থাকা উচিত, কীভাবে যাওয়া উচিত—সবই জানতে হতো লোকমুখে শুনে। তা ছাড়া সম্পূর্ণ নতুন কোথাও ঘুরতে যাওয়াটা ছিল খুবই দুরূহ। কারণ, চাইলেই ফ্লাইটের টিকিট হাতের কাছে পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। বিভিন্ন উৎস থেকে খোঁজ নিয়ে দাম, সময় ইত্যাদি তথ্য যাচাই করতে হতো। ভ্রমণ বুকিং করতে গিয়ে এমন নাজেহাল অবস্থা থেকে কিছুটা নিস্তার দিয়েছে গোযায়ানের মতো প্ল্যাটফর্ম। শুধু ফ্লাইট দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও ধীরে ধীরে হোটেল এবং ট্যুর—সবকিছু নিয়েই কাজ করা শুরু করে গোযায়ান।

ষষ্ঠ বছরে আরও উন্নত ভ্রমণসেবা দেশের মানুষের সামনে নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গোযায়ান। বর্তমানে হোক কক্সবাজার বা দূরান্তের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ—মুঠোফোনেই স্বপ্নের ভ্রমণটির বুকিং করে ফেলা যায়। তাই অসম্ভব বলতে ভ্রমণের জগতে আর কিছুই নেই। শুধু তা-ই নয়, নিজের ভ্রমণের প্রতিটি অংশ নিজের সিদ্ধান্ত এবং পছন্দমতো সাজানো সম্ভব। পর্যটনের এই আমূল পরিবর্তনের পেছনে অসামান্য অবদান রেখেছে গোযায়ান। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমের মাধ্যমে বদলে যাচ্ছে একটি প্রজন্মের ভ্রমণের আচার-আচরণ।

গোযায়ানের নিয়মিত সেবা ব্যবহারকারীদের একজন পর্যটক সিমিন রহমান। তিনি বলেন, ‘গোযায়ান আমার স্বপ্নের ছুটি সত্যি করে দিয়েছে। হোটেল, খাবারদাবার, অ্যাকটিভিটি—যেটা যেমন চেয়েছি, তেমনই পেয়েছি। আর পুরো বুকিংটাই একেবারে অনলাইনে করতে পেরেছি। তাই আমার পুরো ট্যুরটা ছিল একেবারেই ঝামেলামুক্ত।’ গোযায়ান থেকে দেশ-বিদেশের বেশ কিছু বুকিং করেছেন তিনি।

সিমিন রহমানের মতোই অনেক গ্রাহকের জীবনে প্রভাব ফেলেছে গোযায়ান। প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকেই পর্যটকের কথা মাথায় রেখে এগিয়ে গেছে। সম্পূর্ণ অনলাইনে ফ্লাইট বুকিং সম্ভব করার পরপরই গোযায়ান নিজেদের প্ল্যাটফর্মে আনে প্রায় সাত লক্ষ দেশি-বিদেশি হোটেলের সমাহার। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি ছিল একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন। কারণ, প্রথমবারের মতো দেশ-বিদেশে পছন্দমতো যেকোনো হোটেল বাংলাদেশি মুদ্রা ব্যবহার করেই বুক করা সম্ভব হয়। এর আগে এই কাজ করার জন্য অনেকেই বিদেশি ওয়েবসাইট ব্যবহার করতেন অথবা একেবারে গন্তব্যে পৌঁছে হোটেল খুঁজতেন। কিন্তু গোযায়ানে বিশাল হোটেলের সমাহার এই সমস্যার অনেকটাই সমাধান করে দেয়। শুধু তা-ই নয়, এর মাধ্যমে পর্যটকেরা ইএমআই সুবিধা ব্যবহার করেও হোটেল বুকিং করতে সক্ষম হন, যাতে ভ্রমণে খরচের চাপটা অনেক কমে যায়।

প্রতিবারই দেশ-বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে গোযায়ান থেকে যাবতীয় সব বুকিং করে থাকেন ইফতেখার হাসান। তিনি বলেন, ‘গোযায়ান ভ্রমণ বুকিংয়ের গৎবাঁধা নিয়মগুলোকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে। আগে যেখানে অনেক জায়গায় ফোন দিয়ে একটা বুকিং নিশ্চিত করা লাগত, সেখানে এখন আমি গোযায়ান ব্যবহার করে ঘরে বসেই সব করে ফেলতে পারি। এতে পুরো ট্যুরটা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা আমার নিজের হাতেই থাকে, অন্য কারও ওপর নির্ভর করা লাগে না।’

ফ্লাইট এবং হোটেল বুকিং ছাড়াও সম্পূর্ণ নিজের মতো করে ট্যুর সাজিয়ে নেওয়ার সুযোগ নিয়ে এসেছে গোযায়ান। চিরাচরিত ট্যুর প্যাকেজের বাইরে গিয়ে গোযায়ান নিয়ে আসে কাস্টোমাইজ ট্যুর বুক করার সুযোগ। অর্থাৎ, পর্যটকেরা ঠিক যেভাবে ঘুরতে চান, ওভাবেই সাজিয়ে নিতে পারবেন নিজেদের ভ্রমণ। পছন্দের বাইরে কোনো কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করারও প্রয়োজন হয় না পর্যটকদের।

গত ছয় বছরে শুধু বাংলাদেশের পর্যটকদের জন্যই নয়, বিশ্বমঞ্চে গোযায়ান উজ্জ্বল করেছে বাংলাদেশের নাম। এখন গোযায়ানের মূল লক্ষ্য নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশব্যাপী পর্যটকের কাছে ভ্রমণকে আরও সহজ, স্বাচ্ছন্দ্যময় ও আনন্দদায়ক করে তোলা।