যে কারণে কিছু নারী সঙ্গী হিসেবে বয়স্ক পুরুষ পছন্দ করেন

সময়ের সঙ্গে ক্রমে মানুষের এই উপলব্ধি হচ্ছে যে ভালোবাসা বয়স গুনতে জানে না। আর বর্তমান সময়টাও একটা সম্পর্কের ক্ষেত্রে বয়সের পার্থক্যকে সব সময় বাঁধা হিসেবে দেখে না। জোরজবরদস্তি করে অল্প বয়সী কনের সঙ্গে বয়সী বরের বিয়ের প্রসঙ্গ অবশ্য আলাদা কথা। তবে স্বেচ্ছা সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ রকম অনেক উদাহরণ আছে, যেখানে নারীরা জীবনসঙ্গী হিসেবে নিজের চেয়ে বয়সে বেশ কয়েক ক্যালেন্ডার এগিয়ে, এমন পুরুষকে বেছে নেন। কিন্তু কেন? প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে ভারতের অনলাইন মাধ্যম মিডিয়াম ডটকম।

১.

বেশ কয়েকটি কারণের কথা জানিয়েছে মিডিয়াম ডটকম। এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে অভিজ্ঞতা। বলিউড তারকা শহীদ কাপুর ও স্ত্রী মীরা রাজপুতের বয়সের পার্থক্য ১৩ বছর। মীরাকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল শহীদের কোন দিকটি সবচেয়ে সেরা? উত্তরে মীরা বলেছিলেন, ‘ও অভিজ্ঞতায় সেরা। আর সেটিই আমার সংসারের সবচেয়ে বড় শক্তি। ও অনেক পর্যায় পার করে এখানে এসেছে। ফলে সেই শিক্ষাগুলোর জন্য আমাকে সেই অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যাওয়ার দরকার নেই। শহীদের সঙ্গে থেকেই আমি পরিণত হই।’

স্ত্রী মীরা রাজপুত মনে করেন, অভিজ্ঞতাই শহীদ কাপুরের শ্রেষ্ঠ সম্পদ
ছবি: সংগৃহীত

২.

একটি মজার পর্যবেক্ষণ জানিয়েছে মিডিয়াম ডটকম। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন তরুণ পুরুষ প্রযুক্তিসহ আরও নানা কিছু নিয়ে মেতে থাকেন। ফলে এত কিছুর ভেতরে তিনি অনেক সময়ই তাঁর সামনে থাকা সঠিক সমাধান বা সঠিক সুযোগ দেখতে পান না। এমনকি ভুল ব্যক্তিকে সঙ্গী হিসেবে বাছাই করেন। কিন্তু একজন বয়স্ক পুরুষ তাঁর সামনে থাকা বাস্তবতা আর অপর পক্ষের কাছ থেকে কী চান, সহজেই তা পরিষ্কার দেখতে পান।

৪১ বছর বয়সী কারিনা কাপুর আর ৫২ বছর বয়সী সাইফ আলী খানের এক দশকের সুখের সংসার
ছবি: সংগৃহীত

৩.

সাধারণত একজন বয়স্ক পুরুষের ‘হিডেন অ্যাজেন্ডা’ থাকে না, যা সততার সঙ্গে একটা সম্পর্ক শুরু করার জন্য খুবই জরুরি।

৪.

যা কিছু বাইরে থেকে দেখা যায় বা সহজেই পরিমাপ করে ফেলা যায়, একজন নারীর এসব দিককেই অধিক গুরুত্ব দেন একজন তরুণ পুরুষ। অন্যদিকে একজন বয়স্ক পুরুষ একজন নারীর মন আর মস্তিষ্কের সৌন্দর্যকে অধিক গুরুত্ব দেন। তাঁর সঙ্গী তাঁর কাছ থেকে কী চান, সেটিকে গুরুত্ব দেন।

আইনজীবী আমাল ক্লুনিও জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন তাঁর চেয়ে ১৭ বছর এগিয়ে থাকা অস্কারজয়ী অভিনেতা ও প্রযোজক জর্জ ক্লুনিকে
ছবি: সংগৃহীত

৫.

সম্পর্কে নারীদের চাওয়ার সঙ্গে বয়স্ক পুরুষদের চাওয়া সমান্তরালে থাকে। একজন নারী ও একজন বয়স্ক পুরুষ উভয়েই শারীরিক সম্পর্কের চেয়ে মানসিক স্থিতি, মিল আর নিজের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেন। অনেক নারীই এখন বিয়ের পরই বাচ্চা নিতে চান না। নিজের শখ নিয়ে থাকতে চান, ক্যারিয়ার বা নিজের একটা উদ্যোগকে দাঁড় করাতে চান। একজন বয়স্ক পুরুষ সহজেই অপর পক্ষের প্রয়োজন বুঝে সেটির পাশে থাকেন।

৬.

একজন বয়স্ক পুরুষ নারীর মনস্তত্ত্ব ভালো বোঝেন। তিনি সম্পর্কে একজন তরুণ পুরুষের তুলনায় অধিক অটল। তিনি সম্পর্কে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা রাখেন। জীবনের যেকোনো জটিল পরিস্থিতি মাথা ঠান্ডা রেখে সহজে কাটিয়ে উঠতে জানেন।

চর্চায় রয়েছে ৩৬ বছর বয়সী সাবা আজাদ আর এক যুগের বড় হৃতিক রোশানের প্রেম
ছবি: সংগৃহীত

৭.

এ ছাড়া একজন বয়স্ক পুরুষ মানসিক দিকের মতো আর্থিক দিক থেকেও অধিক সচ্ছল। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, তাঁর প্রতিষ্ঠিত ক্যারিয়ারের পাশাপাশি বাড়ি-গাড়ি সবই আছে। ফলে শেক্‌সপিয়ার যেমনটি বলেছিলেন যে ‘অভাব দরজায় এসে দাঁড়ালে ভালোবাসা জানলা দিয়ে পালায়,’ সেই আশঙ্কা এখানে থাকে না।