পাঁচ তারকা হোটেলের বাথরুমে টেলিফোন থাকে কেন
দেশে বা বিদেশে বেড়াতে গিয়ে প্রথমবার কোনো পাঁচ তারকা হোটেলে উঠেছেন। ঝকঝকে হোটেলের রুমে আরামদায়ক বিছানা, নরম তোয়ালে আর সুবাসিত বাথরুম পেয়ে ‘রাজকীয় অতিথি’র অনুভূতি নিচ্ছেন। এমন সময় বাথরুমে ঢুকেই লাগল খটকা। কারণ, বাথরুমে ঢুকতেই চোখে পড়েছে হাই কমোডের পাশে দেয়ালে বসানো একটি টেলিফোন! হোটেলের বেডসাইড বা ডেস্কে ফোন থাকাটাই স্বাভাবিক, কিন্তু বাথরুমে কেন?
একবিংশ শতকে পাঁচ তারকা হোটেলে যাওয়ার আগে আমরা খুঁজি হোটেলটির অবস্থান অভিজাত এলাকা বা গুরুত্বপূর্ণ স্থানের আশপাশে কি না। হোটেলের চোখধাঁধানো স্থাপত্যও কাউকে কাউকে টানে। এ ছাড়া স্পাসহ বিলাসবহুল নানা সুবিধা পাবে কি না। কিন্তু আপনি যদি আশি কিংবা নব্বইয়ের দশকে যান, তাহলে দেখতে পাবেন সে সময় হোটেলের বাথরুম বা টয়লেটে একটি টেলিফোনই ছিল বিলাসিতার প্রতীক। অনেকটা বাথটাবের পাশে টেলিভিশন রাখার মতোই। এই ফোন বসানো হতো অতিথির আরাম ও নিরাপত্তার কথা ভেবে। ফলে অতিথিরা বাথরুম থেকে বের না হয়েই সহজে হোটেল স্টাফের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতেন বা প্রয়োজনীয় সেবা চাইতে পারতেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাথরুমে টেলিফোন থাকার পেছনে দুটি মূল কারণ—নিরাপত্তা ও আরাম।
বাথরুম বা টয়লেটে টেলিফোন রাখা কেন প্রয়োজন—
বিশ্বের অনেক দেশেই হোটেল–শিল্পে এটি একটি মানদণ্ড।
বাথরুমে হঠাৎ পা পিছলে পড়ে যাওয়া, মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বা অন্য কোনো শারীরিক অস্বস্তি, এমনটা হোটেলে ঘটেই। বিশেষ করে অতিথিদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি বা বয়সের কারণে বাথরুমে দুর্ঘটনার শিকার হন। সেই বিপদ থেকে রক্ষা ও দ্রুত সহায়তা পেতে বাথরুমের ফোন বড় ভরসা।
কেউ যদি রুম সার্ভিস অর্ডার করতে চান, রিসেপশনে জরুরি তথ্য নিতে চান বা হঠাৎ জরুরি কোনো কল পান, তাহলে বাথরুমে থেকেও যাতে সেই সুবিধা হাতছাড়া না হয়, তাই এই ব্যবস্থা। পাঁচ তারকা হোটেল মানে শুধু বিলাসিতা নয়, অতিথিকে সর্বোচ্চ আরাম ও সুবিধা দেওয়াই তাদের অঙ্গীকার।
এখন অবশ্য নতুন হোটেলগুলো বাথরুমে টেলিফোনের বদলে ‘ইন্টারকম’ বা ‘প্যানিক বেল’ও বসাচ্ছে। কেউ চাইলে এক বোতাম চাপলেই হাউসকিপার এসে সহায়তা করতে পারেন।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মুঠোফোনের ব্যবহার বেড়েছে। বাথরুম বা টয়লেটে আলাদা টেলিফোন রাখারও প্রয়োজন কমে গেছে। যুক্তরাজ্যের যেসব হোটেলে একসময় ‘বাথটাব থেকে ডায়াল করার’ সুবিধা ছিল, তারাও ধীরে ধীরে এই ব্যবস্থা তুলে দিচ্ছে। তবে বেশির ভাগ হোটেলই মানদণ্ড হিসেবে সুবিধাটা বহাল রেখেছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া