বিয়ের আগে ফটোশুটে...

পোশাক, গয়না, অতিথি আপ্যায়ন, ফটোশুট, সিনেমাটোগ্রাফি—সব মিলিয়ে নতুন জীবনের শুরুতে খরচ বিস্তর। খরচ বাঁচাতে গিয়ে প্রি–ওয়েডিং ফটোশুটটা কি বাদ দিয়ে দেবেন, নাকি কম খরচে করিয়ে নেবেন? এমন নানা ভাবনা আসতে পারে আপনার মনে। প্রি–ওয়েডিং ফটোশুটে কিছু বিষয় খেয়াল রাখুন।

একজন আলোকচিত্রী দিয়েই কিন্তু প্রি–ওয়েডিং ফটোশুট হতে পারে। সে ক্ষেত্রে খরচ হতে পারে সাড়ে আট হাজার টাকা। তবে এদিকে আবার যুগের চাহিদা সিনেমাটোগ্রাফি। সেই চাহিদা পূরণ করতে চাইলে কিন্তু ভিডিও করার জন্য আরেকজন ব্যক্তিকে প্রয়োজন হবে। খরচটাও একটু বাড়বে। বর–কনে ছাড়া অন্য কারও ছবি তোলাতে চাইলেও যোগ হবে বাড়তি খরচ। কোথায় শুট হচ্ছে, কতটা সময় লাগছে—এসবের ওপরও নির্ভর করে খরচ। তবে ছবি বা ভিডিও সুন্দর হবে কি না, তা কেবল খরচের ওপরই নির্ভর করে না; আপনার নিজের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ।

প্রি–ওয়েডিং ফটোশুট এখন বিয়ের আয়োজনে জনপ্রিয় নাম
মডেল: সায়রা ও রেহান, ছবি: নকশা

ভাবতে হবে নানা দিক

জলছাপ ফটোগ্রাফি অ্যান্ড ফিল্মসের প্রতিষ্ঠাতা নিপুণ হাজরা বলেন, সৌন্দর্যবোধ আপেক্ষিক। সবার রুচি এবং চাওয়া এক নয়। যাঁদের ছবি তোলা হচ্ছে এবং যিনি ছবি তুলছেন, প্রত্যেকের জন্যই তা সত্য। আবার একজন ফটোগ্রাফারের শৈল্পিক কাজের মানকে নির্দিষ্ট কোনো মানদণ্ডে বিচার করাও সম্ভব নয়। তবে তারপরও ফটোগ্রাফারের দক্ষতার ওপর শুটের মান নির্ভর করে। শুটের জন্য যেসব অনুষঙ্গ ব্যবহার করা হয়, সেগুলোর জন্য কিছু খরচ যুক্ত হতে পারে।

আজকের দিনে খোলামেলা জায়গায়, দিনের আলোয় প্রি–ওয়েডিং শুট করার চল রয়েছে। এ রকম কিছু ভেন্যুতে শুটের জন্যও প্রতি ঘণ্টায় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে হয়। এসব খরচ এবং নিজেদের রুচির সমন্বয় করে সুন্দর একটি ফটোশুটের আয়োজন করে নিতে পারেন বর–কনে। তাঁদের পোশাক এবং যেখানে ছবি তোলা হবে, সেখানকার সাজসজ্জায় দারুণ কোনো থিম ব্যবহার করলে ছবিগুলো সুন্দর হয়। একই প্রতিষ্ঠান থেকে বিয়ের আরও কিছু আয়োজনের ছবি তোলানো হলে প্রি–ওয়েডিং শুটের ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা ছাড় পাওয়া যায়।

খোলামেলা জায়গায়, দিনের আলোয় প্রি–ওয়েডিং শুট করার চল রয়েছে
ছবি: প্রথম আলো
শৈল্পিক স্থাপত্য, ঐতিহাসিক স্থান কিংবা দর্শনীয় রিসোর্টে তোলা ছবি বেশ অন্য রকম দেখায়। সকাল কিংবা বিকেলের মিষ্টি আলোয় ছবি হয় চমৎকার। প্রি–ওয়েডিং শুটের জন্য বর-কনের পোশাক সাদামাটা হলেই ভালো।

সবুজের মাঝে, সৌন্দর্যের খোঁজে

ড্রিমস ইভেন্ট ফটোগ্রাফির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম ইসলামও বলছিলেন বর–কনের রুচি এবং চাহিদার কথা। আজকাল ঢাকার বর-কনেদের অনেকেই ঢাকার বাইরে গিয়ে ছবি তুলতে চান। সে ক্ষেত্রে মূল খরচের সঙ্গে যোগ হয় ফটোগ্রাফারের যাতায়াত খরচ। আবার নিজেরাও তাঁর যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দেওয়া যেতে পারে।

ওয়েডিং ডায়েরি বাংলাদেশের কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজার শেহেজীন আফরিন সুন্দর ছবির জন্য সুন্দর জায়গা, সঠিক সময় এবং সঠিক পোশাক বাছাইয়ের ওপর জোর দিলেন। শৈল্পিক স্থাপত্য, ঐতিহাসিক স্থান কিংবা দর্শনীয় রিসোর্টে তোলা ছবি বেশ অন্য রকম দেখায়। সকাল কিংবা বিকেলের মিষ্টি আলোয় ছবি হয় চমৎকার। প্রি–ওয়েডিং শুটের জন্য বর-কনের পোশাক সাদামাটা হলেই ভালো। শাড়ি-পাঞ্জাবিতেই হয় টিপটপ সাজ। রং বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বৈপরীত্য আনলে ছবি হয় সুন্দর। কে. নাসিফ ফটোগ্রাফি ওয়েডিং অ্যান্ড ইভেন্টসের রিলেশনশিপ ম্যানেজার শাহরিয়ার ইসলামও বলছিলেন, সুন্দর ছবির জন্য পরিকল্পনা হতে হবে ঠিকঠাক। প্রাকৃতিক আলো, পোশাক, জায়গা—সুন্দর ছবির জন্য সবকিছুই গুরুত্বপূর্ণ।

সকাল কিংবা বিকেলের মিষ্টি আলোয় ছবি হয় চমৎকার
ছবি: প্রথম আলো

 সময় অমূল্য

প্রি–ওয়েডিং শুটে সময়কে গুরুত্ব দিতে হবে। সময়ের সঙ্গে বদলে যায় আলো। যে সময় ছবি তোলার জন্য আপনি ফটোগ্রাফারকে বলে রেখেছেন, নিজেই যদি তার ব্যত্যয় ঘটান, তাহলে কিন্তু মুশকিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে পারে ভিড়। চাইলেই তখন মনের মতো জায়গায় ছবি তোলার সুযোগ আপনি আর না-ও পেতে পারেন। এমনটাই বলছিলেন ব্রাইডাল হারমনির সমন্বয়ক হাফিজুর রহমান। পাঁচ ঘণ্টার জন্য নির্দিষ্ট প্যাকেজ নেওয়ার পর প্রয়োজনে সময় বাড়াতে হলে সে ক্ষেত্রে ঘণ্টাপ্রতি বাড়তি খরচ গুনতে হবে বলেও জানান তিনি। যতজন ফটোগ্রাফার নেওয়া হবে, তাঁদের প্রত্যেকের জন্যই যুক্ত হবে এই বাড়তি খরচ।

আরও পড়ুন