১৬ সেকেন্ডের ১৬টি ছবি বানিয়েছেন তাঁরা

১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে ১৬ সেকেন্ডের ১৬টি ছবি বানানো হবে—এই ছিল ভাবনা

স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবির প্রতি আগে থেকেই একরকম ঝোঁক ছিল ইশতিয়াক ফেরদৌসের। কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে পড়েন তিনি। তাঁর ভাষ্য, ‘যখন দেখি একটা শর্টফিল্ম খুব অল্প সময়েই বড় একটা বার্তা দেয়, তখন মনে হয় আমরা শুধু সময়টাই বাঁচালাম না, বরং একটা বড় কাজ অল্প সময়ে করে ফেললাম।’ স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবিকে সমস্যা সমাধানের একটা মাধ্যমও মনে করেন তিনি। এ থেকেই ব্যতিক্রমী একটা উদ্যোগের শুরু।

১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে ১৬ সেকেন্ডের ১৬টি ছবি বানানো হবে—এই ছিল ভাবনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে দিতেই আইডিয়াটা মাথায় আসে। ঠিক হয়, ১৬টি সামাজিক সমস্যা তুলে ধরবেন নির্মাতারা। ইশতিয়াক ফেরদৌস বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বরে ১৬ শতাংশ ছাড়ে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি হয়। বিজয়মেলা, বিজয় উৎসব হয়। কিন্তু আমাদের তো সমস্যার সমাধানও খোঁজা দরকার।’ পরিচিত-অপরিচিত বিভিন্ন জনের কাছে গিয়েছেন তাঁরা। শুনেছেন মানুষের বিভিন্ন সমস্যার কথা। এরপর আলোচনা করে ঠিক করেছেন, কোন ১৬টি সমস্যা নিয়ে কাজ করবেন।

আরও পড়ুন

কাকতালীয়ভাবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৫২ শিক্ষার্থী এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ৫২ সংখ্যাটিও এখানে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দেয়। চারুকলা বিভাগের ইফতিয়াক আহমেদ, লোকপ্রশাসনের হাম্মাদ তালুকদার, বায়োমেডিকেল প্রকৌশল বিভাগের অলিক কুমার শিকদার, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের শফিক মাহমুদ, সমাজকল্যাণ বিভাগের সাদিয়া সাবরিনা, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের এ জেড এম তাউসিফ, মার্কেটিং বিভাগের বর্ণালি বর্ণাসহ অনেকেই অংশ নিয়েছেন কর্মযজ্ঞে। পরিচালনা ও চিত্রনাট্যে ছিলেন ইশতিয়াক ফেরদৌস। এ ছাড়া সহকারী পরিচালক হিসেবে কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের নাইমুল ফারাবি এবং চিত্রগ্রাহক হিসেবে লোকপ্রশাসন বিভাগের ইজাজ আহমেদ কাজ করেছেন।

বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যুক্ত ছিলেন এই প্রকল্পের সঙ্গে
ছবি: সংগৃহীত

১৬টি ছবির নাম থেকেই সমস্যাগুলো সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়—হলুদ প্রচারণা, আবর্জনার জীবন, দ্বিমুখিতা, বৈষম্যতা, প্রতিহিংসা, দায়িত্বহীনতা, অসচ্ছলতা, অসমতা, আত্মকেন্দ্রিকতা, অসামাজিকতা, কৃত্রিমতা, অপরিণত শিক্ষা, বাক্‌পরাধীনতা, অযোগ্যতার যোগ্যতা, হয়রানি এবং সাংঘর্ষিকতা।

আরও পড়ুন

পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে শুটিং করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাখি চত্বর থেকে মেহেদি উদ্যান, শিউলিতলা, ডায়না চত্বর, আমতলা, শহীদ জিয়াউর রহমান হল, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, মূল ফটক, পাই চত্বর, বাসস্ট্যান্ড, টিএসসি, ইবি লেক, জিয়া মোড় ও কফি কর্নারে হয়েছে দৃশ্যধারণ। ছয় দিন ধরে শুটিং করেছেন তাঁরা।

ইশতিয়াক বলেন, ‘সামনে পরিবেশ নিয়ে কাজ করতে চাই। পরিবেশ, সবুজায়ন, এসব আমাকে খুব টানে। পরিবেশ নিয়ে আমরা কী ভাবছি, পরিবেশই-বা আমাদের নিয়ে কী ভাবছে, সেটিই কাজের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করব।’