মালদ্বীপ: দ্বীপপ্রেমীদের পছন্দের গন্তব্য

নতুন বছরের শুরুতেই ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টিয়ে অনেকেই যে কাজটা সবার আগে করেন, তা হলো কোন মাসে কতদিন ছুটি, তা খুঁজে দেখা। সাধারণত বছরের সবচেয়ে বড় ছুটিটা পাওয়া যায় দুই ঈদের সময়। এবারও তা-ই। ঈদুল ফিতরের ছুটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে পয়লা বৈশাখের ছুটিও। সব মিলিয়ে মোটামুটি আট থেকে দশ দিনের এই লম্বা ছুটিতে ভ্রমণে না বের হলে কী হয়! বছরের সবচেয়ে বড় ছুটিটা নতুন কোনো জায়গা বা নতুন কোনো দেশ দেখে কাটিয়ে দেওয়ার চিন্তা হয়তো অনেকেই করছেন। তবে কোথায় যাবেন, কীভাবেই বা যাবেন, তা নিয়ে যাঁরা ভাবনায় আছেন, তাঁদের জন্যই আমাদের এই ধারাবাহিক আয়োজন: ঈদের ছুটিতে ভ্রমণ পরিকল্পনা। এ আয়োজনে থাকছে পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন আকর্ষণীয় দেশ ভ্রমণবিষয়ক পরিকল্পনার বিস্তারিত।

ছবি: গোযায়ানের সৌজন্যে

সব ধরনের ভ্রমণপিপাসুর জন্য বছরের সবচেয়ে বড় ছুটিতে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা আরেকটু সহজ করে দিতে আজ থাকছে মালদ্বীপের গল্প। প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে ভালো একটা সময় কাটানোর জন্য অন্যতম একটি রোম্যান্টিক গন্তব্য প্রায় ১ হাজার ২০০ দ্বীপের দেশ মালদ্বীপ। শুধু এশিয়ার মধ্যেই নয়, পুরো পৃথিবীতে এ রকম মনোরম দৃশ্য ও পর্যটনবান্ধব পরিবেশ বিরল।

ছবি: গোযায়ানের সৌজন্যে

২০০৯ সালের আগে বিদেশি পর্যটকদের জন্য শুধু প্রাইভেট দ্বীপগুলো খোলা থাকলেও এখন স্থানীয় দ্বীপগুলোও সবার জন্য উন্মুক্ত। ফলে মালদ্বীপ যাওয়ার খরচটা বেশ সাশ্রয়ী হয়ে এসেছে এবং বেড়ে গেছে যাওয়ার মতো গন্তব্য। এতে খুব সহজেই বিভিন্ন দ্বীপ ঘুরে বেড়ানো যায়। কিন্তু মাথায় রাখবেন, দ্বীপ থেকে দ্বীপ ঘুরতে আপনার অবশ্যই উঠতে হবে স্পিডবোট, ফেরি, বা সি-প্লেনে। হুলহুমালে, মালে শহরের বাইরে আপনি গাড়ি দেখবেনই না হয়তো, পানিপথেই হবে আপনার যাতায়াত। মালে থেকে পানিপথে চলে যেতে পারবেন হানিফারু বে, যেখানে সাঁতার কাটতে পারবেন মান্তা রে মাছের সঙ্গে।

এ ছাড়া ঘুরতে পারবেন মাফুশি দ্বীপে, নীল পানির মধ্যে ছবির মতো সুন্দর একটা দ্বীপ, যেখানে দেখতে পাবেন স্থানীয়দের জীবনযাপন। আবার নিরিবিলিতে ব্যক্তিগত সময় কাটাতে চাইলে আছে শতাধিক রিসোর্ট। সমুদ্রের ওপর বিশ্বমানের এসব রিসোর্ট হানিমুন বা যেকোনো সুন্দর সময় হয়ে ওঠে সিনেমার দৃশ্যের মতো। ফিহালহোহি দ্বীপ পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকলেও আছে ইরু-ফুশি, কুদা হিথি, মিলাইধুসহ অনেক দ্বীপ, যেসবের মধ্যে আপনার পছন্দমতো কিছু না কিছু অবশ্যই পাবেন। গভীর পানিতে মাছের সঙ্গে সাঁতার কাটতে চাইলে বা কাছে থেকে রঙিন প্রবাল দেখতে চাইলে গুলহি দ্বীপসহ আরও দ্বীপে আছে স্কুবা ডাইভিংয়ের সুযোগ।

ছবি: গোযায়ানের সৌজন্যে

তাই মালদ্বীপে গেলে সারাজীবনের জন্য যে অভিজ্ঞতা সবার অবশ্যই নেওয়া উচিত, সেটা হলো ‘স্কুবা ডাইভিং’। স্কুবা ডাইভিং নিয়ে অনেকের মধ্যেই কিছুটা ভয় কাজ করে। তবে এ নিয়ে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন; কারণ, পর্যটকদের সুরক্ষার সব দিক চিন্তা করেই অ্যাক্টিভিটিটি পরিচালনা করা হয়। নিরাপত্তার জন্য আপনার সঙ্গে থাকবে একজন পেশাদার ডুবুরি।

ভিন্নরকম কিছু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে চাইলে চলে যেতে পারেন মানুষের তৈরি হুলহুমালে দ্বীপে। হুলহুমালেতে বা দেশের যেকোনো জায়গায় পাবেন অনেকরকম ফলের জুস আর প্রচুর নারকেল। এ ছাড়া খাবারের মধ্যে আছে অঢেল সামুদ্রিক মাছ। গরুড়িয়া নামের এক পদের মাছের স্যুপ মালদ্বীপের জাতীয় খাবার। ইয়ামস হলো দেশটির একমাত্র শস্য। আর ভাজা ইয়ামস হলো একধরনের সুস্বাদু নাশতা, যার স্বাদ না নিয়ে এলে আফসোস করতে হবে। আর চাইলে আপনি রিসোর্টে আয়োজন করতে পারবেন সমুদ্রের পাশে রোমান্টিক ডিনার।

ছবি: গোযায়ানের সৌজন্যে

মালদ্বীপের একটি বড় সুবিধা হলো অন-অ্যারাইভাল ভিসা। এ ছাড়া মালদ্বীপ বছরব্যাপী গন্তব্য হওয়ায় ট্যুর পরিকল্পনা করাও বেশ সহজ। মালদ্বীপ  দূতাবাসের ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় কী কী কাগজপত্র প্রয়োজন তা দেখে নিতে পারবেন। মালদ্বীপের ফ্লাইট ও রিসোর্ট বুকিং করতে আপনি অনলাইন ট্রাভেল প্ল্যাটফর্ম গোযায়ান ব্যবহার করতে পারেন। রিসোর্টের বিবরণে দেখে নিতে পারবেন কী কী অ্যাক্টিভিটি বা সুযোগ-সুবিধা আছে। গোযায়ান–এ গেলেই সব বিস্তারিত একসঙ্গে পেয়ে যাবেন, যা আপনার পুরো ভ্রমণ পরিকল্পনা করে দেবে আরও সহজ।

ছবি: গোযায়ানের সৌজন্যে

একটু গবেষণা করে পরিকল্পনা করলে বেশ কম টাকায় এবং সময় সাশ্রয়ী অনেক অ্যাক্টিভিটি খুঁজে পাবেন।তাই মালদ্বীপে জীবনের অন্যতম স্মরণীয় সফর করতে আজই শুরু করে দিন আপনার পরিকল্পনা।