মেক্সিকো ও ফ্রান্সের এই যুদ্ধকে কেন ‘পেস্ট্রি যুদ্ধ’ বলে, জানেন?

বিভিন্ন ধরনের পেস্ট্রি
ছবি: সংগৃহীত

১৮৩৮ সালের ২৭ নভেম্বর। তুমুল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ল মেক্সিকো ও ফ্রান্স। তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলল সেই যুদ্ধ। অবশেষে মেক্সিকো পিছু হটলে জিতে গেল ফ্রান্স। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, জিতে গেলেন রেমোঁতেল নামের ফরাসি একজন পেস্ট্রি দোকানদার!

ব্যাপারটা একটু খোলাসা করে বলা যাক। যুদ্ধের বছর দশেক আগে মেক্সিকোতে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল। সেই সময় কতিপয় লুটেরা রেমোঁতেলের পেস্ট্রির দোকানে হামলা চালায়। ভাঙচুর করে, সব পেস্ট্রি খেয়ে ফেলে, ক্যাশবাক্স লুট করে। রেমোঁতেল মেক্সিকো সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। কোনো সুরাহা না পেয়ে তিনি ফরাসি সরকারের কাছে অভিযোগ করেন। এক দশক পর সেই অভিযোগ নজরে আসে ফরাসি রাজা লুই ফিলিপের। ফরাসি সরকারের কাছে এমনিতেও মেক্সিকোর অনেক দেনা ছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হয় পেস্ট্রি দোকান–সংশ্লিষ্ট নতুন যন্ত্রণা। মেক্সিকান সরকার দেনা পরিশোধে অস্বীকৃতি জানাতেই রাজা ফিলিপ বিশাল নৌবহর পাঠিয়ে দিলেন। ব্যস, শুরু হয়ে গেল যুদ্ধ। ইতিহাসে যুদ্ধটি পেস্ট্রি যুদ্ধ নামে পরিচিত।

আজ ৯ ডিসেম্বর, পেস্ট্রি দিবস
ছবি: সংগৃহীত

পেস্ট্রির মতো সুস্বাদু খাবারের সঙ্গে যুদ্ধের মতো ধ্বংসাত্মক বিষয়ের নাম জড়িত থাকাটা দুঃখজনক। তবে এতে মানবসভ্যতার কিছুটা ক্ষতি হলেও পেস্ট্রির কিন্তু হয়নি। বরং এর পরিচিতি বেড়েছে। প্রাচীন মিসর, গ্রিস, রোমান—তথা ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে প্রথম এই খাবারের প্রচলন হয়। এরপর মুসলিম শাসকদের হাত ধরে ইউরোপে আসে এটি। ফ্রান্স ও ইতালির রেনেসাঁর সময় দারুণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে মুখরোচক পেস্ট্রি। ধীরে ধীরে সারা পৃথিবীতেই ছড়িয়ে যায় দারুণ এই খাবার। বর্তমানে খুব কম মানুষই আছেন, যাঁরা পেস্ট্রি অপছন্দ করেন।

আজ ৯ ডিসেম্বর, পেস্ট্রি দিবস। দিনটি পালিত হয় যুক্তরাষ্ট্রে। চাইলে আমরাও কিন্তু পালন করতে পারি। রেসিপি জেনে নিয়ে বাড়িতে বানাতে পারি জিবে জল আনা পেস্ট্রি। পরিবারের সবাই মিলে পেস্ট্রিময় একটা দিন বা সন্ধ্যা কাটানো যেতেই পারে।

সূত্র: ডেজ অব দ্য ইয়ার