রিসাং ঝরনার কলতান

খাগড়াছড়ির রিসাং ঝরনা l প্রথম আলো
খাগড়াছড়ির রিসাং ঝরনা l প্রথম আলো

খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার পশ্চিমে রিসাং ঝরনা। মূল সড়ক থেকে নেমে খানিকটা দক্ষিণে গেলেই শোনা যায় ঝরনা কলতান।
ঝরনায় যাওয়ার পথটাও দারুণ রোমাঞ্চকর। দূরের উঁচু-নিচু সবুজ পাহাড়। জুমঘর, বুনো ঝোপসহ নাম না জানা অসংখ্য বুনো ফুল যেন অভ্যর্থনা জানাবে। পরিবেশটাই এমন যে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। যেদিকে চোখ যায় শুধু সবুজের সমাহার। পাহাড়ের বিভিন্ন পাখির কিচিরমিচির শব্দ।
গাড়ি থেকে নেমে ঝরনায় পৌঁছার আগে পাহাড় থেকে নামতে হবে। পাহাড় নামার পরেই ২৫০ ধাপের বিশাল এক সিঁড়ি। সেই সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতেই ঝরনার ধ্বনি। সিঁড়ি শেষ না হতেই ঝরনার দেখা পাওয়া যায়। ঝরনা কাছে গেলে এক পবিত্র স্নিগ্ধতায় দেহ মন ভরে ওঠে। ১২০ ফুট উঁচু পাহাড় থেকে পড়ে ঝরনার পানি। ঝরনার স্বচ্ছ শীতল জলে চাইলে সাঁতার কাটা বা গোসল করার সুবিধা আছে।
২০০২ সালের দিকে এটি সবার নজরে আসে। ‘রিসাং’ শব্দটি মারমা সম্প্রদায়ের ভাষা থেকে এসেছে। মারমা ভাষায় ‘রি’ শব্দের অর্থ পানি এবং ‘সাং’ অর্থ লাফিয়ে পড়া। অর্থাৎ রিসাংয়ের অর্থ উঁচু স্থান থেকে জলরাশির লাফিয়ে পড়াকে বোঝায়। তবে এখানকার স্থানীয় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকজন ‘তেরাং তৈকালাই’ নামে চেনে ঝরনাটি। এতে ‘তেরাং’ অর্থ পানি আর ‘তৈকালাই’ অর্থ ওপর থেকে লাফিয়ে পড়া।

কীভাবে যাবেন: নগরের অক্সিজেন ও কদমতলী বিআরটিসি বাস টার্মিনাল থেকে সরাসরি খাগড়াছড়ি আসা যায় বাসে করে। জনপ্রতি ভাড়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা। খাগড়াছড়ি শহর বাস টার্মিনাল থেকে মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাস বা জিপে করে খাগড়াছড়ি থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার গিয়ে খাগড়াছড়ি-মাটিরাঙ্গা সড়কের ঝরনার মুখ রাস্তায় নামতে হবে। সেখান থেকে এক কিলোমিটার দক্ষিণে গেলেই রিসাং ঝরনা। গাড়ি অনুযায়ী ভাড়া হয়ে থাকে। তা ছাড়া প্রতি ঘণ্টায় লোকাল বাস চলাচল করে। ভাড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা।