মুখই সারিয়ার ক্যানভাস

নানা থিমভিত্তিক ছবি আঁকেন সারিয়া আবেদীন
ছবি: সারিয়া আবেদীনের সৌজন্যে

মুখে পতাকা এঁকে, নাম লিখে আমরা অনেকেই প্রিয় দলকে সমর্থন করি। বিজয় দিবস কিংবা নববর্ষের মতো বিশেষ উপলক্ষেও আমরা মুখতে রাঙাই। মুখ বা শরীরে আঁকা কিন্তু সারা বিশ্বেই একটি জনপ্রিয় শিল্প। সেই শিল্পেরই চর্চা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী সারিয়া আবেদীন। ডাকনাম ইতু।

মুখমণ্ডলকে ক্যানভাস বানিয়ে আঁকা শুরু করেন ২০২০ সালে
ছবি: সারিয়া আবেদীনের সৌজন্যে

ছোটবেলায় রংতুলি হাতে কাগজ রাঙাতেন সারিয়া। মুখমণ্ডলকে ক্যানভাস বানিয়ে আঁকা শুরু করেন ২০২০ সালে। করোনাকালের অবসরে চর্চাটা আরও বেগ পায়। আঁকতেন, অনলাইনে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। আর এখন তো কোনো কোনো প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবেও ডাক পান। মডেলিং-সংক্রান্ত নানা কাজে মুখে ছবি এঁকে তাঁর কিছু আয়ও হয়।

ফেস পেইন্ট, পোস্টার কালার, বিভিন্ন মেকআপের সামগ্রী, কাজের জন্য নানা কিছু ব্যবহার করেন সারিয়া। এসব উপকরণ ত্বকের জন্য কতটা নিরাপদ? সারিয়া বলেন, ‘চার বছর হলো কাজ করছি। এখন পর্যন্ত কোনো ঝুঁকির সম্মুখীন হইনি। তবে অনেকের ত্বক খুবই স্পর্শকাতর হয়। তাঁদের ক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে, রংগুলো পরীক্ষা করে তারপর ব্যবহার করার। প্রতিটি রঙের গায়ে লেখা থাকে কী কী রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে, কোনটার পরিমাণ কত। এসব পড়ে বোঝা যায়, কোনটাতে কী আছে।’

মুখে-শরীরে তিন শ’র বেশি ছবি এঁকেছেন এখন পর্যন্ত
ছবি: সারিয়া আবেদীনের সৌজন্যে

হ্যালোইন, সাকরাইন, পয়লা বৈশাখ, বইমেলার মতো উৎসবে নানা প্রকল্পে সারিয়া কাজ পান। মুখে-শরীরে তিন শ’র বেশি ছবি এঁকেছেন এখন পর্যন্ত। সামাজিক যোগোযোগমাধ্যমেই তাঁর কাজ বেশি আলোচনায় এসেছে।

পেশাদারভাবেও ফেস আর্ট করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী
ছবি: সারিয়া আবেদীনের সৌজন্যে

যেকোনো নতুন ধারণা নিয়ে কাজ করারই অনেক ঝক্কি। দেশের অনেকের কাছেই ‘ফেস আর্ট’ বিষয়টা নতুন। এই চ্যালেঞ্জ সারিয়া উপভোগই করেন। বলছিলেন, ‘শিল্পের এই ধরন যখন সবার সামনে তুলে ধরি, আমার মনে হয় আমি একটা ইতিহাস তৈরি করছি। কেউ আমার শিল্পকে বুঝতে না চাইলেও নিরাশ হই না। মনে হয়, আরও ভালো ভালো কাজ করতে হবে। কাজ দিয়েই মানুষের মন জয় করতে হবে।’ জানালেন, দেশের বাইরে গিয়ে ফেস আর্ট শেখা, আর এ নিয়ে গবেষণার আগ্রহও আছে তাঁর।

বিভিন্ন যানবাহনের থিমে এই ফেসপেন্টগুলো বেশ আলোচিত হয়েছিল
ছবি: সারিয়া আবেদীনের সৌজন্যে