বিনা ভাড়ায় হাওরের ঐতিহ্যবাহী নৌকায় রাতযাপনের সুযোগ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড় অংশজুড়ে ছড়িয়ে আছে টাঙ্গুয়ার হাওর। হাওরমুগ্ধ ভ্রমণপিপাসুদের বেশির ভাগ এ পথেই টাঙ্গুয়ায় যান। তাই তাঁদের সঙ্গে তাহিরপুরের সাধারণ মানুষের যোগাযোগ বহু পুরোনো। সেই সৌহার্দ্যকে আরও জোরদার করার প্রয়াস নিয়েছে এবার ‘তাহিরপুর নৌপর্যটনশিল্প সমবায় সমিতি’। আগামী ২ জুন ‘হাওর সম্প্রীতি ও পূর্ণিমা উৎসব’–এর আয়োজন করেছে তারা। সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ‘ডাহুক’।
‘হাওর সম্প্রীতি ও পূর্ণিমা উৎসব’ নিয়ে আয়োজকেরা জানিয়েছেন, মূলত এটি দিবা-রাত্রির আয়োজন। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে আগ্রহী ব্যক্তিরা নিবন্ধন করে অংশ নিতে পারবেন। অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা হাওরাঞ্চলের মানুষ ও প্রকৃতির সান্নিধ্য যেমন পাবেন, তেমনি গানগল্পে সন্ধ্যা কাটানোর সুযোগ পাবেন নদীপাড়ের সবুজ প্রান্তরে। সেই সঙ্গে হাওরের ঐতিহ্যবাহী নৌকায় থাকার ব্যবস্থাও করবেন আয়োজকেরা। আর এসবের জন্য কোনো অর্থের প্রয়োজন হবে না।
ডাহুকের প্রতিষ্ঠাতা মাগফি রেজা সিদ্দিক বলেন, ‘হাওরের পর্যটকবাহী নৌকায় এক রাত থাকার সুবিধা আমরা বিনা মূল্যে দিচ্ছি। তবে তিন বেলা খাবারের খরচ হিসেবে জনপ্রতি ৯৯৯ টাকা দিতে হবে।’
মাগফি রেজা জানান, গ্রামবাসীর সহায়তায় তাঁরা তিন বেলা খাবারের আয়োজন করবেন। ২ জুন দুপুরে দেশি মুরগির মাংস, কয়েক পদের ভর্তা, শাকভাজি, ডাল ও সাদা ভাত পাতে দেওয়া হবে। নৈশভোজে থাকবে হাঁসের মাংস, কয়েক পদের ভর্তা, ডাল ভুনা, ভাত। ৩ জুন সকালের খাবারে দেওয়া হবে ভুনা খিচুড়ি, ডিম ও মাছ ভাজা।
আয়োজকেরা ২ জুনের কার্যক্রম সম্পর্কে জানান, নিবন্ধনকারী ব্যক্তিদের সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে পৌঁছাতে হবে সকালে। তারপর ঘাট থেকে নদীপথে কয়েক কিলোমিটার দূরের রাতনশ্রী গ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে। সবুজ মাঠের পাশে নদীতে নোঙর করা থাকবে নৌকা। সবাইকে ঘুরিয়ে দেখানো হবে গ্রাম। তবে কেউ চাইলে নৌকা নিয়ে দূরের হাওরেও ঘুরে আসতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে জ্বালানি ও মাঝির পারিশ্রমিক হিসেবে প্রতি কিলোমিটারে ২০০ টাকা করে দিতে হবে। বিষয়টি আবেদনের সময়ই নিশ্চিত করতে হবে। সন্ধ্যার পর পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় স্থানীয় শিল্পী আর ঢাকা থেকে যাওয়া লোকসংগীতশিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক আয়োজন চলতে থাকবে।
অনুষ্ঠানে একা যেমন অংশ নেওয়া যাবে, তেমনি দল বেঁধেও যেতে পারবেন। তবে একটা দলে সর্বোচ্চ ১৫ জন যেতে পারবেন। আর দলে উপস্থিতির সংখ্যা অন্তত আটজন হলে আলাদা নৌকার ব্যবস্থা থাকবে।
হাওর সম্প্রীতি ও পূর্ণিমা উৎসবে অংশ নিতে আবেদন করা যাবে ৩০ মে পর্যন্ত। নিবন্ধনসহ অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে ডাহুকের (daahuk.org/event) ওয়েবসাইটে।