ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় বুটেক্সের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম আমির হামজা
বড় ভাই সুফিয়ান তানিম বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী। পড়ালেখা করছেন পুরকৌশলে। অতএব অনুপ্রেরণার খোঁজে আমির হামজাকে খুব একটা দূরে তাকাতে হয়নি। এ বছর বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রথম হয়েছেন নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পেরোনো এই শিক্ষার্থী।
কলেজজীবনের শুরু থেকে পড়াশোনায় নিয়মিত ছিলেন আমির হামজা। চারপাশে মেধাবীদের উপস্থিতি তাঁকে উদ্যমী করেছে। পরিশ্রমের ফল পেতেও দেরি হয়নি। একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় ২ হাজার ১০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৩তম হন তিনি। আর দ্বিতীয় বর্ষের টেস্ট পরীক্ষায় হন ২৪তম। এই ধারাবাহিকতা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা পর্যন্ত বজায় রেখেছেন। এ বছর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেলসহ মোট সাতটি ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে অষ্টম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটে পঞ্চম, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে (আইইউটি) ষষ্ঠ, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে (এমআইএসটি) ৪৭তম এবং এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় ৩৮০১তম স্থান অর্জন করেন। তবে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলটাই আলাদা করে বলতে হয়—সেখানে প্রথম হয়েছেন তিনি।
আমির বলেন, ‘প্রথম হওয়ার খবর সবার আগে মা-বাবা, ভাইয়াদের জানাই। এরপর আত্মীয়স্বজন, বন্ধুদের। সবাই অনেক খুশি হয়েছে। অভিনন্দন জানিয়েছে।’
‘ধৈর্য’ আর ‘লেগে থাকা’ ছিল আমিরের মূলমন্ত্র। নিয়মিত ক্লাস করেছেন, পরীক্ষা দিয়েছেন। এই ‘একাগ্রতা’ তাঁকে এগিয়ে রেখেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য আপনার পরামর্শ কী? জানতে চাইলে আমির বলেন, ‘প্রথমেই লক্ষ্য ঠিক করে নিতে হবে। সে অনুযায়ী পড়াশোনা করতে হবে। বেশি বেশি চর্চার মধ্যে থাকতে হবে। কতক্ষণ পড়ব বিবেচনা না করে, পড়া শেষ না হওয়া অবধি পড়ার অভ্যাস করতে হবে; তবেই ভালো ফল করা সম্ভব।’
এতগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফল পাওয়া আমির শুধু যে পড়ার বইয়েই মুখ গুঁজে থাকেন, তা নয়, খেলাধুলাতেও তিনি সক্রিয়। স্কুলে ক্রিকেট, দাবা ও হ্যান্ডবল টুর্নামেন্ট খেলেছেন। বিভিন্ন অলিম্পিয়াডেও নিয়মিত অংশ নিয়েছেন তিনি।
ভাইয়ের মতো বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবেন, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগে পড়বেন—এমনটাই ছিল তাঁর প্রত্যাশা। ১৯ মার্চ বুয়েটের ফল প্রকাশের পর দেখা গেল, পছন্দের বিষয়ই পেয়েছেন। কৃতী এই শিক্ষার্থী জানালেন, নবম-দশম শ্রেণি থেকে গণিত ও পদার্থবিদ্যার প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। এ জন্যই তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশলে পড়ার ইচ্ছা। ভবিষ্যতে একজন সফল প্রকৌশলী হতে চান আমির হামজা।